বাংলাদেশি হলেও আলী নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত! যাঁর অনেক কিছুই দেশের ফুটবল মহলে অজানা। সেই অজানা গল্পের সন্ধানে গত ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ শহরে আলীর বাসায় ঢুঁ মারা। সেদিন পারিবারিক একটা সম্পত্তি নিবন্ধন করতে নারায়ণগঞ্জ রেজিস্ট্রি অফিসে যান আলী, সঙ্গে তাঁর মা এবং পরিবারের অন্যরা। ঢাকা থেকে এই প্রতিবেদকের আসার খবর পেয়ে রেজিস্ট্রি অফিস থেকে মা ও মেয়েকে একটু আগেই বাসায় পাঠিয়ে দেন আলী।
মূল সড়ক থেকে তাঁর বিবিএ শেষ করা বড় মেয়ে নিয়ে গেলেন বাসায়। পেছন পেছন আসছিলেন আলীর সত্তরোর্ধ মা সাহারা বেগম। পথেই সাহারা বেগমের কাছে জানতে চাওয়া, ‘শুনেছি, আপনার বাবা অর্থাৎ আলীর নানা ছিলেন নাইজেরিয়ান। কখন, কীভাবে তিনি এসেছিলেন বাংলাদেশে?’
হাঁটার গতি থামিয়ে স্মিত হেসে বলেন বৃদ্ধা বলেন, ‘আমি তো ওই সব দেশের খবর কইতে পারুম না বাবা। অনেক আগের কথা তো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯৪০ সাল)। সালটাল ঠিক জানি না। তবে শুনছি সাত বছর বয়সে তিনি বাড়ি (নাইজেরিয়া) থেকে চইলা আসেন বাংলাদেশে।’
মাত্র সাত বছর বয়সে! শুনে বিস্মিত হওয়ার পালা। আলী অবশ্য বলেন, সাত বছর নয়; যুবক বয়সে বাংলাদেশে এসেছিলেন তাঁর নানা। সে যা–ই হোক, কিন্তু কীভাবে এলেন? ‘তখন নাইজেরিয়ার কমলা নামের একটা সার্কাস দলের সঙ্গে তিনি নারায়ণগঞ্জে আসেন। সার্কাস দলে বিভিন্ন খেলা খেলতেন। কিন্তু দলটি দেশে ফিরে গেলেও আমার আব্বু আর দেশে ফিরে যাননি। দেশে নাকি তাঁর সৎমা ছিলেন। সৎমা খুব মারতেন।’ আলীর বাসায় বসে গড়গড় করে বলে যান তাঁর মা সাহারা বেগম।
গল্প এগোয়। আলীর মা বলে চলেন, ‘আব্বুকে বলতাম, আপনার দেশের গল্প শুনি, বলেন। উনি বলতেন, “কী আর শুনবা তোমরা!” ছোট ছেলেমেয়ে রাইখা যেন মা মারা না যায়। সৎমা আইলে অনেক কষ্ট। মানে আব্বু বুঝাইছেন, ঘরে সৎমা থাকলেই বিপদ। শুনছি নাইজেরিয়ায় আমার দাদা–দাদি ছিলেন। কিন্তু তাঁদের আমরা দেখতে পারলাম না, দাদা–দাদি বলে ডাকতেও পারলাম না। এটাই আফসোস।’
‘আপনার বাবার কোনো ছবি আছে?’ সাহারা বেগমের সারল্য আবার ফুটে ওঠে উত্তরে, ‘আগে মানুষ কইত, ছবি তোলা ভালো না। তাই আর ছবি তোলা হয় নাই। মানুষ নাই, ছবি দিয়া কী করুম। ছবিটবি আসলে কিছুই নাই আব্বুর।’
মা যখন এসব গল্প করছেন, ততক্ষণে রেজিস্ট্রি অফিসে কাজ সেরে বাসায় এসে পড়েছেন আলী। মায়ের পাশে বসে যোগ দেন গল্পে। বলেন, ‘নানা এই দেশে থেকে গিয়ে নারায়ণগঞ্জে কুমুদিনীতে চাকরি নেন বলে শুনেছি। তারপর বিয়ে করে এখানে স্থায়ী হন।’
