মোহামেডানকে হারিয়ে দিল সেনাবাহিনী

মোহামেডানকে হারিয়ে দিয়েছে সেনাবাহিনীছবি: বাফুফে

আগের ম্যাচে সাইফ স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে দুর্দান্ত লড়াই করে হেরেছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আজ তো অঘটনই ঘটিয়ে দিয়েছে তারা। কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেডকে।

পেশাদার মোহামেডান ক্লাবকে সার্ভিসেস দল হারিয়েছে বলে খাতা–কলমে অঘটন লিখতে হচ্ছে। বাস্তবতা হলো গতি ও দমের সঙ্গে বলের ওপর দক্ষতাতেও এগিয়ে ছিলেন সেনাবাহিনীর খেলোয়াড়েরা। দলগতভাবে সেনাবাহিনী খেলেছেও ভয়ডরহীন ফুটবল।

আবাহনীর দুই গোলদাতা রঞ্জু (৯ নম্বর জার্সি) ও ইমন
ছবি: বাফুফে

সেনাবাহিনী দলের একমাত্র পরিচিত মুখ জাতীয় দল ও বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্ডার মেহেদি হাসান। তাঁর নেতৃত্বে রক্ষণভাগটাই দলটির মূল শক্তির জায়গা। রক্ষণভাগ অটুট আছে, এই বিশ্বাস থাকলে মাঠে বিচরণ করার অবাধ স্বাধীনতা থাকে। আগের মতো আর শিরোপার লড়াইয়ে নামার দল না থাকুক, মোহামেডানের ঐতিহ্য তো আছে। এমন দলের বিপক্ষেও কখনো রক্ষণাত্মক কৌশলে যায়নি সেনাবাহিনী। পুরো ম্যাচ একই ছন্দে খেলেছে দলটি।

অন্যদিকে মোহামেডানকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে তাদের রক্ষণভাগ। দুই সেন্টারব্যাক হিসেবে নেওয়া হয়েছে নর্থ মেসিডোনিয়ার ইয়াসমিন মেসিনোভিচ ও অস্ট্রেলিয়ার অ্যারন রিয়ারডনকে। মেসিনোভিচ আজ ঢাকায় এসে পৌঁছালেও তাঁকে খেলানো হয়নি। ওদিকে রিয়ারডন এখনো ঢাকা এসেই পৌঁছাননি।

রঞ্জুকে নিয়ে সেনাবাহিনীর উল্লাস
ছবি: বাফুফে

তাঁদের অনুপস্থিতিতে মিডফিল্ডার ইভান খান ও রাইটব্যাক রাজিব হোসেনকে রক্ষণের মাঝখানে খেলানো হয়েছে। সেনাবাহিনীর গতিময় ফরোয়ার্ডদের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেননি তাঁরা। বিশেষ করে সেনাবাহিনীর রঞ্জু সরকার ও শাহরিয়ার ইমন খেলেছেন দুর্দান্ত।

১৮ মিনিটে রঞ্জুর গোলেই সেনাবাহিনীর এগিয়ে যাওয়া। ইমতিয়াজ রহিমের ক্রস থেকে ডান পায়ের সাইড ভলিতে গোলটি করেছেন তিনি। জাতীয় দলের ফুটবলারদের পায়েও এমন গোল দেখা যায় না। প্রথমার্ধে কখনো সমতায় ফেরার মতো খেলতে পারেনি মোহামেডান।

শেষ ম্যাচে অঠিন পরীক্ষা দেবে মোহামেডান
ছবি: বাফুফে

দ্বিতীয়ার্ধে গোল পরিশোধের জন্য স্ট্রাইকার সাইফ শামসুদকে নামানো হয়, ৪-৩-৩ ফরমেশন ভেঙে ৪-৪-২ করা হয়। শামসুদের একটি শট কেবল ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে গেছে। উল্টো ৬৯ মিনিটে ২-০ করেছেন ইমন। মোহামেডানের ইভানের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে বক্সে ঢুকে কাছের পোস্ট দিয়ে জোরালো শটে জালে জড়িয়ে দিয়েছেন এই উইঙ্গার।

ম্যাচে আজ যোগ করা সময় দেওয়া হয় সাত মিনিট। সেই সময়েই ব্যবধান কমিয়েছেন বদলি মিনহাজুল আবেদিন। গোলকিপার গ্রিপে নিতে ব্যর্থ হওয়ার সুযোগটি নিয়েছেন মিনহাজুল। কিন্তু ম্যাচ ড্র করতে পারেনি মোহামেডান।

মোহামেডানের এই হারে গ্রুপ ‘সি’তে চার দলের সামনেই খোলা থাকল কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সুযোগ। ২ ম্যাচে মোহামেডানের পয়েন্ট ৩। সমানসংখ্যক ম্যাচে সেনাবাহিনীরও ৩। ৬ ডিসেম্বর গ্রুপের শেষ ম্যাচে মোহামেডানের প্রতিপক্ষ সাইফ আর সেনাবাহিনী খেলবে মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে। সাইফের পয়েন্ট ৬ আর মুক্তিযোদ্ধার ০।