আবাহনীকে নিজেদের গ্রুপে নিলেন মোহামেডানের কোচ

ড্রতে শন লেনের তুলে ধরা কাগজে লেখা আবাহনী।ছবি: বাফুফে।

ফেডারেশন কাপের গ্রুপিং পর্বটি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বসে উপভোগ করছিলেন মোহামেডানের কোচ শন লেন। কাগজে লিখে নিচ্ছিলেন গ্রুপিংয়ে দলগুলোর অবস্থান। সর্বশেষ পটের প্রথম লটারিতে হঠাৎ মঞ্চে ডেকে নেওয়া হলো অস্ট্রেলিয়ান কোচ লেনকে। প্রতি গ্রুপে তখন একটি করে দল বাকি।

লটারিতে ১ নম্বর পট থেকে প্রথম দলটি যাবে ‘ডি’ গ্রুপে। যেখানে আগে থেকেই আছে মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেড ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র। লটারিতে মোহামেডান কোচ শন লেন কাগজটি তুলে সেটি মেলে ধরলেন। কাগজে লেখা—আবাহনী লিমিটেড! চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের নাম উঠিয়ে জোরে হাততালিও দিলেন মোহামেডান কোচ। ২২ ডিসেম্বর শুরু হতে যাওয়া এবারের ফেডারেশন কাপের গ্রুপ পর্বেই তাহলে দেখা হচ্ছে আবাহনী ও মোহামেডানের।

২০১৮-১৯ মৌসুমে ধুঁকছিল মোহামেডান। প্রথম পর্ব শেষে পয়েন্ট টেবিলের নিচের দিকে ছিল। অনেক সমর্থকের মনে তো মোহামেডানের অবনমন শঙ্কাও পেয়ে বসেছিল। দ্বিতীয় পর্বে দলে যোগ দিয়ে মোহামেডানকে উদ্ধার করেন লেনই। প্রথম পর্বে আবাহনীর কাছে ৩-০ গোলে হারা মোহামেডান দ্বিতীয় পর্বে লেনের অধীন আবাহনীর বিপক্ষে জেতে ৪-০ গোলে। তবে সর্বশেষ বাতিল হওয়া লিগে মোহামেডানকে পাল্টা ৪-০ গোলে হারিয়েছে মারিও লেমোসের আবাহনী।

এত দিন বাংলাদেশে থেকে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের বাড়তি আমেজটা ভালোই টের পাচ্ছেন লেন। তাই আবাহনীকে পাওয়ায় নিজেও রোমাঞ্চিত, ‘মোহামেডান ও আবাহনী চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুটি দল। দর্শকেরা এই দুটি দলের খেলা দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। আবাহনীকে গ্রুপে পেয়ে ভালো লাগছে। ভালো ম্যাচ হবে আশা করি।’

বাতিল হয়ে যাওয়া লিগে মুখোমুখি হয়েছিল আবাহনী ও মোহামেডান।
প্রথম আলো ফাইল ছবি

১৩ দলের ফেডারেশন কাপে চারটি গ্রুপ। গ্রুপ ‘বি’ ছাড়া প্রতিটি গ্রুপেই তিনটি করে দল। গ্রুপ ‘এ’-তে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডির সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ ক্লাব। সাইফ স্পোর্টিং, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও উত্তর বারিধারা ক্লাব নিয়ে গ্রুপ ‘বি’।

গ্রুপ ‘সি’-তে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস ও রানার্সআপ রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডসের সঙ্গে চট্টগ্রাম আবাহনী। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পাবে দুটি দল, সেখানে গত মৌসুমের ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা ও রানার্সআপ রহমতগঞ্জের পাশে মারুফুল হকের চট্টগ্রাম আবাহনীকে নিয়ে গড়া গ্রুপ ‘সি’কেই ভাবা হচ্ছে ‘মৃত্যুকূপ’।

এ ছাড়া শেষ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা খেলতে না পারলে গ্রুপ ‘বি’ থেকে উত্তর বারিধারা এসে যোগ হবে আবাহনী-মোহামেডানের সঙ্গে গ্রুপ ‘ডি’তে। কারণ, চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ থেকে রানার্সআপ হয়ে প্রিমিয়ারে উত্তীর্ণ হওয়া বারিধারাকে নিয়ে একমাত্র চার দলের গ্রুপ ‘বি’।

তবে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, টুর্নামেন্টে খেলা নিয়ে সংশয় নেই আর্থিক অনটনে থাকা মুক্তিযোদ্ধার। এরই মধ্যে মালয়েশিয়ার কোচ রাজা ইসাকে চূড়ান্ত করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ক্লাবের ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম। ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকায় পা রাখার কথা তাঁর। ৫৪ বছর বয়সী এই কোচ মালয়েশিয়া ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন দলের হয়ে কোচিং করিয়েছেন।