তৃতীয় বৃহত্তম হার দিয়ে যন্ত্রণার শেষ

চাপের মুখে ব্যর্থ হয়েছেন অধিকাংশ ব্যাটসম্যান। ছবি: প্রথম আলো
চাপের মুখে ব্যর্থ হয়েছেন অধিকাংশ ব্যাটসম্যান। ছবি: প্রথম আলো
• ৭৫ রানে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে হারল বাংলাদেশ।
• টি-টোয়েন্টিতে ধবলধোলাই হলো স্বাগতিক দল।

১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের রানরেট ৭.৯। খারাপ বলা যাবে না কোনোভাবেই। ২১১ লক্ষ্য জানার পর হয়তো অস্বস্তি জাগবে কিন্তু অসম্ভব কোনো পরিস্থিতি নয়। সমস্যাটা দাঁড়াল অন্য এক বিষয়ে, রানের পাশে উইকেটের ঘরটা যে বেশ পরিপূর্ণ আকার নিয়েছে এরই মাঝে। ৯ ওভার পেরোনোর আগেই অর্ধেক ব্যাটসম্যান ড্রেসিংরুমে। ৫ উইকেট নিয়ে শেষ ১০ ওভারে ১৩২ রান করা হয়তো অসম্ভব নয়, তবে এই বাংলাদেশ সেটা করতে পারবে, তা পাঁড়ভক্তও মনে হয় না তখন বিশ্বাস করছিল।

ইদানীং বাংলাদেশ দলের একাদশ দেখলে মনে হয় কেউ বোধ হয় ‘হাউজি’ খেলেছেন! কে যে কখন দলে ঢুকছেন, আর কে যে কেন বাদ পড়ছেন—এর ব্যাখ্যা যে পাওয়া যায় না! এক ম্যাচ খেলার পরই জাকির হোসেন আর আফিফ হোসেনকে বাদ দেওয়া হলো। তামিম ইকবাল ফিরবেন জানাই ছিল কিন্তু মিঠুন কোন যুক্তিতে দলে, সেটা বোঝা গেল না।
২১১ তাড়া করতে নেমে ১৪ রানেই দুই উইকেট পড়ার পর মিঠুনের কাছে সুযোগ এসেছিল সে প্রশ্নের উত্তর দিতে। ১৬৬.৬৭ স্ট্রাইকরেট টি-টোয়েন্টি সক্ষমতার কথাই বলছে। তবে এই স্ট্রাইক রেট মাত্র ৩ বলের (৫ রান)। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৩ উইকেটে ২২ রান!
কারণ আগের ম্যাচের দুই সফল ব্যাটসম্যানের যে আজ আর সফল হতে ইচ্ছে হলো না। দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল জোর করে খেলতে গিয়ে বল আকাশে তোলেন সৌম্য। শেহান মাদুশঙ্কার করা পরের ওভারের তৃতীয় বলেই জঘন্য এক শট খেলে আউট মুশফিক! তামিম ও মাহমুদউল্লাহকে রান তাড়া নয়, ইনিংস মেরামতে নামতে হলো। কিন্তু মেরামত হওয়ার আশা শেষ হয়ে গেল তামিমের আরেকটি বাজে শটে। ২ ছক্কা ও ২ চার মারা তামিমের ২৩ বলে ২৯ রানের ইনিংস অবশ্য এমনিতেও দলকে জয়ের পথে রাখার জন্য যথেষ্ট ছিল না।
জাকির ও আফিফ দ্বিতীয় সুযোগ না পেলেও আরিফুলকে আজও নামানো হয়েছিল। জীবন মেন্ডিসের একটি সোজা বল বুঝতে না পেরে দ্বিতীয় সুযোগে ২ রান করেই ফিরলেন বিপিএলে নজর কাড়া এই ব্যাটসম্যান। মাহমুদউল্লাহ (৪১) আর সাইফউদ্দিন (২০) শেষ একটা চেষ্টা চালালেন, ম্যাচ জেতানোর জন্য নয়, ২০ ওভার কাটানোর জন্য। একটু আগেই ব্যাটিং স্বর্গ মনে হওয়া উইকেটটা তখন যেন মাইন পোঁতা কোনো যুদ্ধক্ষেত্র! ১৫তম ওভারে ৪ বলের মধ্যে এ দুজনও চলে গেলেন। ১১৩ রানে ৭ উইকেট হারালেও বাংলাদেশকে অন্তত একটি স্বস্তি দিয়ে ফিরেছেন সাইফউদ্দিন। যাক, বাংলাদেশ অন্তত ১০০ রানে হারছে না!
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ হেরেছে ৭৫ রানে। রানের হিসাবে যৌথভাবে যা তৃতীয় বৃহত্তম হার। এমন পারফরম্যান্সের সঙ্গে তথ্যটা মানাচ্ছে ভালো!

স্কোরকার্ড :

শ্রীলঙ্কা : ২১০/৪

বাংলাদেশ

 

রান

বল

তামিম ক ধনঞ্জয়া ব আপনসো

২৯

২৩

সৌম্য ক মেন্ডিস ব ধনঞ্জয়া

মুশফিক ক পেরেরা ব মাদুশঙ্কা

মাহমুদউল্লাহ রানআউট (মেন্ডিস/উদানা)

৪১

৩১

আরিফুল এলবি মেন্ডিস

সাইফউদ্দিন ক সাব (ভ্যান্ডারসে) ব উদানা

২০

২১

মেহেদী ক উদানা ব শানাকা

১১

১১

মোস্তাফিজ ব গুনাতিলকা

জায়েদ স্টাম্পড চান্ডিমাল ব গুনাতিলকা

নাজমুল অপরাজিত

অতিরিক্ত 

১০

মোট (১৮.৪ ওভার, অলআউট)

১৩৫

উইকেট পতন : ১-৮ (সৌম্য, ১.৪), ২-১৪ (মুশফিক, ২.৩), ৩-২২ (মিঠুন, ২.৬), ৪-৪৯ (তামিম, ৭.৪), ৫–৬৮ (আরিফুল, ৮.৪), ৬–১১০ (মাহমুদউল্লাহ,১৪.২),৭–১১৩ (সাইফউদ্দিন, ১৪.৫), ৮–১৩২ (মেহেদী, ১৭.৫), ৯–১৩২ (মোস্তাফিজ, ১৮.১), ১০–১৩৫ (জায়েদ, ১৮.৪)।

বোলিং : মাদুশঙ্কা ২.১-০-২৩-২, ধনঞ্জয়া ৪-১-২০-১, শানাকা ১.৫-০-৫-১, পেরেরা ৩-০-৩৩-০, আপনসো ৪-০-৩১-১, মেন্ডিস ১-০-৮-১, উদানা ২–০১২–১, গুনাতিলকা ০.৪–০–৩–২।

ফল : শ্রীলঙ্কা ৭৫ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা : কুশল মেন্ডিস

সিরিজ : দুই ম্যাচের সিরিজ শ্রীলঙ্কা ২–০ ব্যবধানে জয়ী।