অবধারিতভাবে ম্যাচে ফেবারিট ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ৯০ মিনিট শেষে কথাটা প্রমাণিত হয়েছে শুধু। সৌদি আরবের রিয়াদের কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে করিম বেনজেমা আর লুকা মদরিচের দুই গোলে অ্যাথলেটিক বিলবাওকে ২-০ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। আর তাতেই বার্নাব্যুর পথে মদরিচ-বেনজেমাদের সঙ্গী হয়েছে স্প্যানিশ সুপার কাপের ট্রফি। এ নিয়ে ১২ বার সুপার কাপের শিরোপা গেল রিয়ালের ঘরে।
দলের দুই পুরোনো যোদ্ধা লুকা মদরিচ আর মার্সেলোর জন্য এই শিরোপা জয় আরও বিশেষ হয়ে উঠেছে দুটি কারণে।
মদরিচের বয়স হয়েছে এখন। ক্লাব তাঁর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে চায় না এ কারণেই। কয়েক মৌসুম ধরেই এক বছর এক বছর করে মদরিচের চুক্তি বাড়াচ্ছে রিয়াল। ইঙ্গিতটা স্পষ্ট, দলের খেলায় মদরিচ ভূমিকা রাখতে পারলে চুক্তি বাড়ানো হবে, নাহয় বিদায় করে দেওয়া হবে। এখনো রিয়াল মাঝমাঠের অন্যতম প্রধান অংশ এই মদরিচ। কিন্তু এই দায়িত্ব যে বেশি দিন পালন করা হবে না, সেটা মদরিচও বোঝেন। তাও এই বয়সে এসেও নিজের সাধ্যমতো দলের জয়ে ভূমিকা রেখে চলেছেন।
গত রাতেই যেমন, দলের দুই গোলের একটি করেছেন মদরিচ। গোল করে রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার রেকর্ড গড়েছেন। ৩৬ বছর ১২৯ দিন বয়সে গোল পেয়েছেন তিনি, রিয়ালের হয়ে এর চেয়ে বেশি বয়সে গোল করার রেকর্ড আর নেই কারও। রেকর্ডটা আগে ছিল স্প্যানিশ উইঙ্গার আমানসিও আমারোর। ১৯৭৬ সালে আমানসিও যখন রিয়ালের হয়ে নিজের শেষ গোলটা করেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৪ বছর ৫ মাস। শুধু গোল করেই ক্ষান্ত হননি মদরিচ, ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও বাগিয়ে নিয়েছেন।
এই বয়সে এসেও মদরিচের জয়ক্ষুধা প্রশংসার দাবি রাখে। ম্যাচ শেষেও সেটাই ফুটে উঠল তাঁর কথায়, ‘আমি কখনোই জিততে জিততে ক্লান্ত হই না। এই ল্যাব আমাকে শিখিয়েছে, জেতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই ক্লাবের সঙ্গে প্রতিটি জয় আমার জন্য অনেক বড়।’ তবে এই শিরোপা জিতেই যে দায়িত্ব শেষ হয়ে গিয়েছে, এমনটা মনে করছেন না মদরিচ, ‘শিরোপা জিতে আমরা অনেক খুশি। তবে আমরা এখনো কিছুই করিনি। মৌসুমের মাঝপথে আছি আমরা, এই গতিটা বজায় রাখতে হবে। আশা করব মৌসুমের শেষে আরও অনেক শিরোপা জেতার।’
সুপার কাপের এই শিরোপা বাড়তি আনন্দ দিয়েছে দলের আরেক পুরোনো যোদ্ধা, দলের বর্তমান অধিনায়ক মার্সেলোকেও। মদরিচ তাও যেখানে মোটামুটি নিয়মিত মূল একাদশের হয়ে খেলার সুযোগ পান, কাগজে-কলমে দলের অধিনায়ক হলেও সে সুযোগটা পান না মার্সেলো। বয়স হয়েছে, মূল একাদশে নিজের জায়গা হারিয়েছেন ফরাসি লেফটব্যাক ফারলাঁ মেন্দির কাছে।
গত রাতেও বেঞ্চেই ছিলেন, ৮৬ মিনিটে স্বদেশি ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের জায়গায় মাঠে নেমেছিলেন, ততক্ষণে রিয়ালের জয় নিশ্চিত হয়ে গেছে। নিশ্চিত হয়ে গেছে, রিয়ালের হয়ে সবচেয়ে বেশি শিরোপা জেতার তালিকায় কিংবদন্তি উইঙ্গার পাকো হেন্তোর পাশে বসেছেন রিয়ালের বর্তমান অধিনায়ক।
একই সঙ্গে রিয়ালের হয়ে ট্রফি জয়ের দৌড়ে ছাড়িয়ে গেছেন ২২টি শিরোপা জেতা সাবেক অধিনায়ক সের্হিও রামোসকে। ২০টি শিরোপা জিতে হেন্তো, মার্সেলো আর রামোসের পেছনেই আছেন করিম বেনজেমা, যাঁর পা থেকে এসেছে দলের প্রথম গোলটি।