আতলেতিকো-পরীক্ষায় ব্যর্থ বার্সা

ম্যাচ শেষে হতাশ বার্সেলোনার খেলোয়াড়েরাছবি: রয়টার্স

ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে রোনাল্ড কোমানকে টেলিভিশনের পর্দায় একবার দেখা গেল। বার্সেলোনা কোচ গ্যালারিতে বসে মুঠোফোনে কথা বলছিলেন। নিষেধাজ্ঞার কারণে আজ তিনি বার্সার ডাগআউটে থাকতে পারনেনি। হয়তো গ্যালারি থেকেই দলকে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর সেই নির্দেশনা যে কাজে লাগেনি, তা বলে দেয় ম্যাচের ফলই। আতলেতিকোর মাদ্রিদের মাঠ ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানো থেকে ২-০ গোলে হেরে এসেছে বার্সেলোনা।

লা লিগায় আগের ম্যাচে লেভান্তেকে ৩-০ গোলে হারালেও চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা দুই হারে বিপর্যস্ত বার্সেলোনা। এমন অবস্থায় কোচ কোমানের চাকরি নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। প্রশ্ন উঠেছে পিকে-ডিপাইদের সামর্থ্য নিয়ে। সবকিছু মিলিয়ে আতলেতিকোর বিপক্ষে ম্যাচটি জয়ের জন্য অনেকটাই মরিয়া হয়ে ছিল কাতালান ক্লাবটি।

আতলেতিকোকে এগিয়ে দেওয়া গোল করার পর লেমারের উদ্‌যাপন
ছবি: রয়টার্স

ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে চেয়েছে দলটি। স্বাগতিক আতলেতিকোর রক্ষণে শুরুতেই ঝাপিয়ে পড়ার চেষ্টাও করে তারা। কিন্তু খুব ভালো কোনো আক্রমণ রচনা করতে পারেননি ডিপাই-কুতিনিয়োরা। উল্টো ২৩ মিনিটে গোল খেয়ে বসে বার্সেলোনা। লুইস সুয়ারেজে অসাধারণ এক পাস থেকে দুর্দান্ত গোলে আতলেতিকোকে এগিয়ে দেন টমাস লেমার।

লেমারের এ গোলের পর ক্যামেরা ঘুরে যায় গ্যালারিতে বসে থাকা কোমানের দিকে। রক্ষণে কিছুই হচ্ছে না, এমন একটি ভাব দেখিয়েছেন বার্সেলোনা কোচ। বাস্তবতাও তা–ই, লেমারকে আটকানোর জন্য পিকে বা দেস্তদের যে অবস্থানে থাকার কথা ছিল, সেখানে তাঁরা ছিলেন না সময়মতো।

গ্যালারিতে বার্সেলোনা কোচ রোনাল্ড কোমান
ছবি: রয়টার্স

গোল শোধে মরিয়া বার্সেলোনা এরপর আক্রমণে উঠে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু আতলেতিকোর গোছানো রক্ষণকে কোনোভাবেই পরাজিত করতে পারেননি ডিপাই-কুতিনিয়োরা। উল্টো ২৮ মিনিটে অসাধারণ এক সুযোগ পেয়ে যায় আতলেতিকো। কিন্তু সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি লুইস সুয়ারেজ।

উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার সুয়ারেজ অবশ্য স্কোরশিটে নাম লেখাতে পারেন প্রথমার্ধেই। জোয়াও ফেলিক্সের অসাধারণ এক পাস থেকে ডান প্রান্ত থেকে দুর্দান্ত এক শটে আতলেতিকোর পক্ষে ব্যবধান ২-০ করেন সুয়ারেজ।

বার্সেলোনার বিপক্ষে গোল পেলেও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেননি সুয়ারেজ
ছবি: রয়টার্স

বার্সেলোনার সাবেক স্ট্রাইকার ম্যাচের আগের দিনই বলেছিলেন, গোল পেলেও উদ্‌যাপন করবেন না। গোল করার পর তা তিনি করেনওনি; বরং গোল করার পর তাঁর সতীর্থরা যখন উৎসব করতে দৌড়ে এসেছেন, সুয়ারেজ বার্সেলোনার সমর্থকদের দিকে করজোড় করে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গি করেছেন।

সুয়ারেজ যতই ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গি করুন না কেন, এমন হারে তো কোমানের চাকরি থাকার কথা নয়। যদিও বার্সেলোনা সভাপতি কোমানকে আশ্বস্ত করেছেন, আপাতত তিনিই থাকছেন বার্সেলোনার কোচ।

দ্বিতীয়ার্ধে কোমানকে মুঠোফোনে আরও একবার কথা বলতে দেখা যায়। হয়তো ডাগআউটে দাঁড়ানো সহকারী কোচকে কোনো নির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সেই নির্দেশনা যে কোনো কাজে আসেনি, সে তো ম্যাচের ফলই বলে দেয়!