'ট্রফিটা দেখেই মনে হবে আরও ভালো করতে হবে'

বর্ষসেরা উদীয়মান অফ স্পিনার নাঈম হাসান। ছবি: শামসুল হক
বর্ষসেরা উদীয়মান অফ স্পিনার নাঈম হাসান। ছবি: শামসুল হক
>

নাঈম হাসান জিতেছেন ২০১৮ সালে রূপচাঁদা–প্রথম আলো বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের পুরস্কার


রূপচাঁদা-প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কার ২০১৮-এর বর্ষসেরা উদীয়মানের নামটা অনভ্যস্ত বাংলায় উচ্চারণ করলেন জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, ‘না. . ঈম...হাসান।’ একপশলা হাততালির মাঝেও স্পষ্ট শোনা গেল ২০০৬ সালের বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ শাহরিয়ার নাফীসের মৃদু উল্লাস। যেন অনুজের সাফল্যে গর্বিত অগ্রজ।


পুরস্কারটা নিতে গিয়েই যেন বিপদে পড়লেন নাঈম হাসান। খেলার মাঠে যত সপ্রতিভই হোন না কেন, আলো ঝকমকে মঞ্চে নাঈমের মুখ তেমন বেগে ছুটল না। ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট অভিষেকে পাঁচ উইকেট নেওয়া এই তরুণ অফ স্পিনারকে সেই কাজটাই দেওয়া হলো পুরস্কার নেওয়ার পর। অভিষেকের পর থেকে সবচেয়ে বেশি মুখোমুখি হয়েছেন যে প্রশ্নের, অনুষ্ঠানের সঞ্চালকও জিজ্ঞেস করে বসলেন সেটাই, ‘এত লম্বা একজন ক্রিকেটার, পেসার না হয়ে স্পিনার কেন হলেন?’ লজ্জাবনত ভঙ্গিতে নাঈমের উত্তর, ‘যখন ছোট ছিলাম, তখন পেস বোলিং করতাম। তখন লম্বা ছিলাম না। কোচের কথায় স্পিনার হয়ে গেলাম। এরপর দেখি হঠাৎ করে লম্বা হয়ে গেছি।’ সদ্য কৈশোর পেরোনো তরুণের লাজুক-সরল উত্তরে একবার হাসির রোল উঠল অনুষ্ঠানস্থলজুড়ে।


গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্ট অভিষেকে নতুন করে ইতিহাস লিখেছিলেন নাঈম। ওই সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের পর অবশ্য আর জাতীয় দলের জার্সিতে খেলা হয়নি। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের দলে আছেন। দেশ ছাড়ার আগের দিন সন্ধ্যায় পেলেন জীবনের প্রথম পুরস্কার। অনুষ্ঠান শেষে আলো-আঁধারির মাঝ দিয়ে বের হয়ে আসতে আসতে বলছিলেন, ‘এই পুরস্কারটা আমার জন্য সারা জীবন বিশেষ কিছু হয়ে থাকবে। কারণ, এটাই আমার জীবনের প্রথম পুরস্কার। সাকিব ভাই, তামিম ভাই, মুমিনুল ভাই, তাইজুল ভাই, সৌম্যদা, মিরাজ ভাই—সবাই এই পুরস্কারটা পেয়েছেন। এই তালিকায় এখন আমার নামও উঠল। সেদিক থেকে চিন্তা করলেও আমার জন্য এই পুরস্কার একটা বিশাল ব্যাপার।’


বর্ষসেরা উদীয়মানের পুরস্কার যেসব ক্রীড়াবিদই পেয়েছেন, পরে আলো ছড়িয়েছেন নিজ নিজ অঙ্গনে। অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বটা আরেকটু বাড়ে-প্রথম আলোর ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্রও নাঈমকে সেটা মনে করিয়ে দিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে কিছু না বললেও পরে নিজের উপলব্ধির কথা বলছিলেন, ‘কথাটা কিন্তু সত্যি। এমন পুরস্কার পেলে আসলেই দায়িত্ব বাড়ে। বর্ষসেরা উদীয়মানের কাছে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের প্রত্যাশা থাকে। ক্যারিয়ারের শুরুতেই আমাকে যে সম্মানটা দেওয়া হলো, আমি সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করব আমার ক্যারিয়ারের পুরো সময় ধরেই। আসলে এই পুরস্কারটাই আমাকে সেই অনুপ্রেরণা দিয়ে যাবে সারা জীবন। ট্রফিটা দেখলেই মনে হবে যে আমাকে আরও ভালো করতে হবে।’