মেসির মন খারাপ হতে দিলেন না নেইমার-ইকার্দি

হাসি নিয়েই মাঠ ছেড়েছেন নেইমাররাছবি : রয়টার্স

কী একটা রুদ্ধশ্বাস ম্যাচই না দেখল প্যারিসের দর্শকেরা!

নাহ, নতুন আসা তারকা লিওনেল মেসির তাতে তেমন কোনো ভূমিকা ছিল না; বরং পাদপ্রদীপের আলো কেড়ে নিয়েছেন আগে থেকেই পিএসজিতে থাকা দুই তারা নেইমার ও মাউরো ইকার্দি। এই দুজনের গোলেই হারের মুখ থেকে উঠে এসে জয় কেড়ে নিয়েছে পিএসজি। ঘরের মাঠে অলিম্পিক লিওঁকে হারিয়েছে ২-১ গোলে।

একেবারেই কি মেসির ভূমিকা ছিল না? সেটা বলাটা ভুল হবে হয়তো। ফ্রি-কিক পোস্টে লাগিয়েছেন, লিওঁর পর্তুগিজ গোলকিপার অ্যান্থনি লোপেসকে বাধ্য করেছেন দুর্দান্ত এক সেভ করতে। তাও পিএসজির হয়ে প্রথম গোলটা পাওয়া হয়নি মেসির। তাই বলে যে ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে হেরে মুখ কালো করে ফিরেছেন, সেটাও নয়।

মেসির মন খারাপ হতে দেননি নেইমার ও মাউরো ইকার্দি। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার লুকাস পাকেতার গোলে লিওঁ প্রথমে এগিয়ে গেলেও এ দুজনের গোলেই শেষমেশ রুদ্ধশ্বাস এক জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে পিএসজি।

আজও পিএসজির হয়ে গোল পাননি মেসি
ছবি : রয়টার্স

মেসি পুরো ৯০ মিনিটও খেলেননি। ৭৬ মিনিটে মেসির জায়গায় মাঠে নামানো হয় রাইটব্যাক আশরাফ হাকিমিকে। মাঠ থেকে ওঠার সময় মেসির মন যে খুব ভালো ছিল, বলা যাবে না। আর যাবেই–বা কী করে? ম্যাচ যে তখন ছিল ১-১ গোলের সমতায়।

৪-২-৩-১ ছকে বেশ শক্তিশালী দল নিয়েই মাঠে নামে পিএসজি। একাদশে মেসি, নেইমার, এমবাপ্পে সবাই ছিলেন। চ্যাম্পিয়নস লিগে ক্লাব ব্রুগার বিপক্ষে রাইট উইংয়ে খেললেও আজ মেসি ছিলেন কেন্দ্রীয় আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডারের ভূমিকায়। কিন্তু তাও লিওঁ সমানে সমান টক্কর দিয়ে যাচ্ছিল। ৫৪ মিনিটে ক্যামেরুনের ফরোয়ার্ড কার্ল-তোরো একাম্বির সহায়তায় গোল করে লিওঁকে এগিয়ে দেন ফর্মে থাকা ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার লুকাস পাকেতা।

মাঠ থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তটা পছন্দ হয়নি মেসির
ছবি : রয়টার্স

৬৫ মিনিটে চোটের কারণে মাঠ থেকে উঠে যান একাম্বি। ম্যাচের ভাগ্যও যেন হেলে পড়ে পিএসজির দিকে। ডি-বক্সে লিওঁর ডিফেন্ডার মালো গুস্তোর সঙ্গে নেইমারের সংঘর্ষের কারণে পেনাল্টি পায় পিএসজি। তবে পেনাল্টিটা ন্যায্য কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ আছে বেশ।

তাতে নেইমারের কী? তিনি তাঁর কাজ করেছেন ঠিকমতো। পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে এনেছেন সমতা। বসে থাকেননি এমবাপ্পেও। হ্যাঁ, গোল করতে পারেননি ঠিকই, তবে গোলে সহায়তা করতে ভোলেননি। ম্যাচের একদম শেষ দিকে তাঁর ক্রসে মাথা ছুঁইয়েই পিএসজিকে মনে রাখার মতো এক জয় এনে দেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার মাউরো ইকার্দি।

ইকার্দির গোলের পর নেইমারদের উল্লাস
ছবি : রয়টার্স

পেনাল্টির সিদ্ধান্তটা যে মেনে নিতে পারছেন না, সেটা বোঝা গেছে লিওঁ সভাপতি জ্যাঁ-মিশেল অলাসের কথায়, ‘আমরা আমাদের খেলোয়াড়দের নিয়ে গর্বিত। হার তাদের প্রাপ্য ছিল না। আমরা এই পিএসজি দলটাকে আটকে রাখতে পেরেছি। পেনাল্টির সিদ্ধান্তটা হঠকারী ছিল। ভিএআরের সাহায্য নেওয়া উচিত ছিল। এমন সিদ্ধান্ত আমরা আশা করিনি।’

ছয় ম্যাচের প্রতিটিতে জিতে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগের শীর্ষে আছে পিএসজি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অলিম্পিক মার্শেইয়ের পয়েন্ট তাদের চেয়ে ৫ কম।