৮৮ বল আগেই পাকিস্তানকে জয় এনে দিলেন বাবর

অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ফিফটি পেলেন বাবর।ছবি: এএফপি

গত বছরের মে মাসে সর্বশেষ তিন ম্যাচ ফিফটি না করে থেকেছিলেন। দুটি ফিফটির মধ্যে বিরতি দুই ম্যাচের বেশি এরপর আর কখনো হয়নি তাঁর। প্রতিপক্ষ যখন জিম্বাবুয়ে, বাবর আজম আর ফিফটি ছাড়া থাকেন কীভাবে? তার ওপর এই সিরিজটাই সাদা বলের ক্রিকেটে পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে তাঁর প্রথম, নিজেকে প্রমাণের একটা বাড়তি চাপ তো আছেই!

রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের আগের ম্যাচে মাত্র ১৯ রান করেছিলেন। তা নিয়ে টানা দুই ওয়ানডেতে ফিফটিহীন থেকেছিলেন বাবর। কিন্তু আজ রাওয়ালপিন্ডিতেই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আবার ফিফটির দেখা পেলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। তাঁর ৭৭ রানের দারুণ ইনিংসে ম্যাচটা ৬ উইকেটে জিতেছে পাকিস্তান। ৮৮ বল বাকি থাকতে পাওয়া এ জয়ে পাকিস্তানের তিন ওয়ানডের সিরিজ জয়ও নিশ্চিত হয়ে গেল।

গত পরশু সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বেশ ভালো পরীক্ষাই নিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ব্রেন্ডন টেলরের সেঞ্চুরি আর ওয়েসলি মাদেভেরের ফিফটিতে সেদিন পাকিস্তানের ২৮১ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে করেছিল ২৫৫ রান। কিন্তু আজ টস জিতে আগে ব্যাট করতে গিয়ে গুবলেটই পাকিয়ে ফেলল জিম্বাবুয়ে! পাকিস্তানকে লক্ষ্যই দিতে পেরেছে মাত্র ২০৭ রানের!

এত ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা মোটামুটি ভালোই হয়েছে পাকিস্তানের। উদ্বোধনী জুটি ভাঙার আগে প্রথম ১০ ওভারেই আসে ৬৮ রান। আবিদ আলী ২৪ বলে ২২ রান করে আউট হলেও অন্য প্রান্তে ইমাম-উল-হক ছিলেন আরও কিছুক্ষণ। তিনে নামা বাবরের সঙ্গে তাঁর জুটিটা হয় ৩২ রানের। দলকে ১০০ রানে রেখে ইমাম যখন আউট হন, একটা আক্ষেপই সঙ্গী হয়েছে তাঁর। ক্যারিয়ারের ৩৯তম ওয়ানডেটি খেলতে নামা ইমাম আউট হয়েছেন ৮ম ওয়ানডে ফিফটি থেকে ১ রান দূরে থেকে।

ইমাম ফেরার পর ক্রিজে আসেন এই ম্যাচেই অভিষিক্ত হায়দার আলী। পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের দল থেকে ‘গ্র্যাজুয়েশন’ শেষ করে সিনিয়র দলে অভিষেক আগেই হয়েছিল তাঁর, ইংল্যান্ড সফরে একটা টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন। আজ হলো হায়দারের ওয়ানডে অভিষেক, তবে সেটি খুব একটা রাঙাতে পারেননি তিনি। ফিল্ডিংয়ে জিম্বাবুয়ে ইনিংসের শেষ দিকে একটা ক্যাচ মিস করেছেন, ব্যাট হাতে নেমে শুরুতে দারুণ আগ্রাসী ভাব দেখালেও তা টেনে নিতে পারেননি। ২৪ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২৯ রান করে এলবিডব্লু হয়ে যান উইলিয়ামসের বলে।

হায়দারের পর মোহাম্মদ রিজওয়ানও ফিরলেন দ্রুতই। মাত্র ১ রান করেছেন তিনি। তবে মজার ব্যাপার, চতুর্থ উইকেটে বাবরের সঙ্গে তাঁর জুটিটা কিন্তু ২৫ রানের। বাকি রানগুলো বাবর আর অতিরিক্তের সৌজন্যে। ১৬২ রানে রিজওয়ান ফেরার পরও পাকিস্তানের জয় নিয়ে সংশয় ছিল সামান্যই। ইফতিখার আহমেদের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৪৬ রানের জুটিতে জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন বাবর। তাঁর ৭৬ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে ১৬তম ফিফটির ইনিংসটি এসেছে ৭৪ বলে, ৭ চার ও ২ ছক্কায়। ইফতিখার শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১৬ রানে।

অধিনায়কের কাজটা সহজ করে দিয়েছেন ইফতিখার (ডানে)।
ছবি: এএফপি

জিম্বাবুয়ের ইনিংসে এই ইফতিখারই অফ স্পিনে ভুগিয়েছেন জিম্বাবুয়ের মিডল অর্ডারকে। এর আগে ৫ ওয়ানডেতে ১ উইকেট পাওয়া ৩০ বছর বয়সী ইফতিখার আজ এক ম্যাচেই নিয়েছেন ৫ উইকেট। জিম্বাবুয়ে ইনিংসে সর্বোচ্চ রান করা শন উইলিয়ামসের (৭০ বলে ১০ চার ১ ছক্কায় ৭৫ রান) উইকেটটি তো নিয়েছেনই, জিম্বাবুয়ের চার থেকে আট—এই পাঁচ ব্যাটসম্যানই ইফতিখারের শিকার। ২ উইকেট নিয়েছেন অভিষিক্ত পেসার মোহাম্মদ মুসা।