৩৭ বছর বয়সে ‘পুনর্জন্মে’ও সেই পুরোনো শ্রীশান্ত

প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেই উইকেট পেলেন শ্রীশান্ত
ছবি: টুইটার

মাঝস্টাম্প বরাবর ফুল লেংথ বল, ব্যাটসম্যান লেগে ‘ফ্লিক করার চেষ্টা করলেন, ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানল অফ স্টাম্পে। সেই পুরোনো কেতা, মাঝখানের স্টাম্প বরাবর ফুল লেংথ আউটসুইং ডেলিভারিতে বোকা বানানো।

কিন্তু এই বিদ্যা ৩৭ বছর বয়সেও ধারালো থাকবে, আর প্রায় ৮ বছর পর প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরে প্রথম উইকেটও আসবে এমন ডেলিভারিতে—শ্রীশান্ত কি তা ঘুণাক্ষরেও জানতেন!

নিশ্চিতভাবেই না। কিন্তু আত্মবিশ্বাস থাকলে অনেক কিছুই ফিরিয়ে আনা যায়। শ্রীশান্ত যেমন নিজেকে ফেরাতে পেরেছেন প্রিয় আঙিনায়—ভালোবাসার ২২ গজে। ২০১৩ আইপিএল ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ভারতের এ পেসার।

শুরুতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) তাঁকে আজীবন নিষিদ্ধ করলেও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সাজার মেয়াদ কমানো হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাঁর সাজার মেয়াদ শেষ হয়।

ভারতের ২০১১ বিশ্বকাপজয়ী দলের এ সদস্য নিষিদ্ধ থাকতে সব সময়ই বলতেন, ক্রিকেটে ফিরতে চান।

সাজার মেয়াদ শেষে সেই শ্রীশান্ত কাল প্রথমবারের মতো ফিরলেন প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে।

সৈয়দ মুশতাক আলী টি–টোয়েন্টি ট্রফিতে জন্মভূমি কেরালার হয়ে পদুচেরির মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে পদুচেরির ফাবিদ আহমেদকে বোল্ড আউট করেন ৩৭ বছর বয়সী এ পেসার।

৪ ওভারে ২৯ রানে ১ উইকেট নিয়ে ক্রিকেটে ফেরা শ্রীশান্তের ‘পুনর্জন্ম’ একেবারে খারাপ হয়নি। ১০ বল হাতে রেখে ম্যাচটা ৬ উইকেটে জিতেছে কেরালা।

শৈশবে স্পিনার হতে চাওয়া শ্রীশান্ত বড় ভাই ও কেরালার পেসার টিনু ইয়োহাননকে আদর্শ মেনে গতির প্রেমে পড়েন। পরে রঞ্জি ট্রফিতে ইয়োহাননের সঙ্গে একই দলে খেলেছেন পেসার হিসেবে।

ভারতের হয়ে ২৭ টেস্ট ও ৫৩ ওয়ানডে খেলা শ্রীশান্তের বর্তমান কেরালা দলের প্রধান কোচ এখন ইয়োহানন।

নিজের ফেরা নিয়ে সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে ফোনে শ্রীশান্ত বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা পরম করুণাময়। তাঁর ওপর বিশ্বাসই আমাকে কেরালা দলে ফেরার সুযোগ করে দিয়েছে। আমি ভালো পারফর্ম করার আশা করছি, দলে রবিন উথাপ্পা, জলজ সাক্সেনা, শচীন বেবি ও সঞ্জু স্যামসানের মতো অধিনায়ক রয়েছে।’

টস জিতে কেরালা আগে ফিল্ডিং নেওয়ায় শ্রীশান্তকে বল হাতে নিতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে এসে ৯ রান দেন তিনি।

তবে সুইং পেতে ফুল লেংথে বল করার চিরাচরিত অভ্যাসটা ছিল। প্রথম স্পেলে করা ৩ ওভারেই উইকেটের দেখা পান। নিজের শেষ ওভারটা করেছেন ১৫তম ওভারে।

বোলিংয়ের কোটা শেষে উইকেট ছুঁয়ে প্রার্থনাও করেন শ্রীশান্ত। কেরালা যে তিন পেসার খেলিয়েছে তাদের মধ্যে শ্রীশান্তই সবচেয়ে মিতব্যয়ী বল করেন।

প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট ফেরা নিয়ে টুইটও করেন শ্রীশান্ত, ‘সব সমর্থন ও ভালোবাসার জন্য ধন্যবাদ। এটা কেবল শুরু। আপনাদের প্রার্থনা ও ভালোবাসা নিয়ে আরও অনেক অনেক দূর যেতে চাই।’