৮ মাসের ‘পরীক্ষা’র পর আইসিসির প্রধান নির্বাচিত হলেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান

আইসিসি পেয়েছে নতুন প্রধানফাইল ছবি

গত মার্চেই আইসিসির প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি। তবে তখন দায়িত্বটা ছিল আপৎকালীন। দৃশ্যত, সে পরীক্ষায় ভালোভাবেই পাস করে গেছেন জিওফ অ্যালার্ডাইস। আজ সোমবার পূর্ণকালীন দায়িত্বে আইসিসির প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ৫৪ বছর বয়সী সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান।


দায়িত্ব পাওয়ার পর তৃপ্তিটা লুকাননি অ্যালার্ডাইস। আইসিসির চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন তিনি, ‘আইসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অনেক বড় সম্মানের। যে সময়ে এগিয়ে যাওয়ার পথে নতুন একটা ধাপে ঢুকছি আমরা, সে সময়ে আমাকে এ খেলাটায় (ক্রিকেট) নেতৃত্বের সুযোগ দেওয়ায় গ্রেগ এবং আইসিসির বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই।’

জিওফ অ্যালার্ডাইস
ছবি : টুইটার

পূর্ণকালীন দায়িত্বে তাঁর মনোযোগ কোন দিকে থাকবে, সেটিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন অ্যালার্ডাইস, ‘আগের মতোই আমার মনোযোগ থাকবে আমাদের খেলাটার জন্য সবচেয়ে ভালো কিছু করার দিকে। দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য এনে দেওয়া এবং সেই সাফল্য ধরে রেখে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আইসিসির সদস্যদের পাশে থেকে কাজ করব। গত আট মাসে আইসিসির কর্মকর্তারা যে আত্মনিবেদন দেখিয়েছেন, আমাকে সাহায্য করেছেন, সে জন্য তাঁদেরও ধন্যবাদ জানাই। এমন প্রতিভাবানদের নিয়ে গড়া দল নিয়ে ক্রিকেটের সেবায় কাজ করতে তর সইছে না আমার।’


আইসিসি চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলেও উচ্ছ্বাস জানিয়েছেন অ্যালার্ডাইসকে নিয়ে। অ্যালার্ডাইসের দক্ষতা ও যোগ্যতার কথা তো আলাদা করে বলেছেনই, বার্কলে আলাদা করে উল্লেখ করেন করোনার মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে কয়েক দিন আগে শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সফল আয়োজনের কথা, ‘দারুণ চ্যালেঞ্জিং একটা সময়ে অ্যালার্ডাইস অসাধারণ নেতৃত্বগুণ দেখিয়েছেন। যেটার ফল হয়েই এসেছে আইসিসির ছেলেদের ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সফল আয়োজন।’

আগামী দশকে ক্রিকেট কেমন হবে, এর বাণিজ্যিক ভিত্তি কেমন হবে, সেসব নিয়ে অ্যালার্ডাইসের জ্ঞানের প্রশংসাও করেছেন বার্কলে, ‘বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটের অবস্থা ও পরিস্থিতি নিয়ে জিওফের (অ্যালার্ডাইস) জ্ঞান তুলনাহীন। আগামী দশকে আমরা খেলাটাকে যে নতুন কৌশলে এগিয়ে নিতে চাইছি, আমাদের বাণিজ্যস্বত্ত্ব চক্র যেভাবে সাজাতে চাইছি, সেটি নিয়ে সদস্যদেশগুলোর সঙ্গে মিলে কাজ করার ক্ষেত্রে তিনিই যে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি, সেটা (অ্যালার্ডাইস) দেখিয়েছেন।’


ক্রিকেটার হিসেবে অবশ্য তেমন নাম কখনো কুড়াতে পারেননি অ্যালার্ডাইস।

অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলে কখনো খেলা হয়নি, নব্বইয়ের দশকে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে ১৮টি ম্যাচ খেলেছেন ভিক্টোরিয়ার হয়ে। খেলা ছাড়ার পর প্রশাসনিক কাজে দক্ষতার জন্যই সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিএ-র (ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া) সাবেক প্রধান জেমস সাদারল্যান্ড তাঁকে নিয়ে আসেন ক্রিকেট প্রশাসনে।


ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার আম্পায়ারিং ব্যবস্থাপক হিসেবে শুরু করার পর একটা সময়ে প্রতিষ্ঠানের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে পদোন্নতি পান অ্যালার্ডাইস। সিএ-তে এক দশক কাজ করার পর শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আইসিসির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে নিয়োগ পান ২০১২ সালে। মার্চে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে হয়েছিলেন আইসিসির প্রধান নির্বাহী, সেখানে দক্ষতা দেখিয়ে এখন পূর্ণকালীন দায়িত্বই পেয়ে গেছেন।