সাহারা বেগম দেন বাড়তি তথ্য, ‘এখানে আমার আব্বু দুটি বিয়ে করেন। প্রথম বউ নাকি টাকাপয়সা নিয়ে পালায়া গেছে। এরপর আমার মাকে বিয়ে করেন। মায়ের বাড়ি বুড়িগঙ্গার পাশে ডিগ্রিচর গ্রামে। এই ঘরে দুই ভাইয়ের পর আমি হই। মুক্তিযুদ্ধের কয়েক বছর আগে আমার বিয়ে হয়। দুই মেয়ের পর আমার ঘরে আইল আলী।’
শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল, এ যেন রূপকথা। সুদূর নাইজেরিয়া থেকে এক অখ্যাত তরুণের বাংলাদেশে আসা, এখানে সংসার পাতা... রূপকথা নয়তো কী! আলীর মা জানান, তাঁর বাবার নাম ছিল ববে আলী। তবে আলীর ভাষ্য, তাঁর নানার নামও ছিল মোহাম্মদ আলী। নানার নামেই রাখা হয় নাতির নাম। সে যা–ই যাক, নামে কী–ই বা আসে যায়। তারপর?
নানার মর্মান্তিক মৃত্যু
১৯৭১ সালের ৩ অক্টোবর আলীর জন্মের কয়েক মাস আগে মৃত্যু হয়েছে নানার। সেই মৃত্যু মর্মান্তিক। প্রসঙ্গটা আসতেই আপ্লুত হয়ে ওঠেন সাহারা বেগম, ‘তখন মুক্তিযুদ্ধ লাইগ্যা গেছে। চারদিকে গন্ডগোল। আব্বু একটা কুকুর পালত। একদিন সকালে আমরা নাশতা খাইতেছিলাম বাড়িতে। ওই সময় আরেকটা কুকুর কোথা থেকে যেন চইলা আসে। দুইটা কুকুর মারামারি লাগে। এর মধ্যে হঠাৎ চইলা আসা কুকুরটা দৌড়ে এসে আব্বুরে কামড় দেয়। তখন কুকুরের কামড়ের ভালো চিকিৎসা ছিল না। ভাগ্যেই ছিল তাঁর এমন মৃত্যু। নারায়ণগঞ্জেই তাঁকে কবর দেওয়া হয়।’
বাংলাদেশি হলেও ‘বিদেশি ফুটবলার’
আলীর মা, তাঁর দুই মামা এবং বোনের পাশাপাশি আলী নিজেও দেখতে নাইজেরিয়ানদের মতো। বাংলাদেশি, কিন্তু নাইজেরিয়ান। ফলে আলীকে নাইজেরিয়ান ফুটবলার ভেবে বসাটা খুবই স্বাভাবিক। আর সেই ভুলই করেছিলেন রাণীগঞ্জ বর্ডারে ইমিগ্রেশন অফিসার।
কীভাবে? আলী পেছন ফেরেন, ‘সালটা মনে নেই। গাজীপুরের একটা ক্লাবের হয়ে ফুটবল খেলতে সড়কপথে আমরা নেপালে যাচ্ছিলাম। রাণীগঞ্জ বর্ডারে (পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে) সবাই ইমিগ্রেশন অফিসারের রুমে যখন ভিসা প্রোসেসিং করছিলাম, তখন অফিসার আমাকে বিদেশি মনে করে অন্যদের বলেন, “আপনাদের পাসপোর্টগুলো টেবিলে রেখে সবাই বাইরে অপেক্ষা করেন। উনি (আলী) এখানে বসুক।” অফিসার ভেবেছেন আমি বিদেশি, ফলে আমাকে একটু খাতির–যত্ন করেন (হা হা)। এটা আমার কাছে স্মরণীয় এক ঘটনা। অন্যরা তখন মিষ্টি মিষ্টি হাসছিলেন। তাঁরাও বুঝতে পারছেন, আমাকে বিদেশি মনে করেছেন অফিসার।’
