মেসিকে এখনই সতীর্থ বানিয়ে ফেললেন নেইমাররা

মেসি-পারেদেস ; সামনের মৌসুম থেকে একই জার্সিতে?ছবি : পিএসজি

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আগামী জুন মাস আসা পর্যন্ত লিওনেল মেসির জন্য এমন হাঁকডাক চলবেই।

মেসির বার্সার সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে, আগামী জুনেই বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে—এসব চর্বিত চর্বণ। চুক্তি সই না করলে মেসি যে অন্য কোনো ক্লাবে যোগ দেওয়ার লাইসেন্স পেয়ে যাবেন, সেটাও সবার জানা। আগ্রহী ক্লাব তখন চুক্তিহীন মেসিকে কোনো ধরনের ট্রান্সফার ফি দেওয়া ছাড়াই দলে নিতে পারবে। কিন্তু তাতে কী হয়েছে? মেসিকে দলে আনার জন্য বেতন তো দিতে হবে আকাশছোঁয়া। সে বেতন দেওয়ার সামর্থ্যই–বা আছে কজনের?

যে কয়টা ক্লাব মেসিকে বেতন দিয়ে ‘পোষার’ সামর্থ্য রাখে, তাদের মধ্যে সবার ওপরেই আছে পিএসজির নাম। আর সেটা পিএসজির কর্তাব্যক্তি, কোচ থেকে শুরু করে প্রত্যেক খেলোয়াড়ও জানেন। আর জানেন বলেই প্রতি দুদিন অন্তর একবার করে মেসিকে দলে আসার নেমন্তন্ন দিয়ে যান। এই নেমন্তন্ন দেওয়ার সর্বশেষ পর্বটা মঞ্চস্থ হয়েছে পিএসজির মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেসে।

মেসিরা সেদিন চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের ফিরতি লেগ খেলতে গিয়েছিলেন সেই মাঠে। প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে ৪-১ গোলে হেরে বসা বার্সেলোনা পিএসজির মাঠে গিয়ে অবিশ্বাস্য কিছু করতে পারেনি, ড্র করেছে ১-১ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-২ গোলের জয়ে রেখে পিএসজি উঠেছে পরের রাউন্ডে। ম্যাচ শেষে পিএসজির এক খেলোয়াড় উদ্যোগী হয়ে এমন একটা কথা বলেছেন, যা শুনে মন খারাপ হয়ে যাবে যেকোনো বার্সেলোনা–সমর্থকের। ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়দের টানেলে সেদিন একজন পিএজসির খেলোয়াড়কে বলতে শোনা গেছে, ‘মেসি, প্রতিপক্ষ হিসেবে এটাই আমাদের শেষ ম্যাচ!’

খবরটা ফাঁস করেছেন দেপোর্তেস কুয়াত্রোর সাংবাদিক মার্সেলো বেকলার, বার্সেলোনা-পিএসজিসংক্রান্ত খবর দিতে যাঁর জুড়ি মেলা ভার। নেইমার যখন বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সবার আগে এই বেকলারই খবরটা জানিয়েছিলেন সবাইকে। এমনকি গত মৌসুমের শেষে মেসি যখন ক্লাব ছাড়ার জন্য উতলা হয়ে গিয়েছিলেন, সেই খবরটাও জানিয়েছিলেন এই বেকলার। তাই খবরটা ভুয়া হওয়ার আশঙ্কা সামান্যই। অর্থাৎ মেসিকে সতীর্থ হিসেবে পাওয়ার জন্য এর মধ্যে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন পিএসজির খেলোয়াড়েরা, বিশেষ করে সেই খেলোয়াড়, যাঁর মুখ থেকে এ কথা বের হয়েছে।

এখন কে এ কথা বলেছেন, বেকলার সেটা জানাতে রাজি হননি। জানায়নি বেকলারের পত্রিকা দেপোর্তেস কুয়াত্রোও। তবে বেকলার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যতই বার্সেলোনায় মেসির পছন্দের সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা আসুক না কেন, লাপোর্তা মেসির সামনে যে ক্রীড়া–পরিকল্পনা উপস্থাপন করবেন, তার চেয়ে পিএসজির পরিকল্পনা অনেক বেশি চমকপ্রদ বলে মনে হবে মেসির কাছে। আর বার্সায় যে মেসির না থাকতে চাওয়া, সেটা তো এই সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা না থাকার কারণেই!

এর আগে জাতীয় দলে মেসির সতীর্থ লিয়ান্দ্রো পারেদেস সরাসরি দলের অধিনায়ককে পিএসজিতে আসার আহ্বান জানিয়ে রেখেছিলেন। জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলেন, ক্লাবেও যদি প্রতিদিন মেসির সঙ্গে খেলার সুযোগ পাওয়া যায়, অবশ্যই মন্দ হয় না!

সতীর্থ হবেন মেসি-এমবাপ্পে?
ছবি : পিএসজি

পারেদেস সম্ভবত সে আশাতে বলীয়ান হয়েই কিছুদিন আগে ইএসপিএনকে বলেছিলেন, ‘পিএসজিতে মেসি? আমরা সবাই চাই সে আসুক। কিন্তু সিদ্ধান্তটা তাকে নিতে হবে। আমাদের স্কোয়াডটা অবিশ্বাস্য। মানুষগুলোও ভালো। আমরা এসবের সুবিধা পেয়ে থাকি। আগেও বলেছি, আমার আশা লিও নিজের বিষয়ে সেরা সিদ্ধান্তই নেবে। তবে আমরা তাকে দুই হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানাব।’

এখন পার্ক দে প্রিন্সেস ম্যাচ শেষ হওয়ার পর পারেদেসই ওই কথা খেলোয়াড়দের টানেলে বলেছিলেন কি না, কে জানে!