রোমাঞ্চ ছড়ানো শেষ ম্যাচের মঞ্চে চ্যাম্পিয়ন আতলেতিকো

লিগ শিরোপা জয়ের আনন্দ উদযাপন আতলেতিকোর খেলোয়াড়দের।ছবি: রয়টার্স

শেষ রাউন্ডের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলো একই সময়ে শুরু হওয়ায় প্রস্তুত ছিল নাটকের মঞ্চ। নাটকই হলো, তবে প্রথমার্ধে এমন চিত্রনাট্য কার কল্পনায় ছিল! আতলেতিকো মাদ্রিদ জিতলে কোনো হিসেবের প্রয়োজন নেই, সোজা কথায় চ্যাম্পিয়ন। অথচ ডিয়েগো সিমিওনের দল ১৮ মিনিটে নিজেদের জাল থেকে বল কুড়োল!

রিয়াল ভায়োদোলিদের মাঠে আতলেতিকোর গোল হজমের খবর শুনে ডি স্টেফানো স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে সের্হিও রামোসের মুখটা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মাদ্রিদের প্রতিবেশীরা জিততে ব্যর্থ হলে রিয়ালকে যে শুধু নিজেদের ম্যাচটা জিতলেই চলবে, শিরোপা থেকে যাবে ঘরে। কিন্তু ২ মিনিটে পরই রামোসের মুখ শুকনো। ঘরের মাঠে জিততেই হবে এমন ম্যাচের ২০ মিনিটে গোল হজম করেছে রিয়ালও। লা লিগা কেউ জিততে চায় না!

শেষ ম্যাচটা জিতেও লাভ হয়নি রিয়াল মাদ্রিদের।
ছবি: রয়টার্স

জেতার তাড়নাটা বোঝা গেল বিরতির পর। ভায়োদোলিদের মাঠে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে জিতে সব সমীকরণ জলের মতো পরিষ্কার করে আতলেতিকোই। রিয়ালকে পয়েন্ট টেবিলে পেছনে ফেলে ২০১৪ সালের পর প্রথম লিগ শিরোপার দেখা পেল আতলেতিকো।

৩৮ ম্যাচে ৮৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকে মৌসুম শেষ করল সিমিওনের দল। সমান ম্যাচে ৮৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে থেকে প্রতিবেশীদের হাতে শিরোপা তুলে দিল জিনেদিন জিদানের দল। আতলেতিকো জেতায় ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদের ২-১ গোলের জয়েও লাভ হয়নি।

ওদিকে লুইস সুয়ারেজকে বেচে কপাল চাপড়াতে পারে বার্সেলোনা। আতলেতিকোয় নিজের প্রথম মৌসুমেই দলের শিরোপাজয়ে শেষ ম্যাচে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোলটি এসেছে উরুগুয়ে তারকার পা থেকে।

৬৭ মিনিটে ভায়োদোলিদ ডিফেন্ডারের ভুলের সুযোগ নিয়ে গোলটি করেন সুয়ারেজ। ম্যাচ শুরুর প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যেই গোল পেতে পারতেন। দুই অর্ধেই দারুণ খেলে প্রাপ্য গোলটি আদায় করে নেন সুয়ারেজ।

আতলেতিকোকে জয়সূচক গোল এনে দেওয়ার আনন্দ উদযাপন লুইস সুয়ারেজের।
ছবি: রয়টার্স

আতলেতিকোর এগিয়ে যাওয়ার সময় ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ১-০ গোলে পিছিয়ে হার দেখছিল রিয়াল। শেষ পর্যন্ত নিজেদের কাজটা সেরে রিয়ালকে মাঠ ছাড়ার সম্মানটুকু এনে দেন লুকা মদরিচ ও করিম বেনজেমা।

৫ মিনিটের ব্যবধানে রিয়ালকে দুটি গোলে এনে দেন দুজন। ৮৭ মিনিটে বেনজেমার গোলের পর যোগ করা সময়ে ৯২ মিনিটে রিয়াল জয়সূচক গোলটি পায় মদরিচের কাছ থেকে।

তার আগে প্রথমার্ধে দুই দলকেই হার চোখ রাঙিয়েছে। অবশ্য দুই দল হারলেও শিরোপা হাতবদল হতো। শ্রেয়তর পয়েন্ট ব্যবধানে (২ পয়েন্ট) চ্যাম্পিয়ন হতো আতলেতিকোই।রিয়াল মাদ্রিদ একাডেমি থেকে উঠে আসা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার অস্কার প্লানোর গোলে ১৮ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল ভায়োদোলিদ।

৫৭ মিনিটে আনহেল কোরেয়ার গোলে সমতায় ফেরে আতলেতিকো। ওদিকে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীরা পিছিয়ে পড়ার ২ মিনিট পরই রক্ষণভাগের ভুলে গোল হজম করে রিয়াল। ভিয়ারিয়ালের হয়ে গোল করেন ইয়েরেমি পিনো।

আতলেতিকো কোচ হিসেবে ডিয়েগো সিমিওনের দ্বিতীয় লিগ শিরোপা জয়ের উদযাপনটা এভাবে করলেন খেলোয়াড়েরা।
ছবি: রয়টার্স

এইবারকে ১-০ গোলে হারিয়ে টেবিলের তিনে থেকে মৌসুম শেষ করা নিশ্চিত করে রাখল বার্সেলোনা। লিওনেল মেসিকে ছাড়াই এ ম্যাচে মাঠে নেমেছিল রোনাল্ড কোমানের দল। ৮১ মিনিটে আঁতোয়ান গ্রিজমানের গোলে জয় পায় তারা। ৩৮ ম্যাচে ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে বার্সা। ৩৭ ম্যাচে ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ সেভিয়ার হাতে ১ ম্যাচ থাকলেও বার্সাকে ধরতে পারবে না। অবনমন নিশ্চিত হয়েছে উয়েস্কা, ভায়োদোলিদ ও এইবারের।