গোল করতে মেসির ‘ঘর’ই বেশি পছন্দ রোনালদোর

মেসির ক্লাবের ঘরের মাঠে কাল জোড়া গোল করেন রোনালদোছবি: এএফপি

ক্যাম্প ন্যুতে চিরায়ত উদযাপনে উড়ছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। লিওনেল মেসির মুখ তখন মাটিতে। চোখেমুখে রাজ্যের হতাশা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী তাঁর ঘরে এসে জোড়া গোল করলেন, গড়লেন নতুন রেকর্ড—এসব কি আর প্রাণে সয়!

পেশাদার জগৎটাই এমন। আজ সাফল্যের দেখা মেলে তো কাল ব্যর্থতা। মেসির জন্য কাল রাতটা ব্যর্থতার হলে রোনালদোর জন্য অবশ্যই আনন্দের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে প্রায় আড়াই বছর পর মাঠে দেখা, তাতে নিজে যেমন ভালো খেলেছেন, জুভেন্টাসও পেয়েছে ৩-০ গোলের জয়।

চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনার এই হারের রাতে রোনালদোর মুকুটে যোগ হয়েছে আরও এক অর্জনের পালক।

২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার পর কাল রাতেই প্রথম বার্সার মুখোমুখি হয়েছিলেন পর্তুগিজ তারকা। রিয়ালে থাকতে মেসি-রোনালদোর দ্বৈরথ মাতিয়ে রেখেছিল ফুটবল বিশ্বকে।

রোনালদো স্পেন ছাড়ার পর নতুন মোড় পায় তাঁদের দ্বৈরথ। এই নতুন মোড়ের পথেই কাল প্রথমার্ধে ও দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি থেকে দুটি গোল করেন জুভেন্টাস ফরোয়ার্ড। এর মধ্য দিয়ে নতুন এক মাইলফলকেরও দেখা পান রোনালদো।

ন্যু ক্যাম্পে এ নিয়ে মোট ১৪ গোল করলেন রোনালদো। ক্লাব ক্যারিয়ারে আর কোনো প্রতিপক্ষের মাঠে এত গোল নেই জুভেন্টাস তারকার। আর এই জোড়া গোল দিয়ে ক্লাব ক্যারিয়ারে ৬৫০ গোলের দেখাও পেয়ে গেলেন রোনালদো।

পেনাল্টি থেকে লক্ষ্যভেদের পর জুভেন্টাস তারকা রোনালদো
ছবি: এএফপি

সাবেক রিয়াল তারকা আরও একটি কীর্তিও গড়েছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনার ঘরের মাঠে তাঁর আগে পেনাল্টি থেকে জোড়া গোল করতে পারেননি আর কোনো খেলোয়াড়।

রোনালদো কাল কি তা করেছেন বহুদিন পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হওয়ার আলাদা প্রেরণা থেকে? যদিও মেসিকে কখনোই ‘শত্রু’র চোখে দেখেন না বলে ম্যাচ শেষেই জানিয়েছেন রোনালদো।

কাল ম্যাচের শুরুতেও সেই আঁচ মিলেছে। ম্যাচের আগে রোনালদো-মেসি একে অন্যকে জড়িয়ে ধরেন আলিঙ্গনে।

ক্লাব ও দেশের হয়ে এ নিয়ে ৩৬ বার একে-অপরের মুখোমুখি হলেন মেসি-রোনালদো। এর মধ্যে মেসির দল জিতেছে ১৬ বার, রোনালদোর দল ১১ বার। গোলসংখ্যায়ও রোনালদোর (২১) চেয়ে এক গোলে এগিয়ে মেসি (২২)।

কাল মেসির দল হারলেও আর্জেন্টাইন তারকা কিন্তু মাঠে তা শুধু দাঁড়িয়ে দেখেননি। নিজের সর্বোচ্চটুকু নিংড়ে দিয়েই লড়েছেন বার্সা ফরোয়ার্ড। জুভেন্টাসের বিপক্ষে ১১টি শট নেন মেসি, যা গোটা জুভেন্টাস দলের শট নেওয়ার সংখ্যার চেয়ে ৩টি শট বেশি।

ইতালিয়ান ক্লাবটির জাল বরাবর মেসি যেখানে ৭টি শট রাখতে পেরেছেন, জুভেন্টাস সেখানে ৪টি শট জাল বরাবর রাখতে পেরেছে। মেসির কপালে কাল যে কিছুটা দুর্ভাগ্য ভর করেছিল, তা তো বলাই যায়।

কতদিন পর দেখা! রোনালদোকে কি এমন কথাই জিজ্ঞেস করছেন মেসি?
ছবি: এএফপি