রাশিয়ান মালিক চেলসির সবার চাপ বাড়াচ্ছেন

রাশিয়ান মালিক চেলসির কোচ টুখেল ও খেলোয়াড়দের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছেনছবি: রয়টার্স

হামলা চালিয়েছে রাশিয়া, নিজেদের সীমিত শক্তি নিয়েই জবাব দিচ্ছে ইউক্রেন। অসম এ লড়াইয়ে প্রাণ বাঁচাতে কেউ বোমা-শেল্টারে আশ্রয় নিচ্ছেন, কেউ দেশ ছাড়ছেন। ক্রীড়াঙ্গনেও এর ছাপ পড়ছে। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের ভেন্যু মস্কো থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্লে-অফের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে পোল্যান্ড। এদিকে ইংলিশ ক্লাব হয়েও ঘৃণার পাত্র হয়ে উঠছে চেলসি।

চেলসির মালিক রোমান আব্রামোভিচ। জনশ্রুতি আছে, রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বেশ ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি আব্রামোভিচ। পুতিনের এত বছর ধরে ক্ষমতায় টিকে থাকা ও তাঁর হাত শক্তিশালী করার পেছনে অবদান এই ধনকুবেরের। সে সুবাদে কাল হাউস অব কমন্সে চেলসির মালিকানা আব্রামোভিচের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চেলসি খেলোয়াড়, কোচরা যে মানসিকভাবে অনেক চাপে আছেন, সেটা স্বীকার করে নিয়েছেন কোচ টমাস টুখেল।

মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনাই ভাবাচ্ছে চেলসিকে
ছবি: রয়টার্স

আগামীকাল লিভারপুলের বিপক্ষে কারাবাও কাপের (লিগ কাপ) ফাইনাল খেলবে চেলসি। আজ ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে টুখেলকে ফুটবল নয়, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়েই কথা বলতে হয়েছে। আব্রামোভিচের কারণে চেলসির প্রতি মানুষের ক্রোধ টের পাচ্ছেন টুখেল। এবং স্বীকার করে নিয়েছেন বর্তমান পরিস্থিতিতে এটাই স্বাভাবিক, ‘ক্লাবের প্রতি, যারা এ ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করি, তাদের সমালোচনা করার ব্যাপারটা আমি কিছুটা হলেও বুঝতে পারি। আমি এটা বুঝছি এবং নিজেদের এ থেকে পুরোপুরি আলাদা করতে পারছি না।’

বর্তমান পরিস্থিতি খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের মানসিক অবস্থার ওপরও প্রভাব ফেলছে। অনেক ফুটবলারই প্রকাশ্যে রাশিয়ার নিন্দা করছেন। রাশিয়ান দুই ফুটবলারও যুদ্ধের বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন। এই অবস্থায় রাশিয়ান অর্থে বলীয়ান এক ক্লাবের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠছে। ঘৃণার বিষবাষ্প খেলোয়াড়দের মনেও ছাপ ফেলতে শুরু করেছে, ‘এটা কোনো ব্যাপার না, এমন ভাব দেখানো উচিত না আমাদের। আমার জন্য, আমার স্টাফদের জন্য, এখানকার খেলোয়াড়দের জন্য পরিস্থিতিটা ভয়ংকর।’

পুতিনের ঘনিষ্ঠ মানুষদের একজন আব্রামোভিচ
ছবি: সংগৃহীত

ভবিষ্যতে কী হবে সেটা বলা যাচ্ছে না, কিন্তু বর্তমানে যুক্তরাজ্য বা ইউরোপের বাকি দেশগুলো যুদ্ধের সরাসরি ভুক্তভোগী নয়। কিন্তু যুদ্ধের মতো এত বড় কিছু চাইলেও যে অস্বীকার করা যায় না, ‘ঘটনাটা অনেক বড় এবং বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এটা ইউরোপের চিন্তার ব্যাপার, এটা ইউরোপে হচ্ছে এবং আমরা ইউরোপের অংশ। অনেক দিন ধরেই ইউরোপে যুদ্ধ হচ্ছে, এটা অচিন্তনীয় ছিল আমার জন্য। এর প্রভাব পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে এবং এ নিয়ে আলোচনারও একটা প্রভাব আছে।’

মালিকানার সুবাদে ঘৃণার পাত্র হবেন, সেটা মেনে নিয়েছেন টুখেল। আপাতত শুধু যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগীদের জন্য শুভকামনাই জানাতে পারছেন চেলসি কোচ, ‘যাঁরা এই মুহূর্তে এ ঘটনায় বেশি জড়িত, তাঁরা অনেক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের জন্য আমাদের শুভকামনা, এখন এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’