খেলা দিয়ে নিজের দাম বাড়াচ্ছেন রাফিনহা
ব্রাজিলের জার্সিতে এ পর্যন্ত খেলেছেন ৩ ম্যাচ। ২টি গোল করিয়েছেন, নিজে করেছেন ২ গোল। এর পাশাপাশি অসংখ্য ড্রিবলিং ও ডিফেন্স চেরা পাসের হিসাবও আছে।
সে হিসাব রাখা কষ্টকর হলেও একটি বিষয়ে ব্রাজিল সমর্থকেরা মোটামুটি নিশ্চিত, জাতীয় দলের হয়ে প্রথম তিন ম্যাচে এর চেয়ে ভালো শুরু হতে পারত না রাফিনহার।
লিডস ইউনাইটেডের এই উইঙ্গার আজ উরুগুয়ের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছিলেন ব্রাজিলের একাদশে। ১৮ মিনিটে তুলে নেন নিজের প্রথম গোল। বিরতির পর ৫৮ মিনিটে প্রতি–আক্রমণ থেকে তাঁর করা দ্বিতীয় গোলটি অনেক দিন ব্রাজিল সমর্থকদের চোখে লেগে থাকবে।
সত্যি বলতে, ব্রাজিল দলে ডাক পাওয়ার পর থেকেই নিজের জাত চিনিয়ে যাচ্ছেন রাফিনহা। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের ধাঁচ ও গোলের খোঁজে ছন্দ ফুটছে তাঁর পায়ে। এই অক্টোবরেই ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ব্রাজিলের ৩-১ গোলে জয়ের ম্যাচে অভিষিক্ত হয়েছিলেন রাফিনহা। সে ম্যাচে ২টি গোল করানোর পাশাপাশি ৪৫ মিনিটে আদায় করে নেন পেনাল্টিও।
আজও ব্রাজিলিয়ান ছন্দের সৌরভ ছড়িয়েছেন রাফিনহা। তাঁকে সামলাতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়েছে উরুগুয়ে ডিফেন্ডারদের। ব্রাজিলের জার্সিতে সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৪৫ মিনিট খেলা রাফিনহার পরিসংখ্যান দেখুন—গোলপোস্টে রেখেছেন ৬টি শট, গোল করার মতো ৫টি সুযোগ তৈরি করেছেন, গোল করেছিলেন ২টি, নিজে করেছেন ২ গোল।
জাতীয় দলে এমন পারফরম্যান্সে রাফিনহা নিজেও খুশি। ম্যাচ শেষে বলেন, ‘এর চেয়ে স্মরণীয় আর কিছু হতে পারত না। শৈশবের স্বপ্ন সত্যি করার পথে এগোচ্ছি। এই রাত (বাংলাদেশ সময় ভোর) ভুলে যাওয়া কঠিন।’
ফরাসি ক্লাব রেঁনে থেকে গত বছর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব লিডস ইউনাইটেডে যোগ দেন রাফিনহা। লিভারপুলের রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার ও জাতীয় দল সতীর্থ ফাবিনিও তাঁর খেলায় আপ্লুত। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবোকে বলেন, ‘গত দলবদলেও শুনেছিলাম, সে লিভারপুলে আসতে পারে। আমিও ভেবেছিলাম, সে হয়তো আসবে। কিন্তু লিডসে থেকে গেল। এখন সে লিডসের সেরা খেলোয়াড়। যে দলই তাদের বিপক্ষে খেলুক না কেন, তারা জানে রাফিনহা বিপদ ডেকে আনতে পারে।’
লিভারপুল? রাফিনহার এজেন্ট ডেকো জানিয়েছেন, গত দলবদলের মৌসুমে তাঁর প্রতি আগ্রহী ছিল অ্যানফিল্ডের ক্লাবটি। কিন্তু ১ কোটি ৭০ লাখ পাউন্ডে লিডসে যোগ দিয়ে কোচ মার্সেলো বিয়েলসার একাদশে নিয়মিতই সুযোগ পাচ্ছেন তিনি।
তাঁর এজেন্ট বার্সেলোনা ও চেলসির সাবেক মিডফিল্ডার ডেকো জানিয়েছেন, রাফিনহার প্রতি আগ্রহী ক্লাবগুলোর মধ্যে লিভারপুলও ছিল, ‘রাফিনহা এখন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। লিভারপুলসহ বেশ কিছু ক্লাব তার প্রতি আগ্রহী। কেউ কেউ যোগাযোগ করেছে, কিন্তু এখনো কিছুই আনুষ্ঠানিক হয়নি। লিডস তাকে আরও এক মৌসুম ধরে রাখতে চায়।’
এলান্ড রোডের ক্লাবটিতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ রাফিনহার। তাঁকে আরও এক মৌসুম ধরে রেখে দামটা বাড়িয়ে নিতে চায় লিডস। ডেকোর কথায় তেমন ইঙ্গিতই মিলল, ‘রাফিনহা লিডসে সুখেই আছে, তবে সামনে সে বড় একটি ধাপ অতিক্রম করবে। লিডস তা জানে, এ কারণেই তারা বিক্রিটা গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে চায়।’
রাফিনহা এই ফর্ম ধরে রাখতে পারলে লিডস তাঁকে যে ভালো দামে বেচতে পারবে, তা বলাই বাহুল্য।