ইউক্রেনে ম্যারাডোনার ট্যাটু বাঁচিয়ে দিল তাঁদের

মাতামালার পায়ে আঁকা ম্যারাডোনার ট্যাটু (বাঁ পাশে)। ডানে দানিয়েল মাতামালাছবি: টুইটার

চিলি থেকে সুদূর ইউক্রেনে গিয়েছিলেন চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে প্রতিবেদন করার জন্য। সেখানে গিয়ে এত বড় বিপদে পড়তে হবে, কে জানত!

বলা হচ্ছিল চিলিভিশনের সাংবাদিক দানিয়েল মাতামালার কথা। রাজনৈতিক ও বৈশ্বিক বিষয়াবলি নিয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন করে নিজ দেশে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন যে সাংবাদিক, তাঁর ওপরেই দায়িত্ব ছিল যুদ্ধ নিয়ে প্রতিবেদন করার। কিন্তু বিধি বাম।

সঙ্গী ফটোসাংবাদিককে নিয়ে এক চেকপোস্টে উল্টো ধরা পড়লেন ইউক্রেনের পুলিশের কাছে। মাতামালা ও তাঁর সঙ্গীকে তাঁরা ভাবলেন রাশিয়ার গুপ্তচর, যাঁরা ইউক্রেনে এসেছেন তথ্য সংগ্রহ করার জন্য।

ভাগ্যে কী লেখা আছে না আছে, সে নিয়ে দুশ্চিন্তায় এ দুজন যখন কাতর, তখনই রক্ষাকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন দুই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও লিওনেল মেসি। ভাবছেন কীভাবে, তাই তো?

ব্যাপারটা মাতামালা নিজেই ইনস্টাগ্রামে ব্যাখ্যা করেছেন, ‘আজ, রাস্তার এক চেক পয়েন্টে পুলিশ আমাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করল। আমাদের ক্যামেরা, কাগজপত্র, ফোন সবকিছু জব্দ করল, আমাদের নিয়ে গেলেন থানায়। প্রচণ্ড কঠিন জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হলাম আমরা। তাঁরা ভাবলেন, আমরা বুঝি রাশিয়ার কোনো গুপ্তচর।’

এখন ইউক্রেনের পুলিশ যদি তাঁদের কোনো কথাই না শোনেন? মাতামালারা যদি তাঁদের বোঝাতে ব্যর্থ হন যে তাঁরা আসলে রাশিয়ার কোনো গুপ্তচর নন, বরং লাতিন আমেরিকার দুই সাংবাদিক? কী হবে তখন? এই ভয়ে তখন দুজনের অবস্থাই শোচনীয়।
এই অবস্থায় মাতালামার সঙ্গী ক্যামেরাম্যানের মাথায় এক বুদ্ধি এল। তাঁর পায়ে ম্যারাডোনার একটা ট্যাটু আঁকা ছিল, সেটাই পুরো ঘটনার মোড় বদলে দিল।

মাতামালার ভাষায়, ‘আমাদের দুর্দান্ত ক্যামেরাম্যান তখন তাঁর পায়ে আঁকা ম্যারাডোনার একটা ট্যাটু দেখালেন পুলিশদের। এরপর আমাদের পাসপোর্ট ভালোভাবে দেখে তাঁরা বুঝলেন, আমরা সত্যি বলছি। তাঁরা কী বলছিলেন, আমরা কিছু বুঝিনি, শুধু দুটি শব্দ ছাড়া—মেসি ও ম্যারাডোনা। এরপর গোটা পরিস্থিতিই বদলে গেল। “ঈশ্বরের হাত”কে ধন্যবাদ, তাঁর জন্য আমরা বেঁচে গেলাম!’

মৃত্যুর পরও ম্যারাডোনার মতো তারকাদের যে কোনো ফুটবলপ্রেমী ভোলে না, মাতামালার কাছে মনে হয়েছে এই ঘটনা সেটারই একটা বড় উদাহরণ, ‘যুদ্ধের মতো কঠিন পরিস্থিতিতেও এমন কিছু ঘটনা অনেক স্বস্তি দেয়।’