সুয়ারেজের জন্য ‘ভাগ্যবান’ সিমিওনে

আতলেতিকো মাদ্রিদের জয়সূচক গোলের পর লুইস সুয়ারেজকে নিয়ে সতীর্থদের উচ্ছ্বাস।ছবি: রয়টার্স

ম্যাচের তখন ৬৭ মিনিট। একটু আগেই যে দল পিছিয়ে ছিল, কাঁপছিল শিরোপা হারানোর শঙ্কায়, গোল করে সে শঙ্কা কাটালেন আতলেতিকোর স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ। বাকি ২৩ মিনিট দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে গেল মাদ্রিদের লাল-সাদা জার্সিধারীরা। এতেই নিশ্চিত হলো, সাত বছর পর রিয়াল-বার্সার আধিপত্য ভেঙে আবারও লা লিগার ট্রফির স্পর্শ পেয়েছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। এই সাফল্যের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে বিশেষ করে বলেছেন লুইস সুয়ারেজের কথা।

রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে আতলেতিকোর জয়সূচক গোলটি করেছেন লুইস সুয়ারেজ।
ছবি: রয়টার্স

এমন এক সময়, যখন করোনার কারণে সবকিছু বিপর্যস্ত, জীবনেরই যেখানে নিশ্চয়তা নেই, সেখানে কোনো ধরনের বাধা ছাড়া খেলা চলে কী করে? গত এক বছরে ফুটবলেও তাই বাধা এসেছে একের পর এক। এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মতো দুই শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে পেছনে ফেলে শিরোপা জিতেছে আতলেতিকো, সিমিওনে তো আনন্দে উদ্বেল হবেনই!

এমন এক কঠিন বছরে শিরোপা জেতার ব্যাপারটাই আনন্দে ভাসাচ্ছে সিমিওনেকে, ‘আমি অনেক মানুষের জন্যই খুশি আজ। অনেক কঠিন একটা বছর কাটিয়েছি আমরা। করোনভাইরাসের কারণে অনেক মানুষকে হারিয়েছি আমরা। তাই এমন এক বছর চ্যাম্পিয়ন হতে পারা আতলেতিকোর জন্য একটু ভিন্ন কিছু, বিশেষ কিছু। বছরটা অনেক কঠিন ছিল, আমাদের ইতিহাসের মতো। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য এটা অন্যতম সেরা বছর।’

লুইস সুয়ারেজকে নিয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদের খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস।
ছবি: রয়টার্স

তবে সিমিওনের অধীনে এবারই যে প্রথম লিগ শিরোপা জিতল আতলেতিকো, তা কিন্তু নয়; ২০১৪ সালে রিয়াল-বার্সার আধিপত্য ভেঙে লিগ শিরোপা জিতেছিল আতলেতিকো মাদ্রিদ। তবে এবারের শিরোপা জয়ের মাহাত্ম্য সিমিওনের কাছে একটু যেন বেশিই, ‘দুটি অনুভূতি আলাদা। পৃথিবী এখন একটা বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আশা করি, এই শিরোপা জয়ের মাধ্যমে আমরা কঠিন সময়েও কিছু মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি।’

৩২ সপ্তাহ ধরে এই লিগের শীর্ষে থাকা অনেক বড় ব্যাপার। সিমিওনে বলেছেন, ‘আমি অনেক কৃতজ্ঞ, বিশেষ করে তাদের প্রতি, যারা অন্যদের তুলনায় কম খেলেছে। আমরা সব সময় একটা দল হিসেবে থেকেছি, খেলেছি, আর এটাই আমাদের শিরোপা জিততে সাহায্য করেছে।’

আতলেতিকোর খেলোয়াড়দের নিয়ে কোচ দিয়েগো সিমিওনের শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাস।
ছবি: রয়টার্স

পর্দার আড়ালের কুশীলবদেরও ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি সিমিওনে, ‘ক্লাবটা নিয়মিত উন্নতি করছে। মিগুয়েল আনহেল গিল মারিন (আতলেতিকোর ক্রীড়া পরিচালক), এনরিকে সেরেজো (সভাপতি) এবং পর্দার আড়ালে আরও যাঁরা ছিলেন, সবাই আমাদের ক্লাবে স্থিতি এনেছেন, যা এই ফল পেতে সাহায্য করেছে। তাঁরা সব সময় এমন ফল চেয়েছিলেন। এখনো তাঁরা শিরোপা উদ্‌যাপন করতে আসেননি, তবে শিগগিরই আসবেন। আমরা তখন সবাই আলিঙ্গন করব।’

এ দলে সুয়ারেজের মতো একজন স্ট্রাইকারকে পেয়ে নিজেকে গর্বিত বলে মনে হচ্ছে সিমিওনের, ‘কয়েক দিন আগে আমি বলেছিলাম আমি অনেক ভাগ্যবান, কারণ খেলোয়াড়টার নাম সুয়ারেজ। ও কী, সেটা ওর নাম শুনলেই বোঝা যায়।’