আলীর সংযোজন, ‘এলাকার অনেকে মজা করে আমাদের বলে, ‘‘তোরা তো এই দেশের না। তোরা নাইজেরিয়ায় চলে যা।”’ আলীর মা বলেন, ‘দুষ্টামি করে এক আত্মীয় আমাকে বলত, “তোগোরে নাইজেরিয়ায় পাডায়া দিমু।” আমি বলতাম, ভালো তো, পেলেনের টিকিট কাইট্যা দে, যাই গা... হা হা।’
নাইজেরিয়ার কোন শহরে বাবার বাড়ি, জানেন না সাহারা বেগম। জানার চেষ্টা করেও নাকি জানতে পারেননি। এ নিয়ে বলেন, ‘আমরা আব্বুকে কইছিলাম, আপনি নাইজেরিয়ার ঠিকানা দেন। আমরা দেখি নাইজেরিয়ায় গিয়া আপনার বাড়ি বাইর করতে পারি কি না। উনি বলেছিলেন, “তোমরা গেলে ওই মহিলা (সৎমা) তোমাগো মাইরা ফালাইব।” এ জন্য তিনি আমাদের ঠিকানা দেননি।’
ঠিকানার সন্ধান না পাওয়া যাক, অন্তত একবার নাইজেরিয়ায় তো যাওয়া যায়! আলীরও তা–ই ইচ্ছা। এএফসি কাপের ম্যাচ খেলতে একবার আবাহনী লিমিটেডের সঙ্গে কম্বোডিয়ায় গিয়ে আলী ভেবেছিলেন, কম্বোডিয়া বোধ হয় আফ্রিকান দেশ। ‘কম্বোডিয়ার কাছাকাছি হলে সেখান থেকে একবার নাইজরিয়ায় যাব ঠিক করেছিলাম মনে মনে। কিন্তু পরে জানলাম কম্বোডিয়া হলো এশিয়ার দেশ,’ বলেন তিনি।
জীবনে একবার হলেও নাইজেরিয়ায় যাওয়ার স্বপ্ন আলীর। নিজেই বলেন, ‘নাইজেরিয়ায় কোথায় আমার নানার বাড়ি, জানি না। জানা আর সম্ভবও না। কিন্তু শত হলেও নানার দেশ। তাই একবার অন্তত যাইতে চাই নাইজেরিয়ায়।’
৬০ বছর পর্যন্ত খেলার ইচ্ছা
৫১ বছর বয়সেও শারীরিকভাবে অনেক ফিট মোহাম্মদ আলী। ২০ বছর বয়সী নবীনের মতোই উদ্যম। প্রতিদিন অনুশীলন করেন। ২০ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের প্রথম থেকেই খেলার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু লিগ শুরুর আগের দিন এই প্রতিবেদককে বলছিলেন, ‘দুই–একটা দল থেকে টাকার যে অঙ্ক বলছে, তাতে পোষাবে না আমার। একটি ক্লাব তিন লাখ টাকা বলেছে। এক লাখ টাকা আবার বাকি। এভাবে খেলে লাভ নেই।’
তার মানে কি খেলায় দাঁড়ি পড়ে গেল? আলী তখনই বলেছিলেন, ‘এখনই অবসর নয়। যত দিন পারি, খেলে যাব। আমার তো ইচ্ছা ৬০ বছর পর্যন্ত খেলা। কেন খেলা ছাড়ব বলেন! দলগুলো এখনো আমার ওপর ভরসা রাখে। আগামীবার ফার্স্ট ডিভিশনে খেলব।’
২৯ বছরের লম্বা ভ্রমণ
১৯৯৩ সালে ধানমন্ডি ক্লাব দিয়ে ঢাকার প্রথম বিভাগ ফুটবলে শুরু। পরের বছর প্রিমিয়ার ডিভিশন চালু হয় ঢাকার ফুটবলে। আলী প্রিমিয়ারেই খেলতে থাকেন। ধানমন্ডিতে এক বছর, বিআরটিসিতে পাঁচ বছর, রহমতগঞ্জে তিন বছর, ব্রাদার্সে পাঁচ বছর, এক বছর সিলেটের বিয়ানীবাজার। ২০০৭ সালে পেশাদার লিগ চালু হলে প্রথম দুই মৌসুম আবাহনী লিমিটেডে। তারপর মুক্তিযোদ্ধায় এক বছর হয়ে ফরাশগঞ্জে দুই বছর।
