তিনি সেদিনই বুঝেছিলেন মেসি–বার্সা নাটক চলছে

চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে মেসি। তাঁর চেহারাই নাকি সেদিন বলে দিচ্ছিল অনেক কিছু।ছবি: রয়টার্স

ওই ম্যাচটিই লিওনেল মেসির ধৈর্যচ্যুতি ঘটিয়েছে। চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৮-২ গোলে হার মেসি কোনোভাবেই নিতে  পারেননি। বার্সেলোনার ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে এই হারের পরপরই হয়তো মেসি চূড়ান্ত করে ফেলেছিলেন সিদ্ধান্তটা—অনেক হয়েছে, ন্যু ক্যাম্পে আর নয়।

বায়ার্নের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের হারটা ছিল বার্সেলোনা সমর্থকদের বিমূঢ় করে দেওয়া এক বিস্ময়—একটা দল এতটা বাজে খেলতে পারে! অনেকেই স্বীকার করবেন, বার্সেলোনার সেদিন কপাল নেহাতই ভালো ছিল নয়তো বিপর্যয়টা হতে পারত আরও লজ্জার। অনেক দিন থেকেই ক্লাবের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রচণ্ড বিরক্ত ছিলেন মেসি, বায়ার্নের সঙ্গে হার যে ওই বিষয়গুলোরই সম্মিলিত বিস্ফোরণ, সেটি সমর্থকদের আর বুঝতে বাকি নেই।

বায়ার্ন ম্যাচের সময়ই বোয়েটাং বুঝেছিলেন কিছু একটা ঘটছে।
ছবি: রয়টার্স

মেসির মতো একজন তারকা সব জেনে-বুঝে কেবল ক্লাবের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে সবকিছু সহ্য করে যাবেন, অনিয়ম আর বাজে ব্যবস্থাপনাকে সমর্থন করে যাবেন, তেমন কিছু ভাবাই তো বিরাট ভুল। বায়ার্ন-বিপর্যয়ের পর দলে পরিবর্তন আসছে, কোচ কিকে সেতিয়েনকে বাদ দিয়ে নেদারল্যান্ডসের সাবেক তারকা রোনাল্ড কোম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মূল ব্যবস্থাপনায় বদল না আসলে যে কিছু ই হয় না, সেটি বুঝতে পারছেন মেসি।

বায়ার্নের বিপক্ষে ম্যাচে খেলতে নামার আগেই যে মেসি ঠিক তাঁর মধ্যে ছিলেন না, এটা লক্ষ্য করেছিলেন জার্মান তারকা জেরোম বোয়াটেং। ওই ম্যাচে তাঁর ভাবভঙ্গি দেখেই নাকি বোঝা গিয়েছে ক্লাবের সঙ্গে নানা ধরনের ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছেন আর্জেন্টাইন তারকা, ‘আমার তখনই মনে হয়েছিল ক্লাবের সঙ্গে কিছু একটা ঘটে চলেছে মেসির। ওর চেহারার মধ্যেই ফুটে উঠছিল সবকিছু।’

জার্মান পত্রিকা বিল্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বোয়াটেং কথা বলেছেন মেসির সম্ভাব্য নতুন দল নিয়েও। তিনিও মনে করেন গার্দিওলা যেহেতু আছেন, মেসির উচিত ম্যানচেস্টার সিটিতেই যাওয়া। একটা সময় মেসি আর গার্দিওলা এক সঙ্গে মিলে অনেক সাফল্য উপহার দিয়েছে তাঁদের দলকে। দুই পক্ষই জানে, তাদের দর্শন একে অন্যের সঙ্গে দারুণভাবেই যায়।’

মেসি এরই মধ্যে বার্সেলোনাকে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁকে ছেড়ে দিতে। ব্যুরো ফ্যাক্সের মাধ্যমে আর্জেন্টাইন তারকার কাছ থেকে সিদ্ধান্ত জানতে পেরেও বার্সা মরিয়া তাদের সেরা তারকাকে রেখে দিতে। মেসির ৭০ কোটি ইউরোর রিলিজ ক্লজ প্রযোজ্য কি প্রযোজ্য নয়, এমন নানা কথা শোনা গেলেও গতকাল জানা গেছে তাঁকে বার্সেলোনা থেকে নিতে সেই রিলিজ ক্লজ পরিশোধ করতেই হবে। গতকাল লা লিগ কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে সে কথা জানিয়ে দিয়েছে।

বোয়াটেং যে নাটকের গন্ধ পেয়েছিলেন বায়ার্ন ম্যাচের দিন, সে নাটকের কাহিনি এখন কোন দিকে গড়ায়, কে জানে! তবে এটা ঠিক মেসি আর বার্সার নাটকটা জমে উঠেছে ভালোভাবেই।