হাফিজের ‘৯৯’ও জেতাতে পারেনি পাকিস্তানকে

সহজেই ম্যাচটা জিতে নিল নিউজিল্যান্ডছবি: এএফপি

অকল্যান্ডে হারের পর হ্যামিলটনে এসে ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু বাবর–আজমবিহীন পাকিস্তানের ব্যাটিং যে বেশ দুর্বল, সেটি আজ আবারও প্রমাণিত হয়েছে। মোহাম্মদ হাফিজ ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে পাকিস্তানের সংগ্রহটা ১৬৩–তে নিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু সেটিও যথেষ্ট হয়নি নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের কল্যাণে। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে জিতেছে কিউইরা।

এই তো কিছু দিন আগেই কথা উঠেছিল হাফিজের ক্যারিয়ার নিয়ে। তিনি আর কত দিন খেলবেন—আলোচনা ও বিতর্কের বিষয় ছিল এটিই। পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটার সমালোচনায় মেতেছিলেন হাফিজ কেন এখনো পাকিস্তান দলের জায়গা আঁকড়ে আছেন, সেটা নিয়ে। সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজা ছিলেন এ দলের নেতৃত্বে। হাফিজও সুযোগমতো সেই সমালোচনার জবাব দিয়ে যাচ্ছিলেন, টুইটারে কিংবা গণমাধ্যমে। কিন্তু আসল জবাবটা দেওয়া বাকি ছিল তাঁর। আজ হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই সেটি দিয়ে দিলেন ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে। অকল্যান্ডে প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে হারের পর আজ দ্বিতীয় ম্যাচেও পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা তেমন সুবিধা করে উঠতে পারেননি। হাফিজের ওই ৯৯ না হলে যে কী হতো পাকিস্তানের!

বুড়ো হাড়ে ভেলকিই দেখালেন হাফিজ ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে।
ছবি: এএফপি

টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান সেই অকল্যান্ডের চেহারাতেই। গত ম্যাচে জ্যাকব ডাফি নামের এক অভিষিক্ত বোলার পাকিস্তানিদের সমস্যায় ফেলেছিলেন আজ ফেললেন টিম সাউদি। ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ২১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। বুড়ো হাফিজের ৯৯ ছাড়া পাকিস্তান ব্যাটিং লাইনআপের সংগ্রহ টেলিফোন নম্বরের মতোই দেখায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ানের ২২। খুশদিল শাহের ১৪ আর ইমাদ ওয়াসিমের ১০ ছাড়া সব সংগ্রহ এক অঙ্কের। হাফিজ ৪ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫৭ বলে ৯৯ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ১০ বাউন্ডারি আর ৫ ছক্কা। সাউদির ৪ উইকেট ছাড়াও জিমি নিশাম ও ইশ সোধি নিয়েছেন একটি করে উইকেট।

সাউদির ৪ উইকেটেই এলোমেলো পাকিস্তান।
ছবি: এএফপি

১৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে নিউজিল্যান্ডের শুরুটা ভালোই হয়। ৩৫ রানের মাথায় ফেরেন মার্টিন গাপটিল। এরপর কিউইরা আর পেছনে ফিরে তাকাননি। আগের ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করা টিম সেইফার্ট আজও ছিলেন দুর্দান্ত। তিনি কেন উইলিয়ামসনকে সঙ্গে নিয়ে ১২৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে রান তাড়াটা সহজ করে দেন। সেইফার্ট ৮৪ (৬৩ বল, ৮ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কা) আর উইলিয়ামসন ৫৭ (৪২ বল, ৮ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কা) রানে অপরাজিত ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে একমাত্র উইকেটটি ফাহিম আশরাফের।

টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজ দলের ইনিংস শেষে ৯৯ রানে অপরাজিত থাকার নিদর্শন খুব বেশি নেই। হাফিজের আজকের কীর্তি ছাড়া এমন কিছু ঘটেছে মাত্র তিনবার। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে ২০২০ সালের ডিসেম্বরেই দুবার ৯৯ রানে অপরাজিত থাকার ঘটনা ঘটল। এই তো কিছু দিন আগে কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯৯ রানে অপরাজিত ছিলেন ইংল্যান্ডের ডেভিড মালান। আরেকটি তথ্য চমকে যাওয়ার মতোই। দলীয় ইনিংস শেষে ৯৯ রানে অপরাজিত থাকার চারটি ঘটনার তিনটিই ইংলিশ ক্রিকেটারদের দখলে। হাফিজ ও মালান ছাড়া বাকি দুজন লুক রাইট (২০১২, প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান) আর অ্যালেক্স হেলস। তাঁর ইনিংসটিও ২০১২ সালে, ট্রেন্টব্রিজে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।