২০১৩ সালে নাম লেখান প্রথম বিভাগের ক্লাব স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘে। ২০১৪ সালে পেশাদার লিগের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ চালু হলে প্রথম বছরে ফরাশগঞ্জ। ওই বছর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে রানার্সআপ হয়ে ফরাশগঞ্জ উঠে আসে প্রিমিয়ারে। কিন্তু আলী চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলেন ফকিরেরপুলে। এই ফাঁকে প্রিমিয়ারে এক বছর কাটিয়ে ফরাশগঞ্জ আবার নেমে আসে দ্বিতীয় স্তরে। আলী গত দুইবারই খেলেন ক্লাবটিতে। ৯, ৯ করে শীর্ষ ফুটবলে কাটিয়ে দিয়েছেন ২৯টি বছর।
১৯৯৩ সালে ধানমন্ডিতে নাম লেখানোর সময় আলফাজ–আরমানরা খেলেন ইস্কাটনে। পরে খেলেছেন জুয়েল রানা, মাসুদ রানা, হাসান আল মামুন, জয়, আরমান, আলফাজদের সঙ্গে। ২০০৪ সালে ব্রাদার্সের লিগ শিরোপাজয়ী দলে ছিলেন তখনকার তারকা জয়, রজনী, বিপ্লব, টিটু, নজরুলদের সঙ্গে। এই ফুটবলাররা বুট জোড়া তুলে রেখেছেন অনেক আগেই। কিন্তু আলী এখনো খেলে চলেছেন!
খেলার প্রেম
ছোটবেলায় অনেক দুষ্টু ছিলেন আলী। তাঁর মা বলেন, ‘খেলার জন্য ও তখন টাকা চাইত। টাকা না দিলে জোর করত। বলত, ঘরে আগুন লাগাইয়া দিব। ওকে বলতাম, যা বাবা, স্কুলে যা। কিন্তু স্কুলে কম যাইত (মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়েছেন)। ওর জীবনে খালি খেলা আর খেলা। কাজের জন্য আলীকে একটা গার্মেন্টসে দিলাম। কিন্তু সেখানে সে থাকত না। গার্মেন্টসে ও বলত, মায়ের অসুখ। ঢাকায় যাইতে হইব। এই কথা বলে খেলতে চলে যেত। আমি দুপুরে ওর জন্য ভাত নিয়ে যাইতাম সেখানে। লোকজন বলত, “আপনি আইছেন কেন? আপনার নাকি অসুখ! ও তো আপনাকে দেখতে গেছে।” আজ ওকে দেখে আমার তৃপ্তি লাগে।’
ঢাকায় দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেট এবং নারায়ণগঞ্জে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলেছেন আলী। হতে চেয়েছিলেন ক্রিকেটার। হয়েছেন ফুটবলার। নারায়ণগঞ্জে বাসার কাছে বড় মাঠে খেলতে গিয়ে স্থানীয় সাবেক ফুটবলার, ক্রিকেটার ও কোচ দুলু আফেন্দির চোখে পড়ে যান কিশোর বয়সেই। সেই স্মৃতি হাতড়ে আলীর মা বলেন, ‘দুলু আফেন্দি একদিন আমার সঙ্গে দেখা করতে এলেন। বলেন, “আলীরে আমারে দিয়ে দেন। ওরে খেলা শিখামু।”’
আশির দশকের শেষ দিকে ঢাকায় কিশোর ফুটবল লিগে দুলু আফেন্দি তাঁর দল ইস্টার্ন স্পোর্টিংয়ে খেলান আলীকে। আলী বলেন, ‘প্রথমে আমাকে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলোনো হয়। পরে গুরু দুলু আফেন্দি আমাকে গোলকিপিং করতে বলেন।’
