মেসির ভুল ধরিয়ে দেওয়ার সাহস পাননি সেতিয়েন

বার্সেলোনায় মেসির অবস্থান অনেক উঁচুতে।ছবি: রয়টার্স

ডিয়েগো ম্যারাডোনা ২০০৮ সালে আর্জেন্টিনার দায়িত্ব নেওয়ার পর একটা কথা অনেকেই বলেছিলেন—লিওনেল মেসির সঙ্গে বনবে না! কেন, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তাঁরা—দুজনেরই তারকাখ্যাতি আছে। দ্যুতিতে কে কাকে ছাড়িয়ে, এটা নিয়েই দ্বন্দ্ব শুরু হবে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা হয়নি, ২০১০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত মেসিদের কোচ ছিলেন ম্যারাডোনা। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে আর্জেন্টিনা বাদ পড়ার পর এমনিতেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।

মেসির সঙ্গে ঝামেলা বাধেনি বার্সেলোনার সাবেক কোচ পেপ গার্দিওলার সঙ্গেও। লুইস এনরিকের সঙ্গে মেসির সম্পর্ক নিয়ে কানাঘুষা ছিল, বর্তমান স্পেন কোচের সঙ্গে মেসির প্রথম দিকে বনত না। আর্নেস্তো ভালভার্দের সঙ্গে মেসির সম্পর্কটা উষ্ণ ছিল বলেই ধারণা করেন সবাই। ভালভার্দে ও মেসি অবশ্য এ বিষয়ে কখনো কিছু বলেননি। তবে মেসির সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ছিল, তা নিয়ে মুখ খুলেছেন বার্সেলোনা থেকে সর্বশেষ বরখাস্ত হওয়া কোচ কিকে সেতিয়েন।

মেসিকে কোচিং করানো কঠিন বলে মনে করেন সেতিয়েন।
ছবি: রয়টার্স

ভালভার্দে বরখাস্ত হওয়ার পর এ বছরের জানুয়ারিতে বার্সার দায়িত্ব নিয়েছিলেন সেতিয়েন। কিন্তু দলকে আশানুরূপ ফল এনে দিতে ব্যর্থ হন। চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে বার্সেলোনা ৮-২ গোলে হেরে যাওয়ার পর আর ন্যু ক্যাম্পে টিকতে পারেননি সেতিয়েন। তাঁকে বরখাস্ত করে বার্সার বোর্ড। কিন্তু সেতিয়েন মনে করেন, ওই হারের আগেই আসলে তাঁর নিয়তি নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। সেতিয়েনের কথা, ‘আমার যতটুকু দায়, সেটা আমি স্বীকার করছি। একদিন এসব নিয়ে আমি লিখব। তবে বরখাস্ত হওয়ার পর আমি বুঝতে পেরেছি সিদ্ধান্তটা ৮-২ গোলের সেই হারের আগেই নেওয়া হয়েছে। আমি সবকিছু শুনেছি।’

কী শুনেছেন, সেটা বলেননি সেতিয়েন। তবে বার্সেলোনা থেকে তাঁর বরখাস্ত হওয়ার প্রসঙ্গ ধরে উঠে আসে মেসির সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়। এ নিয়ে সেতিয়েন একটু কূটনৈতিক চালেই কথা বলেছেন। সম্পর্ক কেমন ছিল তা বলেননি, তবে মেসির মতো একজন তারকাকে কোচিং করানো কঠিন বলে মনে করেন তিনি। একই সঙ্গে বলেছেন বার্সেলোনায় মেসির অবস্থান এত উঁচুতে যে তাঁর ভুল ধরিয়ে দেওয়ায়ও বাধো বাধো লাগত সেতিয়েনের।

বার্সেলোনায় কোচ হিসেবে এক বছরও টিকতে পারেননি সেতিয়েন।
ফাইল ছবি: রয়টার্স

সেতিয়েন বলেছেন, ‘আমি মনে করি, সে সর্বকালের সেরা ফুটবলার। আরও অনেক সেরা ফুটবলারই ছিল। কিন্তু এই ছেলেটা যত ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে যাচ্ছে, অন্যরা তা পারেনি।’ এরপরই যেন আসল কথাটা বলেছেন সেতিয়েন, ‘লিওকে কোচিং করানো কঠিন। আমি তাকে কীভাবে বদলাব! তারা (বার্সা) এত বছর ধরে তাকে এভাবেই মেনে নিয়েছে। তারা কিছুই বদলায়নি।’

অনেকেই বলেন মেসি একটু মুখচোরা ধরনের মানুষ। কথা কম বলেন, কাজকে বেশি প্রাধান্য দেন। সেতিয়েনও একই কথা বলেছেন, ‘সে একটু নিরিবিলি আর আলাদা থাকতে পছন্দ করে। তবে সে নিজের দিক থেকে একটা জিনিস দেখছে, সেটা অন্যকে দেখতে বাধ্য করে। সে খুব বেশি কথা বলে না।’