‘বিশ্বাসঘাতক’ অপবাদ শুনতে হচ্ছে রোনালদোকে

পোর্তোর বিপক্ষে ম্যাচে ভালো খেলতে পারেননি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।ছবি: এএফপি

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো চ্যাম্পিয়নস লিগের বরপুত্র। ইউরোপসেরা ক্লাবের এ প্রতিযোগিতায় বেশির ভাগ রেকর্ডই তাঁর দখলে। জুভেন্টাস ইউরোপসেরা হতে তিন বছর আগে তাঁকে নিয়ে এসেছিল তুরিনে। কিন্তু প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির হিসাব মেলেনি।

প্রথম বছরে কোয়ার্টার ফাইনালে, দ্বিতীয় বছরে শেষ ষোলো এবং এবারও শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছে জুভেন্টাস। আর রোনালদো? ক্লাব ফুটবলে প্রায় সবকিছু জিতে এসে এই ৩৬ বছর বয়সে তাঁর নামের পাশে জুটেছে ‘বিশ্বাসঘাতক’ অপবাদ।

চ্যাম্পিয়নস লিগে কাল রাতে শেষ ষোলো ফিরতি লেগে জিতেও ‘অ্যাওয়ে গোলের’ হিসেবে বাদ পড়েছে ‘তুরিনের বুড়ি’রা। প্রথম লেগে পোর্তোর মাঠে ২-১ গোলে হেরেছিল জুভেন্টাস। ঘরের মাঠে ফিরতি লেগে ৩-২ গোলে জিতলেও জুভেন্টাস টিকতে পারেনি, প্রতিপক্ষের মাঠে গোলের হিসাবে এক গোল বেশি করেছে পোর্তো।

১১৫ মিনিটে সের্জিও অলিভেইরার ফ্রি–কিকে করা গোলটি কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট এনে দেয় পর্তুগিজ ক্লাবটিকে। আর এই গোলেই নাকি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন রোনালদো—দাবি ইতালির সংবাদমাধ্যম ‘কোরিয়ে দেল্লো স্পোর্ত’-এর।

সংবাদমাধ্যমটির আজকের দৈনিকে প্রথম পাতার শিরোনাম, ‘রোনালদোর বিশ্বাসঘাতকতার শিকার।’ বোঝাই যাচ্ছে, এই শিকার বোঝানো হচ্ছে জুভেন্টাসকে।

অলিভিয়েরার ফ্রি–কিকে ‘মানবদেয়াল’-এ দাঁড়িয়েছিলেন রোনালদো। পোর্তো মিডফিল্ডারের শট রোনালদোর ঠেকানো উচিত ছিল বলে মনে করে সংবাদমাধ্যমটি। শুধু এই সংবাদমাধ্যম নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও রোনালদোর লাফ দেওয়ায় বড় ভুল দেখছেন অনেকে।

ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে।
ছবি: টুইটার

চাইলে ম্যাচের হাইলাইটস দেখে মিলিয়ে নিতে পারেন। অলিভেইরার শট নেওয়ার সময় উল্টা দিকে মুখ করে লাফ দিয়েছিলেন রোনালদো। বল তাঁর পায়ের তলা দিয়ে মাটি কামড়ে জুভেন্টাস গোলরক্ষক সেজনিকে ফাঁকি দিয়ে আশ্রয় নেয় জালে।

জুভেন্টাসের সাবেক কোচ ফাবিও কাপেলো খেপেছেন রোনালদোর ওপর। পর্তুগিজ তারকার ভুল কাপেলোর কাছে ‘ক্ষমার অযোগ্য’ ভুল।

স্কাই স্পোর্ট ইতালিয়াকে কাপেলো বলেন, ‘মানবদেয়ালে দাঁড়িয়ে রোনালদো এটা করতে পারে না। মানবদেয়ালে যে-ই দাঁড়াক না কেন, মাথায় রাখতে হবে বলের আঘাত লাগতে পারে এবং ভয় পাওয়া যাবে না। কিন্তু তিনি (রোনালদো) শরীর ঘুরিয়ে নিয়েছে, এটা ক্ষমার অযোগ্য ভুল এবং কোনো অজুহাত চলে না।’

পোর্তোর বিপক্ষে নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন রোনালদো।
ছবি: এএফপি

চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৯৯৬ সালে সর্বশেষ শিরোপা জিতেছিল জুভেন্টাস। এরপর পাঁচবার ফাইনালে উঠেও শিরোপার দেখা পায়নি তারা। এবারসহ টানা দ্বিতীয়বার দলটি বিদায় নিল শেষ ষোলো থেকে। ২০১৫ থেকে ২০১৭—এই তিন মৌসুমের মধ্যে দুবার ফাইনালে উঠেও আরাধ্য শিরোপার দেখা পায়নি তারা। পরের বছরই দলটি শিবিরে ভেড়ায় রোনালদোকে। কিন্তু এরপর থেকে আর ফাইনালের দেখা পায়নি জুভেন্টাস।