তাঁর তৃপ্তি
তৃপ্তি নিয়ে সিঁড়ির দেয়ালের গায়ে আলী নিজের ছবিগুলো দেখান একফাঁকে, ‘এই যে, এটা হলো নারায়ণগঞ্জ জেলা টিমের ছবি। এটা হলো, আফ্রিকা একাদশের। বাংলাদেশ ন্যাশনাল টিমের সঙ্গে একটা প্রীতি ম্যাচ ছিল...। এখানে দেখুন, আমার একটা সিঙ্গেল ছবি। মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে অতিথি খেলোয়ার হিসেবে ভারতে আইএফএ শিল্ড খেলতে গেছি। এটা ব্রাদার্সের ছবি।’
প্রিমিয়ার লিগ দুবার জিতেছেন ব্রাদার্সের জার্সিতে। আবাহনীর হয়ে জেতেন পেশাদার লিগ, সুপার কাপ। প্রথম বিভাগ চ্যাম্পিয়ন স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের হয়ে। ব্রাদার্সের হয়ে ভারতের বরদুলই ট্রফিতে এক ম্যাচে সেরা। এসবই তাঁকে আনন্দ দেয়। বলেন, ‘যখনই খেলেছি, নিজেকে উজাড় করে দিয়েছি। ফুটবল খেলে যা পেয়েছি, হাজার শুকরিয়া।’
পরিবার নিয়ে ভালোই আছেন মোহাম্মদ আলী। দুই মেয়ের বড়জন বিবিএ শেষ করেছেন, ছোটজন নারায়ণগঞ্জ কলেজে স্নাতক পড়ছেন। একমাত্র ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। তাদের নিয়েই দুই কক্ষের ছোট বাসায় আলীর সংসার। জায়গা কম, বসার ঘরে একটা সোফা। একটা টেবিল, টিভি, ফ্রিজ, সবই একই স্থানে। গাদাগাদি অবস্থা। বাসায় বসে গল্প করতে করতে বিকেল চারটা বাজে। আলী উঠলেন। মাঠে যাবেন। ইফতারির আগে ঘণ্টা দুয়েক মাঠে কাটান, পাশেই আলী আহম্মদ চুনকা মাঠে।
ফুটবল খেলে সবকিছুই পেয়েছি। কিন্তু দেশের হয়ে কখনো খেলতে পারিনি। এটা অনেক বড় দুঃখ আমার। হয়তো আমার ভাগ্যে ছিল না জাতীয় দলে খেলা।
অতৃপ্তিও আছে
ঢাকার ফুটবলে তাঁর শুরুর সময়ে গোলকিপার ছিলেন মোহাম্মদ মহসীন, ছাইদ হাসান কানন, আতিকুর রহমানরা। তাঁদের পর আসেন আমিনুল, বিপ্লবদের মতো গোলকিপাররা। ফলে জাতীয় দলে কখনো ডাক পাননি আলী। এই অতৃপ্তি তাঁকে পোড়ায়, ‘ফুটবল খেলে সবকিছুই পেয়েছি। কিন্তু দেশের হয়ে কখনো খেলতে পারিনি। এটা অনেক বড় দুঃখ আমার। হয়তো আমার ভাগ্যে ছিল না জাতীয় দলে খেলা।’
নিজের শুরুর সময়ের ফুটবল আর এখনকার ফুটবলের পার্থক্য দেখে হতাশ তিনি, ‘আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি টাকা পান ফুটবলাররা। আমরা এর কিছুই পাইনি। কিন্তু খেলার মান পড়ে গেছে। দর্শক নেই।’ নারায়ণগঞ্জের ফুটবলও আর আগের মতো নেই বলে আক্ষেপ ঝরে তাঁর কণ্ঠে। ভালো গোলকিপার উঠে না আসাও ব্যথিত করে আলীকে।