আপনার কি মনে আছে সেসব ‘অমৃতবচন’

‘আমাকে যদি সিইওর দায়িত্ব দেওয়া হয়, আমার বেশি দিন লাগবে না। সব ঠিক করতে সর্বোচ্চ এক থেকে দুই মাস লাগবে।’

‘দেশের বাইরে গেলে আমাদের যা আছে, তা দিয়েই ম্যানেজ করতে হবে। যদি মিসাইল না থাকে, তাহলে তুমি লড়াই কীভাবে করবে। আমাদের তো গেরিলা যুদ্ধ করতে হবে, তাই না? ওদের আমাদের ঘরে আসতে দাও, আমরা ছোট্ট ছোট্ট অস্ত্র দিয়ে লড়ব।’

যা শুরু হয়েছে না, নাটক আর ভালো লাগে না। অতিষ্ঠ হয়ে গেলাম।

আমাকে বোর্ডের টপ লেভেল থেকে একজন ফোন করলেন। তুমি তো ওয়ার্ল্ড কাপে যাবা, তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলতে হবে। তুমি এক কাজ করো, তুমি প্রথম ম্যাচ খেলো না, আফগানিস্তানের সঙ্গে। আমি বললাম, ভাই, এটা এখনো ১২-১৩ দিনের কথা। আমি তো এর মধ্যে ভালো কন্ডিশনে থাকব। কী কারণে খেলব না? তখন বলল, আচ্ছা, তুমি যদি খেলোও, আমরা এমন একটা প্ল্যান করতেছি, তুমি যদি খেলোও, তাহলে নিচে ব্যাট করাব।

রোহিতের (শর্মা) মতো ক্রিকেটার নম্বর সেভেন থেকে এসে ১০ হাজার করে ফেলেছে। মাঝে মাঝে সে-ও যদি তিন-চারে খেলে, ব্যাটিংয়ে না নামে, খুব একটা কি সমস্যা হয়? এটা আসলে আমার কাছে মনে হয়, একদম বাচ্চা মানুষের মতো, “আমার ব্যাট আমি খেলব। আর কেউ খেলতে পারবে না।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা যদি অস্ট্রেলিয়ার জন্য অস্বস্তির বিষয় হয়, তবে বিবিএলে (বিগ ব্যাশ লিগে) নিজের উপস্থিতির মাধ্যমে আমি কাউকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাই না। যার ফলে এই প্রতিযোগিতায় নিজের ভবিষ্যৎ আমি আরও জোরালোভাবে বিবেচনা করব।

যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন কোথায় ফুটবলের মান বেশি, তাহলে আমি লা লিগাকেই এগিয়ে রাখব। এখানে খেলোয়াড়দের টেকনিক্যাল সামর্থ্য অনেক বেশি। আপনারা যদি দেখেন ইউরোপীয় ক্লাব টুর্নামেন্টগুলোর শিরোপা কারা বেশি জিতেছে, তাতে ইংলিশ ক্লাবগুলোর চেয়ে স্প্যানিশ ক্লাবগুলোই এগিয়ে।

গোঁয়ার্তুমি করে আমরা বিষয়টি জটিল করে ফেলেছি। ভারতের ব্রিজ দল পাকিস্তানে এসেছে, কাবাডি দল এসেছে, বেসবল দলও এসেছে। তাহলে সমস্যাটা কী? ভারতের ক্রিকেট দল কেন পাকিস্তানে আসে না!

জলবায়ু-সংকট এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নয়, এটা আমাদের সবচেয়ে বড় টেস্ট।

ভারতের আইসিসি টুর্নামেন্টে শিরোপা না জেতাটা যতটা না সামর্থ্যের কারণে, তার চেয়ে অনেক বেশি মানসিক কারণে। দেখুন, ভারতে ক্রিকেটই জীবন। ভারতে ক্রিকেট সব খেলার মধ্যে এগিয়ে, ক্রিকেটের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। অস্ট্রেলিয়াতে আমি রাস্তায় হাঁটতে পারি, হয়তো আমাকে অনেকেই চিনবে না। অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেটের বাইরেও রাগবি, ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলা নিয়ে মানুষের আগ্রহ আছে। অস্ট্রেলিয়াও সেই খেলাগুলোতে যথেষ্ট ভালো। ভারতে ক্রিকেটের দিকেই সবার মনোযোগ। তাই এই খেলায় অনেক চাপ।

আমি কখনোই ভাবিনি, বেঁচে থাকতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে এ অবস্থায় দেখব। ক্রিকেটের একটা বড় টুর্নামেন্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোয়ালিফাই করতে পারছে না, এর চেয়ে বাজে অবস্থা আর হতে পারে না।

বছরখানেক ধরে যে মানুষ বলে আসছে ওর মধ্যে রজার (ফেদেরার), রাফা (নাদাল) এবং আমার সংমিশ্রণ আছে, আমি তাতে একমত। ওর মধ্যে তিন বিশ্বসেরার সেরা দিকগুলোই আছে।

ধরা যাক, এই পালাবদলের সময়ে ভারত বাজবল খেলা শুরু করল। ধরা যাক হ্যারি ব্রুকের মতো সব বলেই ব্যাট চালাল কেউ, এরপর আউট হয়ে গেল, আমরা দুটি ম্যাচ হারলাম। এরপর আমরা কী করব? আমরা কি বাজবল এবং খেলোয়াড়দের সমর্থন দেব? আমরা একাদশ থেকে অন্তত চারজনকে বাদ দেব। আমাদের সংস্কৃতি সব সময়ই এমন ছিল। ফলে অন্যদের কাজে এসেছে মানেই আমরা অন্যদের ধরন নকল করতে পারব না।

এখন তো সব ম্যাচই এক শ মিনিটের হয়ে যাবে। ভেবে দেখুন তো, ৪-৩ স্কোরলাইনের একটা ম্যাচে প্রতিবার সময় বাড়ানোর পর একটা করে গোল হচ্ছে, আর এক গোলের জন্য ৩০-৪৫ সেকেন্ড করে সময় বাড়ছে। এভাবে তো আগামীকাল সকাল ৯টা বেজে যাবে। কিন্তু খেলা চলতেই থাকবে।

নিশ্চিত করেই দর্শক থাকবে একপেশে। কিন্তু খেলায় তো এমন বিপুলসংখ্যক সমর্থকদের চুপ করিয়ে দেওয়ার চেয়ে সন্তুষ্টির আর কিছু হতে পারে না। আমাদের আগামীকালের লক্ষ্য এটাই।