সিনেমার গল্প লিখে বিদায় পোডলস্কির

ম্যাচ শেষে পোডলস্কির বিদায়টা স্মরণীয় করে রাখলেন সতীর্থরা। ছবি: রয়টার্স
ম্যাচ শেষে পোডলস্কির বিদায়টা স্মরণীয় করে রাখলেন সতীর্থরা। ছবি: রয়টার্স

‘আজ (গতকাল) যা হলো, এটা যেন একটা সিনেমা!’
কী এমন হলো যে লুকাস পোডলস্কির মনে হচ্ছে এটি বাস্তব নয়, যেন কোনো চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য? জার্মান ফরোয়ার্ডের মুখেই শুনুন ব্যাপারটা, ‘আমরা জিতেছি আর জেতার গোলটা আমিই করেছি।’

জার্মানির জার্সিতে কম গোল করেননি পোডলস্কি। নয় নয় করেও ৪৯টি। তবু কালকের এই একটি গোলকে সাজানো চিত্রনাট্য মনে হতেই পারে। জাতীয় দলের হয়ে অবসর নিয়ে নিচ্ছেন ৩১ বছর বয়সেই। সম্মান জানাতে বিদায়ী ম্যাচে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁর হাতে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কাল সিগনাল ইদুনা পার্কে নেমেও ছিল এক তরুণ জার্মান দল। তবু গোল করার লোকের অভাব ছিল না। টিম বার্নার, লিরয় সানে কিংবা জুলিয়ান ব্রান্ডের মতো ফর্মে থাকা সব ফরোয়ার্ডরা তো ছিলেন।
কিন্তু উজ্জীবিত ইংল্যান্ডের সামনে কাঁচুমাচু হয়ে ছিল স্বাগতিকেরা। পরীক্ষামূলকভাবে মাত্র তিনজন ডিফেন্ডার নিয়ে নামা ইংল্যান্ডের আক্রমণ ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলছিল জার্মান রক্ষণকে। কিন্তু ম্যানুয়েল নয়্যায়ের পরিবর্তে নামা মার্ক টার স্টেগেনকে ফাঁকি দিতে পারছিলেন না জেমি ভার্ডি, ডেলে আলিরা। অ্যাডাম লালানা পেরেছিলেন, কিন্তু তাঁর দুর্দান্ত শটটা পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
জার্মানিকে স্বস্তি দিয়েছেন বিদায় বলতে নামা পোডলস্কি। ৬৯ মিনিটে ডি-বক্সের বেশ বাইরে একটা বল পেয়েই বাঁ পায়ের জোরালো শট। জালের দুরূহ কোনায় আশ্রয় নেওয়া সে বল আটকানোর ক্ষমতা ছিল না ইংলিশ গোলরক্ষক জো হার্টের। নিজের বিদায় উপহার নিজেই আদায় করে নেওয়ার পর পোডলস্কির মন্তব্যটাও ছিল দুর্দান্ত, ‘খোদা আমাকে একটা বাঁ পা দিয়েছিলেন। সেটি আমাকে এতগুলো বছর অনেক কিছুই দিয়েছে।’
কথাটা অবশ্য ভুল বলেননি পোডলস্কি। মাত্র ৩১ বছরেই জাতীয় দলকে বিদায় বলে দিচ্ছেন, এই বয়সেই ১৩০ বার নেমেছেন জার্মানির হয়ে। খেলেছেন তিনটি বিশ্বকাপ ও তিনটি ইউরো। কোনোবারই সেমিফাইনাল না খেলে ফেরেননি। ২৪ বছর পর জার্মানিকে বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ এনে দেওয়া দলেও ছিলেন তিনি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, পোডলস্কিদের যুগেই জার্মান দলের নাম থেকে মুছে গেছে ‘যন্ত্র’ শব্দটি। পোডলস্কিদের আবির্ভাবেই জার্মান ফুটবলের সঙ্গে এখন ‘শিল্প’ শব্দটাও মানিয়ে যায় খুব সহজে।
পোডলস্কির বিদায় যেন এক শিল্পীরই বিদায়!