ফিফা সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছেটা জানিয়েছিলেন আগেই। পরশু নিজের প্রার্থিতা ঘোষণাও করলেন মিশেল প্লাতিনি। তাতেই যেন বাতাসে বারুদের গন্ধ!
দক্ষিণ কোরিয়ার চুং মুং-জুন যেমন সভাপতি হিসেবে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন কাল। প্লাতিনি পাশেও পাচ্ছেন অনেককে। ইংলিশ ফুটবল ফেডারেশন তাঁর দিকেই এদিন নিজেদের সমর্থন জানিয়ে দিয়েছে প্রকাশ্যে। সমর্থন জানিয়েছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনও (এএফসি)। মনে হচ্ছে, সেপ ব্ল্যাটারের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হতে যাচ্ছেন ফ্রান্সের এই কিংবদন্তি ফুটবলারই!
চুং মুং-জুনের ঘোষণাটা তেমন চমক নয়। হুন্দাই গ্রুপের অন্যতম স্বত্বাধিকারী কদিন আগেই এমন আভাস দিয়েছিলেন। সেপ ব্ল্যাটারের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার এই ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর বৈরিতাও পুরোনো। ২০০২ ফিফার সভাপতি নির্বাচনে ব্ল্যাটারের প্রতিদ্বন্দ্বী ইসা হায়াতুর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন চুং। তখন ব্ল্যাটারকে ‘বাবা-মায়ের মাংসখেকো নরখাদক’ বলতেও ছাড়েননি। ফিফার সাবেক এই সহসভাপতির প্রতিজ্ঞা, নির্বাচিত হলে শুধু চার বছর মেয়াদের জন্যই সভাপতি থাকবেন। চান সংগঠনকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে, ‘এই চার বছরের মধ্যে আশা করি ফিফাকে একটি সত্যিকারের স্বচ্ছ, সৎ, নৈতিক আদর্শদীপ্ত এবং বৈশ্বিক বেসরকারি সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।’
চুংয়ের দাবি, প্লাতিনি সভাপতি হলে ফিফার খোলনলচে বিশেষ কোনো রদবদল হবে না, ‘প্লাতিনি ফুটবলের জন্য ভালো। কিন্তু ফিফা সভাপতি হিসেবে তিনি ভালো করতে পারবেন? আমার তা মনে হয় না। তিনি তো এই ফিফারই ধারা বহন করছেন। প্লাতিনি আসলেই ফিফার নতুন যুগের সূচনা করতে পারবেন, নাকি ব্ল্যাটারের প্রতিভূ হয়ে থাকবেন সে ব্যাপারেও সন্দেহ আছে।’
চুং একা নন, প্লাতিনির বিপক্ষে অনেকেই সরব। গত ২৯ মে হওয়া ফিফার সর্বশেষ নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী জর্ডানের প্রিন্স আলী বিন আল হুসেইন যেমন পরশু বলেছেন, প্লাতিনি সভাপতি হলে ফুটবলের জন্য ভালো কিছু হবে না। লাইবেরিয়া ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি মুসা বিলিতির দাবি, প্লাতিনি-ব্ল্যাটার মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।
এখন পর্যন্ত আফ্রিকা ও ওশেনিয়া ছাড়া অন্য মহাদেশগুলোর সমর্থন প্লাতিনির দিকেই মনে করা হচ্ছে। এএফসি সভাপতি শেখ সালমান বিন আল ইব্রাহিম যেমন কাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আমরা মনে করি ফিফার এই কঠিন সময়ে মিশেল প্লাতিনি স্থিতিশীলতা ও মসৃণ একটা পালাবদল এনে দিতে পারবেন।’ আর ইউরোপ তো অনুমিতভাবেই পক্ষে থাকবে। ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) বিবৃতি দিয়েই জানিয়ে দিয়েছে প্লাতিনির পক্ষে তাদের সমর্থন, ‘তাঁর সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা চমৎকার, আশা করছি সবার সমর্থন পেয়ে তিনি ফিফাকে নিয়ে এর ইতিহাসের কঠিনতম সময়টা কাটিয়ে উঠতে পারবেন।’
বোঝাই যাচ্ছে, ফিফা-নাটকের এখনো অনেক অঙ্ক বাকি! এএফপি, রয়টার্স।