স্পেনের এই রেকর্ডটাও এখন গাভির

এই গোলেই রেকর্ড গাভিরছবি: রয়টার্স

একদিকে লিওনেল মেসি ম্যাচে পাঁচ গোল করেছেন। অন্যদিকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো করেছেন জোড়া গোল। এমন দিনে অন্য কোনো ম্যাচের দিকে আর কার চোখ যায়! প্রতিপক্ষ যখন চেক প্রজাতন্ত্র, স্পেনের ম্যাচের দিকে চোখ আরও যাওয়ার কথা নয়। চেকদের বিপক্ষে সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে একবার পয়েন্ট হারিয়েছে স্পেন, সেটিও ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে (০-০), এই পাঁচ ম্যাচে চেকরা স্পেনের জালে বলই ঢোকাতে পেরেছে মাত্র একবার।

সেই স্পেনের বিপক্ষেই কাল প্রাগে নেশনস লিগের ম্যাচে দুবার এগিয়ে গিয়েছিল চেক প্রজাতন্ত্র, তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ২-২ গোলে ড্র হয়েছে। তবে এই ফলও নয়, এমন ম্যাচে নজর ফেরাতে বাধ্য করেছেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার গাভি। বার্সেলোনায় আলো ছড়িয়ে স্পেন দলে সুযোগ পাওয়া গাভি যে স্পেনের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতাই বনে গেছেন!

কার রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছেন গাভি? বার্সেলোনায়ই তাঁর সতীর্থ আনসু ফাতির! তা-ও মাত্র বয়সে সাত দিনের ব্যবধানের কারণে!

আরও পড়ুন

২০২০ সালে সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনের বিপক্ষে ম্যাচে স্পেনের সে সময়ে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হওয়ার সময় ফাতির বয়স ছিল ১৭ বছর ৩১১ দিন, কাল চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে স্পেনকে প্রথমবার সমতায় ফেরানোর সময় গাভির বয়স ছিল ১৭ বছর ৩০৪ দিন।

গত অক্টোবরেই স্পেন জাতীয় দলের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেকের রেকর্ড গড়েছিলেন গাভি। সে যাত্রায় মাত্র ১৭ বছর ৬২ দিন বয়সী গাভি ভেঙেছিলেন ৮৬ বছর পুরোনো রেকর্ড। ১৯৩৬ সালে আনহেল জুবিয়েতার (১৭ বছর ২৮৪ দিন) গড়া রেকর্ড ফাতিও ভাঙতে পারেননি, জাতীয় দলে নিজের অভিষেকের সময়ে ১৭ বছর ৩০৮ দিন বয়সী ফাতি সে তালিকায় ছিলেন দ্বিতীয়। গাভির আগমণে গত অক্টোবরে সেখানেও তৃতীয় হয়ে যান।

আগে গোল করিয়েছেন, এবার নিজেই গোলের উচ্ছ্বাসে মেতেছেন কুচকা
ছবি: রয়টার্স

তবে অক্টোবরে ইতালির বিপক্ষে অভিষেকের দিনে গাভির রেকর্ডের ম্যাচটিতে হেরেছিল স্পেন। সেটি ছিল নেশনস লিগের আগের আসরের সেমিফাইনাল, সেদিন ২-১ গোলে হেরে যায় স্পেন। কিন্তু কাল আরেক রেকর্ডের দিনে গাভিকে আর হার দেখতে হয়নি। এবারের ম্যাচটি নেশনস লিগের এবারের আসরের গ্রুপ পর্বে, এবার হার এড়ানোর জন্য ডিফেন্ডার ইনিগো মার্তিনেজকে ধন্যবাদ দেবে স্পেন।

আরও পড়ুন

৪ মিনিটে স্পেনের রক্ষণ এড়িয়ে যান ইয়ান কুচকা, তাঁর পাসে গোল ইয়াকুব পেসেকের। বিরতির ঠিক আগে গাভির রেকর্ডগড়া গোলে সমতা।

৬৬ মিনিটে আবার স্প্যানিশ রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে এগিয়ে যান কুচকা, এবার বক্সের বাইরে থেকেই এগিয়ে আসা স্প্যানিশ গোলকিপার উনাই সিমনের মাথার ওপর দিয়ে লব করে গোল তাঁর নিজেরই। ৯০ মিনিটে হাঁচড়ে-পাঁচড়ে পাওয়া গোলে এক পয়েন্ট স্পেনের। মার্কো আসেনসিওর ক্রসে হেড মার্তিনেজের, সেটি কোনোরকমে গোললাইন পেরিয়ে যায়।

ইনিগো মার্তিনেজের গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্পেন
ছবি: রয়টার্স

এভাবে ড্র পেয়ে মোটেও সন্তুষ্ট নন স্পেন কোচ লুইস এনরিকে, ‘শুরু থেকেই ম্যাচটা জটিল হয়ে পড়েছিল। ম্যাচের বেশিরভাগ সময়ই আমরা নিজেদের মতো খেলতে পারিনি। যেভাবে চেয়েছি, ম্যাচটা সেভাবে গুছিয়ে নিতে পারিনি।’

তবে গাভিকে নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত এক সময়ে বার্সাকে ট্রেবল জেতানো এনরিকে, ‘গাভিকে খুব ভালোভাবে চিনি আমি। প্রায় পাঁচ বছর ধরে ওর খেলার ভিডিও দেখছি আমি। প্রথমার্ধে যদি আমাদের একজন খেলোয়াড় ভালো খেলে থাকে, সেটি ও-ই। তবে গাভিকে নিয়ে আমি নতুন করে আর কিছু বলব না। আগেই বলেছি ও গোল করবে, ও গোল করে চলেছেও।’

বলবেন না বলেও অবশ্য গাভিকে নিয়ে উচ্ছ্বাসে সেখানেই শেষ নয় এনরিকের, ‘ওর সবচেয়ে ভালো দিকটা হচ্ছে ও একটা পরিপূর্ণ প্যাকেজ। রক্ষণ বলুন, আক্রমণ বলুন, সাহস, চারিত্রিক দৃঢ়তা যা-ই বলুন, ও সবদিকেই মানসম্পন্ন।’

আরও পড়ুন