পেরেজের কথা শুনলে মনে হয় এমবাপ্পে যেন তাদের খেলোয়াড়

পেরেজের কথাবার্তা পছন্দ হচ্ছে না পিএসজির, সেটি জানিয়ে দিলেন লিওনার্দোছবি: সংগৃহীত

ব্যাপারটা একটু বাড়াবাড়িই হয়ে যাচ্ছে। কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ যেভাবে কথা বলছেন তাতে পিএসজির আঁতে ঘা লাগাই স্বাভাবিক। পেরেজ বেশ আগেই পরিষ্কার করেছেন, ফরাসি তারকাকে কেনাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু দলবদলের মৌসুম শেষ হয়েছে। রিয়াল সভাপতি তবু এমনভাবে কথা বলেছেন যেন এমবাপ্পে তাদেরই খেলোয়াড়!

পিএসজি ক্রীড়া পরিচালক লিওনার্দোর কাছে অন্তত এমনই মনে হচ্ছে। এমবাপ্পেকে নিয়ে পেরেজের কথাবার্তায় বেশ বিরক্ত ব্রাজিলের সাবেক এ ফুটবলার। ফরাসি সংবাদমাধ্যম ‘লেকিপ’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লিওনার্দো বলেন, ‘পিএসজি এবং এমবাপ্পের প্রতি অশ্রদ্ধার এটি আরেকটি নমুনা। একই সপ্তাহে রিয়ালের খেলোয়াড় (করিম বেনজেমা), কোচ (কার্লো আনচেলত্তি) ও সভাপতি (ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ) কিলিয়ানোকে নিয়ে এমনভাবে কথা বললেন যেন সে এরই মধ্যে তাদের খেলোয়াড়। আমি আবারও বলছি, এই অসম্মান আমরা সহ্য করব না।’

মেসির ছায়ায় পিএসজিতে থাকতে চাননি এমবাপ্পে
ছবি: রয়টার্স

লিওনার্দো এখানেই থামেননি। রিয়াল সভাপতিকে ধুয়ে দিয়েছেন, ‘ফ্লোরেন্তিনো এ নিয়ে (এমবাপ্পের দলবদল) দুই বছর ধরে লেগে আছেন। দলবদলের মৌসুম শেষ হয়েছে, মৌসুম গড়িয়েছে মাঠে। সবারই ম্যাচ আছে কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ এমন আচরণ করে যেতে পারে না। এটা থামানো হোক! কিলিয়ান পিএসজির খেলোয়াড় এবং ক্লাব খুব ভালোভাবেই বোঝে যে এই সম্পর্ক (এমবাপ্পে-পিএসজি) দীর্ঘস্থায়ী হবে।’

পিএসজি ক্রীড়া পরিচালকের হঠাৎ এমন চটে যাওয়ার কারণ সাম্প্রতিক সময়ে এমবাপ্পেকে নিয়ে পেরেজের করা মন্তব্য। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমকে রিয়াল সভাপতি বলেছেন, ‘এমবাপ্পের বিষয়ে আমরা জানুয়ারিতে জানতে পারব। ১ জানুয়ারির মধ্যে সব সমাধান হবে বলে আশা করি।’ তবে এমন কথা বলার কয়েক ঘণ্টা পরই পেরেজ দাবি করেন, তাঁর কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ‘আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমি যে কথাটা বলতে চেয়েছি তা হলো, তার (এমবাপ্পে) কাছ থেকে এ বিষয়ে (দলবদল) শুনতে আমাদের আগামী বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পিএসজির সঙ্গে আমাদের সব সময়ই ভালো সম্পর্ক ও শ্রদ্ধা রয়েছে।’

এমবাপ্পে কোনোভাবেই ছাড়তে চাননি লিওনার্দো ও খেলাইফি
ফাইল ছবি: রয়টার্স

রিয়ালে যেতে এ মৌসুমেই চেষ্টা চালিয়েছেন এমবাপ্পে। লিওনার্দোও এর আগে স্বীকার করেছেন, ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছা এমবাপ্পের। অবশ্য লিওনার্দোর স্বীকার না করেও উপায় ছিল না। এমবাপ্পের জন্য রিয়াল মাদ্রিদ ১৬ কোটি ইউরোর প্রস্তাব দিয়ে বসেছিল দলবদলের মৌসুম শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে। পিএসজি সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি। রিয়াল মাদ্রিদ প্রস্তাবের অঙ্ক বাড়িয়ে প্রথমে ১৮ কোটি ও পরে ২০ কোটি ইউরো করেছিল। কিন্তু চুক্তির মাত্র এক বছর বাকি আছে, এমন খেলোয়াড়ের জন্য এত বড় অঙ্কেও তুষ্ট হয়নি পিএসজি।

এদিকে ফ্রান্স জাতীয় দলে রিয়াল তারকা করিম বেনজেমার সতীর্থ হিসেবে খেলেন এমবাপ্পে। দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া গড়ে ওঠাই স্বাভাবিক। জাতীয় দল সতীর্থকে নিয়ে কিছুদিন আগে বেনজেমা বলেন, ‘এমবাপ্পে নিজে বলেছে। সে অন্য কিছু চাইছে। একদিন না একদিন সে রিয়াল মাদ্রিদে খেলবেই। আমি জানি না কখন। কিন্তু সে আসবে। এটা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার।’

কিন্তু লিওনার্দোর দাবি, পিএসজি জানে এমবাপ্পের সঙ্গে সম্পর্কটা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। কোথাকার জল আসলে কোথায় গড়াচ্ছে!