ফুটবলেও বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া

.
.

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ফুটবল ম্যাচ। কেউ কখনো ভাবতে পেরেছেন?
পার্থের মাঠে খেলছেন মামুনুল, এমিলি, জাহিদরা। এও তো কল্পনাকে হার মানানো একটা ব্যাপার।
কিন্তু এটা এখন বাস্তব। সেই সুযোগ করে দিয়েছে পরশু কুয়ালালামপুরে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ড্র। যেখানে জর্ডান, তাজিকিস্তান ও কিরগিজস্তানের সঙ্গে এশিয়ার সেরা ও গত তিনটি বিশ্বকাপে খেলা অস্ট্রেলিয়াও আছে বাংলাদেশের গ্রুপে (‘বি’ গ্রুপ)।
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট অনেকই রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে। তবে ফুটবলে এই প্রথম দুই দলের সাক্ষাৎ। প্রথমটি আগামী ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায়। পার্থে ফিরতি ম্যাচ ১৭ নভেম্বর। বাংলাদেশ দল এর আগেই দুটি হোম ম্যাচ খেলে ফেলবে। ১১ জুন কিরগিজস্তানের সঙ্গে ও ১৬ জুন প্রতিপক্ষ তাজিকিস্তান।
এ অঞ্চলে ভারতের গ্রুপসঙ্গী ইরাক, ওমান, তুর্কমেনিস্তান ও সহজ প্রতিপক্ষ গুয়াম। মালদ্বীপ পেয়েছে ভুটান, হংকং, কাতার ও চীনকে।
বাংলাদেশের গ্রুপটাই সবচেয়ে কঠিন। হল্যান্ড থেকে বাংলাদেশ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফও ফোনে বললেন, ‘টাফ গ্রুপ।’ তবে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলার রোমাঞ্চটা টের পাচ্ছেন তিনিও, ‘ভুলে যাবেন না, বাংলাদেশ অন্তত আটটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে। ধাপে ধাপে ম্যাচ পাবে আরও। বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য এটা অনেক বড় প্রাপ্তি।’
বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন গতকালই কথা বলেছেন ডি ক্রুইফের সঙ্গে। দ্রুত ঢাকায় আসতে বলেছেন তাঁকে। ক্রুইফ জার্মানি যাচ্ছেন বায়ার্ন মিউনিখের একাডেমিতে এক প্রবাসী তরুণকে দেখতে। তাই আসতে কদিন দেরি হবে।
এই ফাঁকেই আয়োজন করা হচ্ছে গোলরক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ। ৫-৬ দিনের মধ্যে আসছেন জার্মান গোলরক্ষক কোচ।
অনেকেই যখন মজা করে বলছেন অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ উড়ে যাবে, সালাউদ্দিন তা মাঠের বাইরেই উড়িয়ে মারছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ ৭-৮ গোলে হারবে! কোনো সমস্যা নেই। এমন ম্যাচ খেলার সুযোগই তো আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার।’
প্রতিযোগিতার মঞ্চে অবশ্য একটা লক্ষ্য থাকেই। বাফুফে সভাপতি সেই লক্ষ্যটাকে বাঁধতে চান বাস্তবতার ভিত্তিতে, ‘২০১৮ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেতে কল্পনাবিলাসী হব না। আমরা বরং ২০১৯ এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলতে চাই।’
ফুটবলারদেরও বিশ্বাস, এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলা ২৪ দলের মধ্যে থাকা সম্ভব। অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের স্বপ্ন, ‘ভালো প্রস্তুতি নিতে পারলে আমরা এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করেও ফেলতে পারি।’
অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলবেন, কেমন লাগছে? এই প্রশ্নটা কাল বারবার শুনেছেন মামুন। অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি জর্ডানের সঙ্গের খেলার অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশের। ২০১০ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে তাজিকিস্তানকে হারানোর সুখস্মৃতি আছে কলম্বোর মাঠে। কিরগিজস্তানের সঙ্গে ওদেরই মাটিতে হার ২-১ গোলে। কাজেই এই দুটি দলকে অন্তত ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মামুনুলের কণ্ঠে বেশ দৃঢ়তা। স্ট্রাইকার ওয়াহেদ বললেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলবে বাংলাদেশ, খুব ভালো লাগছে। দরকার ভালো প্রস্তুতি।’
কিন্তু লিগ চালু থাকায় বাইরে গিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা এখন অসম্ভব। তবে সিরিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যকার একটি দলকে ঢাকায় এনে একটি অনুশীলন ম্যাচ আয়োজন করা করা হতে পারে। অস্ট্রেলিয়া-রোমাঞ্চ বাফুফেকে নাড়িয়ে দিয়েছে।