রহমতগঞ্জের হলোটা কী?

একটা দলের জেতার ইচ্ছা না থাকলে কে জেতাবে! রহমতগঞ্জের বেলায় কথাটা খেটে যাচ্ছে ষোলো আনা। মাঠে নামছে একেকটি ম্যাচে। কিন্তু জেতার অদম্য আগ্রহটা ফুটে ওঠে না শরীরী ভাষায়। নতজানু এক অবস্থা!

প্রথম ১০ ম্যাচ শেষে সবাইকে চমকে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ছিল দলটি। বলাবলি হচ্ছিল, রহমতগঞ্জ না এবার লেস্টার সিটি হয়ে যায়! সেই রহমতগঞ্জই সর্বশেষ সাত ম্যাচের পাঁচটিতেই হেরেছে, জিতেছে মাত্র একটিতে। সর্বশেষ হার কাল চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে। সেটিও রহমতগঞ্জসুলভ লড়াইয়ে নয়, ২-০।

রহমতগঞ্জের এই বদলে যাওয়া নিয়ে অনেক কানাঘুষা ফুটবল মহলে। ফিরতি পর্বের প্রথম দুটি ম্যাচের পর এলাকার লোকজনও কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করেছেন, ‘কী করছেন টিম লইয়া? হইছেটা কী?’

সেই প্রশ্নের উত্তর একেকজন একেকভাবে দেন। নিষিদ্ধ থাকায় ম্যাচের পর কথা কাল বলতে পারেননি কোচ কামাল বাবু। ক্লাবের সহসভাপতি জামাল উদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বললেন, ‘আমরাও বুঝতে পারছি না হলোটা কী?’ যোগ করেন, ‌‘দলে তিনজন প্লেয়ারের অপারেশন হয়েছে। রাশেদ, শাহেদ ও তূর্য। আরও কিছু খেলোয়াড়ের চোট সমস্যা আছে। এসব কারণেই আমরা সেরাটা খেলতে পারছি না।’ তারপরও রহমতগঞ্জের জয়ের খিদেটা যে মরে গেছে, এ নিয়ে কোনো সংশয়ই নেই।

হারতে বসেও আক্রমণে খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ সেভাবে থাকছে না। রক্ষণ সামলে প্রতি আক্রমণে যাওয়াই রহমতগঞ্জের খেলার ধরন। তবু একটা ঘাটতি রয়েই গেছে। খোদ চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ জুলফিকার মাহমুদ মিন্টুও এই রহমতগঞ্জকে দেখে অবাক, ‘ধারণা করেছিলাম ওরা ৪-৩-৩ ছকে খেলবে। যদিও গত ম্যাচে ওরা খেলেছে ৫-৩-২ বা ৩-৫-২ ছকে। আজও ওদের একই ফর্মেশন দেখে একটু অবাকই হয়েছি। পরে আমরা নিজেদের পরিকল্পনা বদলে ফেলি।’

সেই পরিকল্পনায় সফল চট্টগ্রাম আবাহনী। ভুটানিজ ফরোয়ার্ড চেনচো মানিয়ে নিচ্ছেন দলের সঙ্গে। ২২ মিনিটে দুজনের মাঝখান দিয়ে জলকাটা জাহাজের মতো বেরিয়ে কোনাকুনি দারুণ গড়ানো শটে প্রথম গোলটাও এনে দিয়েছেন চেনচো। আরেকবার একইভাবে ঢুকেও গোল পাননি। তবে মাঠে তাঁর চলাফেরা বলে দিচ্ছিল, সতীর্থদের সঙ্গে বোঝাপড়াটা তৈরি হয়েছে। মামুনুল বা জাহিদ কীভাবে বল দেন সেটাও বুঝে ফেলেছেন।

 মামুনুল একটু হলেও ছন্দে ফিরেছেন। কাল ৭০ মিনিটে দলের দ্বিতীয় গোলটি তাঁর। বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শট পুরোনো মামুনুলের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছিল কিছুক্ষণের জন্য।

চেনচো-মামুনুলের গোলে শিরোপা দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে আছে চট্টগ্রাম আবাহনী। ১৬ ম্যাচে ঢাকা আবাহনীর পয়েন্ট ৩৬, চট্টগ্রাম আবাহনীর ১৭ ম্যাচে ৩৪। ব্যবধান মাত্র ২ পয়েন্টের। আর তাই চট্টগ্রাম আবাহনীর হার দেখতে এসে কাল গোমড়ামুখেই হোটেলে ফিরে গেছেন বড় আবাহনীর কোচ জর্জ কোটান!