চল্লিশেও বিশ্বকাপও খেলতে চান টেলর

এখনই অবসরের চিন্তা নেই টেলরের। ফাইলছবি: এএফপি

বয়স প্রায় ৩৭ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন ১৪ বছর হয়ে গেছে। কিন্তু খেলার খিদে এখনো রস টেলরের কমেনি একফোঁটা।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা হাতের নাগালে চলে এসেছে। এ সময়েই নিজের ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। জানিয়েছেন মূল লক্ষ্যটা।

একটুর জন্য হাতছাড়া হওয়া বিশ্বকাপটা জেতার আরেকটা সুযোগ পেতে চান, খেলতে চান ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। তখন তাঁর বয়স প্রায় ৪০ হয়ে যাবে, তাতে কী!

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৭ নভেম্বর টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের। অকল্যান্ডে সে ম্যাচ দিয়েই রেকর্ড ভাঙার পথে আরেকটু এগোবেন।

এমন এক মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। টেস্ট ও ওয়ানডেতে দেশটির সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক নিজের রেকর্ডটা সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যেতে চাইছেন।

অবসরসংক্রান্ত গুঞ্জন উঠতেই ২০২৩ বিশ্বকাপ খেলার ইচ্ছের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড ড্যানিয়েল ভেট্টোরির।

ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ স্কোরার টেলর
ছবি: এএফপি

সব সংস্করণ মিলিয়ে ৪৩৭টি ম্যাচ খেলছিলেন সাবেক অধিনায়ক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিনটি টি-টোয়েন্টি ও দুটি টেস্ট খেলার সুযোগ পাবেন টেলর।

সব কটি ম্যাচ খেলতে পারলে ভেট্টোরিকে টপকে যাবেন টেলর। করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশিই বিশ্রাম পেয়েছেন। তাই নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েও ভাবার সময় পেয়েছেন অনেক।

করোনার কারণে ওয়ানডে বিশ্বকাপ পেছানো হয়েছে। এ কারণে নিজের কাজটা যে কঠিন হয়ে উঠেছে, সেটাও জানেন টেলর।

আজ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ‘আমার মনে হয় ২০২৩ পর্যন্ত খেলা বেশ কঠিন হবে। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে যখন হওয়ার কথা ছিল তখনই কষ্ট হতো। এখন তো বিশ্বকাপ পিছিয়ে অক্টোবর ও নভেম্বরে নেওয়া হয়েছে। এর মানে আরও ছয় মাস অপেক্ষায় থাকা। আপনার স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য থাকা উচিত। ওয়ানডে বিশ্বকাপ অবশ্যই আমার নজরে আছে। আমাকে হয়তো অনেক কিছু ছেঁটে খেলতে হবে সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য। আমি তো আর তরুণ হচ্ছি না দিন দিন। এর মানে এটাও না যে আমি খেলবই, কিন্তু হ্যাঁ অবশ্যই আমার লক্ষ্যের মধ্যে আছে এটা।’

করোনাবিরতির পর অনেক দলই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরলেও নিউজিল্যান্ড এত দিন দূরেই ছিল এই ব্যস্ততা থেকে। সর্বশেষ ১৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে খেলেছে তারা।

শূন্য গ্যালারিতে সে ম্যাচ খেলার পরই তাড়াহুড়া করে দেশে ফিরেছে নিউজিল্যান্ড। করোনা সংক্রমণ ঠেকানোয় বেশ সাফল্য দেখিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ক্রিকেট ফেরাতেও অতিরিক্ত আগ্রহ দেখায়নি দেশটি। না হলে হয়তো এত দিনে ভেট্টোরির রেকর্ডটা টেলরের হয়ে যেত।

রেকর্ডটা যে খুব করেই চাচ্ছেন, সেটা অবশ্য জানাতে ভোলেননি এই ব্যাটসম্যান। এক সাংবাদিক এ প্রসঙ্গ তুলতেই বলেছেন, ‘কুফা লাগাবেন না আবার!’

এখনো খেলার খিদে ভালোভাবেই আছে টেলরের
ছবি: এএফপি

নিউজিল্যান্ডের সব কিংবদন্তিই টেলরের সাফল্যের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। কিন্তু ক্যারিয়ারের শুরুতে এতটা আশা করেননি টেলর।

ক্যারিয়ারে প্রায় ১৮ হাজার রান করবেন, এমনটা কখনো ভাবেননি, ‘নিউজিল্যান্ডের হয়ে এক বা দুই ম্যাচ খেলতে পেরেই খুশি ছিলাম আমি। আমাকে এখনো সেটা করতে হবে (বেশি ম্যাচের রেকর্ড)। কিন্তু আমার গুরু, মার্টিন ক্রো বরাবরই বলতেন, রেকর্ড হয় অন্য কারও ভাঙার জন্য। আমি যত ম্যাচই খেলি না কেন, আশা করি কেন উইলিয়ামসন এবং এরপর যারা আসবে তারা সবাই সে রেকর্ড ভাঙবে এবং আরও ভালো রেকর্ড গড়বে।’