ভালো শুরুর ‘চিনি’ নয়, ৩ উইকেটের ‘লবণে’র চা পাচ্ছে বাংলাদেশ

তামিম-সৌম্য ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন।ছবি: প্রথম আলো

শুরুটা কী দারুণ হয়েছিল! সেটি চালিয়ে নিয়ে যেতে পারলে তো কথাই ছিল না, অন্তত সৌম্য সরকার আউট হওয়ার পরও উইকেটে বাঁধ দিতে পারলেও চা-বিরতির সময়ে চায়ে চিনিটা কম মনে হতো না বাংলাদেশের। কিন্তু এখন আর চায়ের স্বাদটা পাবেন মুমিনুলরা?

তামিম-সৌম্যর পঞ্চাশোর্ধ্ব উদ্বোধনী জুটি যদি ‘মিষ্টি’ স্বাদ এনে দিয়ে থাকে, হঠাৎ ৩ উইকেট বাংলাদেশকে দেবে চায়ে লবণ বেশি হওয়ার কটু স্বাদ। সৌম্যর পর তামিম ইকবাল আউট হলেন ক্যাচ প্র্যাকটিস করিয়ে। আর চা-বিরতির আগে শেষ বল বনে যাওয়া বলটিতে আউট হয়ে গেলেন টেস্টে ব্যাট হাতে ধুঁকতে থাকা নাজমুল হোসেন। ৯ ওভার ২ বলের মধ্যে ৩ উইকেট পড়ল!

৩ উইকেটে ৭৮ রান নিয়ে চা বিরতিতে গেল বাংলাদেশ। জয়ের জন্য এখনো দরকার ১৫৩ রান। ক্রিজে আছেন মুমিনুল হক, তাঁর রান ২। নাজমুল আউট হতেই চা বিরতির ডাক দেওয়ায় নতুন ব্যাটসম্যান নামেননি।

সর্বশেষবার যখন ওপেনিং জুটিতে ৫০ রান করতে দেখেছিল বাংলাদেশ, এরপর ১৩ ইনিংস কেটে গেছে। অবশেষে টেস্টে কোনো ইনিংসে উদ্বোধনী জুটির একটা ভালো শুরুর আক্ষেপ ঘুচল বাংলাদেশের। কিন্তু মিরপুর টেস্টে আজ সে আক্ষেপ ঘুচতে না ঘুচতেই বাংলাদেশকে আবার হতাশায় ডুবিয়েছেন সৌম্য-তামিম।

২৫ বলের মধ্যেই দুজন আউট হয়ে গেছেন। তামিম আউট হয়েছেন ঠিক ৫০ রান করে। সৌম্য আউট হয়েছেন ১৩ রান করে। দুটি উইকেটই নিয়েছেন ক্রেইগ ব্রাথওয়েইট।

তামিম বেশ আক্রমণাত্মক।
ছবি: প্রথম আলো

জুটি ভাঙার জন্য ক্রেইগ ব্রাথওয়েইট আক্রমণে এসেই সফল। তাঁর বল সৌম্যর ব্যাটে আলতোভাবে ছুঁয়েই চলে যায় উইকেটকিপারের হাতে। আম্পায়ার অবশ্য প্রথমে আউট দেননি। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ আত্মবিশ্বাসী ছিল আবেদনে, আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় তাই সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নেয়। আলট্রাএজ প্রযুক্তি দেখায়, বল ব্যাটে লেগেছে।

১২তম ওভারে সৌম্য ফিরলেন, ১৬তম ওভারে তামিম। ইনিংসজুড়ে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পর যেভাবে সিলি মিড-অফে ক্যাচ অনুশীলন করিয়ে ফিরলেন তামিম, বেশ চোখে লেগেছে সেটি।

আর চা-বিরতির আগে রাকিম কর্নওয়ালের করা সর্বশেষ বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েছেন নাজমুল। ২ চারে ১১ রান করেছেন তিনি।

বাংলাদেশের বোলিংয়ের সময়ই বোঝা গেছে, পিচ আস্তে আস্তে স্পিনারদের দিকে হাত বাড়াচ্ছে। বোলারদের পায়ের ছাপ পড়ে যাওয়া জায়গাগুলোতে পড়ে বল হঠাৎ বাউন্স করছে কিংবা ঘুরছে অনেক। তাইজুল ইসলামের বলে তাই বেশ ভুগতে হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রাকিম কর্নওয়ালও সেটির সুবিধা পাচ্ছেন। সময় যত গড়াবে, পিচ ততই ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনারদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াবে।

সে কারণেই কি না, শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছেন তামিম। তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ১০০-র ওপরে, টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৮তম ফিফটিটি করেছেন ৪৪ বলে। সৌম্য কিছুটা ধীরেসুস্থে খেলছিলেন। ৯টি চার মেরেছেন তামিম!

শুরুতেই উইন্ডিজ পেসার আলজারি জোসেফের দুই ওভারে ৩টি চার মারেন তামিম। পঞ্চম ওভারে কর্নওয়ালের বলে দারুণ ইনসাইড-আউটে চার মেরে সৌম্যও যোগ দেন তাঁর সঙ্গে। এরপর ওয়ারিকান ও কর্নওয়ালকে আরও ৩টি করে চার মারেন তামিম। এর মধ্যে ১১তম ওভারে ওয়ারিকানের বলে তামিমের দুটি চারের প্রথমটি জুটিতে পঞ্চাশ রান এনে দেয়।