জার্সি, নাকি অঙ্কের খাতা!

ফুটবল মাঠই হবে গণিত শেখো ক্লাস! আর পাঠ্যবই খেলোয়াড়দের জার্সি। জার্সির নম্বরের বদলে সেখানে লেখা থাকবে ছোট ছোট অঙ্ক। শিশুদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এমন অভিনব উপায় বেছে নিয়েছে রোমানিয়া ফুটবল দল।
২০১৪ সালের একটি সরকারি জরিপের হিসেব অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযোগী হওয়ার পরেও ১৪ শতাংশ শিশু বিদ্যালয়ে যায় না। রোমানিয়ার শিক্ষামন্ত্রীও বলেছিলেন, দেশের গ্রামগুলোতে অনেক শিশুই প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। স্কুলের চাইতে খেলাধুলায় বেশি আগ্রহ তাদের। আর খেলা মানেই তাদের বেশির ভাগের কাছে প্রিয় ফুটবল।
সরকার এখন শিক্ষার প্রতি মনোযোগী হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে ফুটবলের জনপ্রিয়তা। এখন শিশুদের সব ধরনের ফুটবল প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে পোশাকের গায়ে জার্সি নম্বর লেখা হবে অঙ্কের সমস্যার ছদ্মবেশে। ফুটবল মাঠে শিশুরা এখন শুধুই গোল, ট্যাকল, পাস, ড্রিবল শিখবে না। একই সঙ্গে শিখবে গণিতের প্রাথমিক ধারণা, যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগের উদাহরণ আর সংখ্যার নামতা।
রোমানিয়া ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট রাজফন বারলেনু বললেন, ‘খেলা এবং শিক্ষা দুটোই সমান জরুরি। খেলাধুলার মাধ্যমে আমরা একটা সুস্থ জাতি চাই, একই সঙ্গে তাদের বিদ্যা-বুদ্ধিতেও হতে হবে সমান পারদর্শী।
নতুন এই উদ্যোগের আক্ষরিক অর্থেই ‘পোশাকি’ মহড়া করে দেখিয়েছে রোমানিয়া জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড়েরা। একটি প্র্যাকটিস সেশনের ছবিগুলোতে দেখা যায়, খেলোয়াড়দের জার্সির পেছনে সরাসরি কোনো নম্বরের বদলে অঙ্কের হিসেব। যার উত্তরটা মিলাতে পারলেই পাওয়া যাবে সে খেলোয়াড়ের জার্সি নম্বর। যেমন যে খেলোয়াড়ের জার্সি নম্বর ৯, তার জার্সির পেছনে লেখা তিন গুণ তিন।
মজার ব্যাপারই বটে। পুরো প্রক্রিয়াটা আরও ভালোভাবে বোঝানোর জন্য অনলাইনে একটা নির্দেশিকাও সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। খেলার মাধ্যমে শিক্ষায় আগ্রহী করে তোলার এই প্রকল্পটা সফল হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট সকলেই। পড়াশোনাটা এত আনন্দের হয়ে উঠলে সফল তো হওয়ারই কথা।
রোমানিয়ার সামগ্রিক শিক্ষার অবস্থায় এই নতুন সংযোজন কি প্রভাব ফেলে তা জানা যাবে সময় গড়ালেই। ফল ভালো হলে অন্য দেশগুলোর জন্যও একটা উদাহরণ হয়ে যেতে পারে এটি।