‘ভিয়ারিয়াল চ্যাম্পিয়নস লিগের জন্য লজ্জা’

ভিয়ারিয়ালের বক্সে এভাবেই আক্রমণের পর আক্রমণ করেছে লিভারপুলছবি: এএফপি

পরিসংখ্যান বলছে, ম্যাচে মোট ১৯টি শট নিয়েছে লিভারপুল। এর মধ্যে পাঁচটি শট ছিল ভিয়ারিয়ালের গোলপোস্টে। অন্যদিকে ভিয়ারিয়াল গোটা ম্যাচেই নিয়েছে মাত্র একটি শট। সেটি গোলপোস্টেও ছিল না। জেসন কুন্ডি এ তথ্য দেখেই চটেছেন কি না, কে জানে!

তবে ভিয়ারিয়ালকে নিয়ে চেলসির সাবেক খেলোয়াড় এবং বর্তমানে ধারাভাষ্যকার কুন্ডি যেসব মন্তব্য করেছেন তাতে বিতর্কের ঝড় উঠতে পারে।

চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনাল প্রথম লেগে কাল রাতে অ্যানফিল্ডে লিভারপুলের কাছে ২–০ গোলে হেরেছে স্প্যানিশ ক্লাবটি। প্রথমার্ধেই ১২টি শট নেন লিভারপুলের খেলোয়াড়েরা।

২০০৩–০৪ মৌসুম থেকে খেলাধুলার তথ্য–উপাত্ত সংরক্ষণ করা শুরু হওয়ার পর থেকে হিসেবটি করেছে ‘অপটা’—চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে আর কোনো দলই প্রথমার্ধে গোল না পেয়ে লিভারপুলের মতো এত বেশি শট নেয়নি। অর্থাৎ, গোল না পেলেও ভিয়ারিয়ালের রক্ষণ ম্যাচের শুরু থেকেই লিভারপুলের সামনে কেঁপেছে।

লিভারপুলের সঙ্গে ধারে–ভারে কোনোকিছুতেই ভিয়ারিয়ালের তুলনা চলে না। স্প্যানিশ ক্লাবটি নিজেদের ঘরোয়া লিগই কখনো জিততে পারেনি। অন্যদিকে লিভারপুল ইউরোপেরই অন্যতম শক্তিশালী ক্লাব, এই মূহূর্তে অনেকেই সেরা তিন দলের একটি হিসেবে দেখেন ইয়ুর্গেন ক্লপের দলকে। এমন দুই দল মুখোমুখি হলে পরিসংখ্যানের পাল্লা তো লিভারপুলের দিকেই ঝুঁকে পড়া স্বাভাবিক।

কিন্তু টকস্পোর্ট রেডিও শো–তে কুন্ডির কথায় এসব বিষয়ের লেশমাত্র ছিল না, ‘চ্যাম্পিয়নস লিগের জন্য ভিয়ারিয়াল লজ্জা। জঘন্য। লিভারপুলের খেলোয়াড়দের এতটুকু ঘাম ঝরেনি। আমি জানি না, ভিয়ারিয়াল এতদূর এল কীভাবে। একদম যা–তা।’

সহধারাভাষ্যকার জেমি ও’হারাকে কথাগুলো বলেন কুন্ডি। ও’হারা পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার চেষ্টা করে বলেন, ‘একদম যা–তা বলাটা বেশি কর্কশ হয়ে যায়। আজ তারা যেমন খেলল, সেটা বিরক্তিকর।’

তবে জেমি ও’হারাও ভিয়ারিয়ালকে ছেড়ে কথা বলেননি, ‘ফন ডাইকের পাশে চাইলে একজন (লিভারপুল) ভক্তকেও খেলানো যেত। খুবই বাজে খেলেছে (ভিয়ারিয়াল)।’

মোহাম্মদ সালাহকে আটকে রাখতে পারেনি ভিয়ারিয়াল
ছবি: এএফপি

কুন্ডিও ভিয়ারিয়ালের প্রতি মর্যাদাহানিকর মন্তব্য করা থামাননি, ‘লিভারপুলের জন্য (ম্যাচটা) খুব সহজ ছিল। (ম্যাচে) যা দেখলাম তা আসলে মাথায় ঢুকছে না। ভিয়ারিয়ালের খেলা লজ্জাজনক। লিভারপুলকে দ্বিতীয় গিয়ারে খেলতে হয়নি। দেখে মনে হয়েছে তারা গ্রুপপর্বে এমন এক দলের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলছে, যারা ইউরোপা লিগেও খেলার যোগ্য নয়।’

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও আতালান্তার সঙ্গে একই গ্রুপ থেকে শেষ ষোলোয় উঠে আসে ভিয়ারিয়াল। গ্রুপপর্বে ছয় ম্যাচের মধ্যে তিন জয় ও একটি ড্র করে উনাই এমেরির দল।

শেষ ষোলো প্রথম লেগে ঘরের মাঠে জুভেন্টাসের সঙ্গে ১–১ গোলে ড্রয়ের পর ইতালিয়ান ক্লাবটির মাঠে ফিরতি লেগে ৩–০ গোলের দুর্দান্ত জয় পায় ভিয়ারিয়াল। কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ১–০ গোলে হারায় বায়ার্ন মিউনিখকে। ফিরতি লেগে বায়ার্নের মাঠে ১–১ গোলে ড্র করে।

অর্থাৎ, শেষ ষোলো ও শেষ আটে একাধিকবার চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী দুই দলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে ভিয়ারিয়াল। লিভারপুলের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে এমেরির দল প্রত্যাশাপূরণ হয়তো করতে পারেনি, তাই বলে ‘ভিয়ারিয়াল চ্যাম্পিয়নস লিগের জন্য লজ্জা’—এমন কথার প্রতিবাদও কিন্তু থেমে থাকবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।