সিনেমার মতো বিদায় পোডলস্কির
জোয়াকিম লো-ই হয়তো চেয়েছিলেন, লুকাস পোডলস্কির শেষবার মাঠ ছেড়ে যাওয়াটা যেন হয় দর্শকদের করতালি-বৃষ্টিতে সিক্ত হয়ে। ৮৪ মিনিটে তাঁকে সে কারণেই উঠিয়ে নেন জার্মানি কোচ। তবে শুধু করতালিই নয়, পোডলস্কি মাঠ ছাড়ার সময় বিদায়রাগিণীতে আরেকটা সুরও বাজল। স্টেডিয়ামের শব্দযন্ত্রে—গ্ল্যাডিয়েটর চলচ্চিত্রের থিম সং!
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচটা দিয়েই জার্মান ফুটবল সমর্থকেরা পরশু তাঁদের ‘গ্ল্যাডিয়েটর’কে বিদায় জানালেন। আর শেষটাও টানলেন তিনি কী দুর্দান্তভাবে! ম্যাচটা জার্মানি জিতেছে ১-০ গোলে। গোলটা কার? পোডলস্কির! দুর্দান্ত এক গোল, যেটি এই স্ট্রাইকারের সঙ্গে খুব যায়। পোস্টের ২৫ গজ দূর থেকে বুলেটগতির বাঁকানো শটে।
নিজের ১৩০তম ও শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে তাঁর ৪৯তম গোলটি ঘুচিয়েছে জার্মানির ৩০ বছর পুরোনো একটা আক্ষেপও। পুরোনো শত্রু ইংল্যান্ডের সঙ্গে ১৯৮৭ সালের পর ঘরের মাঠে এই প্রথম জিতল জার্মানি। দলগত রেকর্ড হয়েছে আরেকটি। ২০১৬ ইউরোর পর রেকর্ড টানা সাত ম্যাচে গোল খায়নি জার্মানি। হয়তো এখন নতুন ‘আক্ষেপ’ হচ্ছে জার্মান সমর্থকদের, এখনো এমন খেলছেন, তাহলে ৩১ বছরেই কেন বিদায় নিচ্ছেন পোডলস্কি?
বিদায়ী ম্যাচ বলেই জার্মানির অধিনায়কের বন্ধনীটা তুলে দেওয়া হয়েছিল তাঁর বাহুতে। স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় তাঁর ক্যারিয়ারের কিছু ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়। আর আবেগের সবটুকু নিয়ে দর্শকেরা তো ছিলেনই। খেলা শেষ হওয়ার পরও যাঁরা মাঠ ছাড়লেন না। প্রিয় ‘পোলডি’ শেষবারের মতো মাঠ প্রদক্ষিণ করতে করতে হাত নেড়ে বিদায় জানাবেন, এই অপেক্ষায়। সতীর্থ টমাস মুলার এটিই মনে করিয়ে দিলেন সবাইকে, ‘সাধারণত ম্যাচ শেষ হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই স্টেডিয়াম খালি হয়ে যায়। কিন্তু এবার সবাই ছিলেন, শুধু লুকাসকে দেখতে।’
খেলোয়াড়ি দক্ষতায় তিনি জার্মানির কিংবদন্তিদের মতো ছিলেন না। কিন্তু মাঠে লড়ে যেতেন সবটুকু দিয়ে, গ্ল্যাডিয়েটরের মতো করে। বিদায়টাও হলো তেমনই রঙিন। পোডলস্কির তৃপ্তিও এখানেই, ‘যেন সিনেমার মতো করে শেষ হলো সবকিছু। ঈশ্বর, বা ওপরে যে-ই থাকুন না কেন, আমাকে শক্ত একটা বাঁ পা দিয়েছেন। সেটি আজ রাতে কাজে লাগিয়েছি। এটা ছিল দারুণ এক ম্যাচ, দারুণ একটা ফল এবং বিদায় বলার জন্য দারুণ এক উপায়।’ এএফপি।