ইতালির বাদ পড়াটা ‘অদ্ভুত’ লাগছে মানচিনির

ইতালির বাদ পড়াটা ‘অদ্ভুত’ লাগছে রবার্তো মানচিনির কাছেছবি: এএফপি

ইতালিকে বিশ্বকাপে দেখা যাবে না আবারও! ইউরো চ্যাম্পিয়নরা বিশ্বকাপ খেলবে না! চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিশ্বকাপ খেলতে না পারার কারণ উত্তর মেসিডোনিয়া! ফুটবলের খবরে যাঁরা খুব নিয়মিত নন কিন্তু বিশ্বকাপের খবর রাখেন, এমন মানুষদের মনে এমন সব প্রশ্ন জাগতেই পারে। সেটি খুবই স্বাভাবিক। বিশ্ব সংবাদমাধ্যমও ব্যাপারটি পুরোপুরি হজম করতে পারছে না। ইতালি ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়েছে তাদের ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে অদ্ভুত হারে—সংবাদমাধ্যমগুলোর ভাষ্য এমনই।

অথচ গত জুন–জুলাইয়ে ইউরোতে কী অসাধারণই না খেলেছে ইতালি। টুর্নামেন্টের প্রথম থেকে শেষ অবধি নিজেদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ধরে রেখেছিল তারা। ফাইনালে ইংল্যান্ডকে টাইব্রেকারে হারালেও মাঠের পারফরম্যান্সে ইতালিই ছিল যোগ্যতর। সেই ইতালিই কাল উত্তর মেসিডোনিয়ার বিপক্ষে প্লে-অফ সেমিফাইনালে ১–০ গোলে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে। ম্যাচে তো আগাগোড়াই ফেবারিট ছিল ইতালি। উত্তর মেসিডোনিয়ার কাছে ‘আজ্জুরি’রা হেরে যাবে—এমনটা বোধ করি ভাবেননি কেউই। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে আলেসান্দার ট্রাকোভস্কির দূরপাল্লার এক দুর্দান্ত শটে হৃদয় ভেঙেছে ইতালির। অথচ গোটা ম্যাচে গোল করার সুযোগ ইতালিই তৈরি করেছিল বেশি!

নিজেদের ব্যর্থতাতেই বিশ্বকাপের জায়গা হারিয়েছে ইতালি
ছবি: এএফপি

সংবাদ সম্মেলনে কাল কোচ রবার্তো মানচিনি কথা বলার অবস্থাতেও ছিলেন না। থাকবেন কী করে! এই প্লে–অফ ম্যাচ যে ইতালিকে খেলতে হবে, সেটিই কি তিনি ভেবেছিলেন? বাছাইপর্বে গ্রুপ ‘সি’তে সুইজারল্যান্ড, উত্তর আয়ারল্যান্ড, বুলগেরিয়া ও লিথুয়ানিয়ার সঙ্গে পড়েছিল ইতালি। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ২ পয়েন্টের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে গ্রুপে দ্বিতীয় হয়ে প্লে-অফ খেলতে হচ্ছে তাদের। সুইসদের সঙ্গে দুই লেগে দুটি পেনাল্টি মিস করেই সর্বনাশ হয় ইতালির। রোমের দ্বিতীয় লেগে পেনাল্টিতে গোল করলেই বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয়ে যায় যেখানে, সেখানে ৯০তম মিনিটে জর্জিনিও পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন। সুইজারল্যান্ডের মাটিতেও পেনাল্টিটি মিস করেছিলেন ওই জর্জিনিও।

উত্তর মেসিডোনিয়ার কাছে হারটা ঠিক হজম হচ্ছে না মানচিনির
ছবি: এএফপি

মানচিনির অধীনে দুর্দান্ত ফুটবলই খেলছিল ইতালি। ২০১৮ বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে না পারার দুঃখ তারা ভুলেছিল ইউরো ২০২০ জিতে। টানা ৩৭ ম্যাচে মানচিনির অধীনে হারেনি ইতালি। এই দলের বিশ্বকাপে জায়গা করতে না পারাটা তো যেকোনো বিচারেই হতাশার।

এমন হতাশার পর কোচ মানচিনি কীই–বা বলবেন, ‘আমি হতাশ, অনেক বেশি হতাশ। আমার আসলে কিছুই বলার নেই।’

বড় অদ্ভুতভাবেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ল ইতালি
ছবি: এএফপি

তাঁর মতে, উত্তর মেসিডোনিয়ার বিপক্ষে হারটা খুবই অদ্ভুত, ‘খুব অদ্ভুত কিছুই ঘটে গেল আজ রাতে। ইউরোতে আমরা ফেবারিট হিসেবেই জিতেছি। বিশ্বকাপে যেতে না পারাটা দুর্ভাগ্যজনক। আমার খেলোয়াড়দের জন্য আমার খুব খারাপ লাগছে।’

বিশ্বকাপে দলকে নিয়ে যেতে পারেননি, মানচিনি কি জাতীয় দলের কোচ থাকতে পারবেন? কাল উত্তর মেসিডোনিয়ার বিপক্ষে হারের পর সে প্রশ্নটি অবধারিতভাবেই এল মানচিনির দিকে। তবে, তিনি সেটি এড়িয়েই গেছেন, ‘দেখা যাক না। তবে এমন একটা হারের পর এসব নিয়ে কথা বলা যায় না।’