স্পেন দলে ডাক পাননি রিয়ালের একজনও

রামোসকে দলে রাখেননি এনরিকে।ফাইল ছবি: রয়টার্স

স্পেন দলের দায়িত্ব পেয়েই চমক দেখিয়েছিলেন কোচ লুইস এনরিকে। ২১ জনের স্কোয়াডে ডাক মিলেছিল ছয়জন রিয়াল মাদ্রিদ খেলোয়াড়ের। বার্সেলোনার সাবেক কোচ হলেও জাতীয় দলের দায়িত্ব পেয়ে দল নির্বাচনে কোনো রকম বৈষম্য করার যে ইচ্ছা নেই, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন সেবারই। দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম কোনো বড় টুর্নামেন্টের আগে আবার চমকে দিলেন এনরিকে। ২০২০ ইউরোর স্পেন দলে রিয়াল মাদ্রিদের কোনো খেলোয়াড়কেই ডাকা হয়নি এবার!

স্পেনের ফুটবল ইতিহাসেই এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। বড় কোনো টুর্নামেন্টের দলে রিয়ালের কোনো খেলোয়াড় ছাড়া কখনো খেলতে নামেনি স্পেন। কিন্তু নিয়মিত অধিনায়ক সের্হিও রামোসের ফিটনেস নিয়ে সন্তুষ্ট হতে না পেরে তাঁকে ডাকেননি এনরিকে। রিয়াল থেকে আর ডাকার মতো কাউকেই নাকি পাননি এই কোচ। এর আগে ১৯৫০ বিশ্বকাপেই সবচেয়ে কম খেলোয়াড় ছিলেন স্পেন স্কোয়াডে। সে বিশ্বকাপে রিয়াল থেকে মাত্র একজন খেলোয়াড় সুযোগ পেয়েছিলেন স্পেন দলে।

ইউরোর স্পেন স্কোয়াড।
ছবি: টুইটার

এনরিকের দল নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বরাবরের মতো ২৩ জন নয়, এবার ইউরোতে ২৬ জনকে ডাকার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এনরিকে ২৬ জনের দল ঘোষণা করেননি। ২৪ জনকে ডেকেই সন্তুষ্ট স্প্যানিশ কোচ। এ ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য, ‘আমরা মাত্র ২৪ জনকে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি কারণ, আমার মনে হয়েছে সবাই অংশ নিতে পারে, এটা অনুভব করা দরকার। সাধারণত আমরা ১৮ বা ১৯ জনকে ব্যবহার করি। আমাদের ক্ষেত্রে মাত্র একজন খেলোয়াড় বাইরে থাকবে (ম্যাচ স্কোয়াডের বাইরে)।’

নিয়মিত অধিনায়ক রামোসকে না নেওয়ার প্রসঙ্গে নিজের যুক্তি দেখিয়েছেন এনরিকে, ‘এটা পরিষ্কার জানুয়ারির পর থেকেই ঠিকভাবে খেলার অবস্থায় নেই সে। গতকাল ওর সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। এটা খুব কঠিন ছিল। আমার খুব খারাপ লেগেছে কারণ সে সব সময় সর্বোচ্চটা দেয়। কিন্তু আমার মনে হয়েছে দলের জন্য এটাই সেরা সিদ্ধান্ত।’ রামোসকে না পেলেও তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য লাপোর্তেকে পাচ্ছেন এনরিকে। এত দিন ফ্রান্স দলে খেলার অপেক্ষায় থাকা সিটি ডিফেন্ডার কদিন আগেই স্পেনের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। তাই সুযোগ পেয়েই তাঁকে ডেকে নিয়েছেন এনরিকে।

ফর্মে থাকা আসপাস ডাক পাননি।
ছবি: টুইটার

নিয়মিত খেলতে পারছেন না বলে রামোসকে ডাকেননি এনরিকে। ওদিকে রামোসের অনুপস্থিতিতে রিয়ালে দারুণ খেললেও নাচো জাতীয় দল কোচের মন জিততে পারেননি। এ ব্যাপারেও প্রশ্ন করা হয়েছিল এনরিকেকে। এর উত্তরে এনরিকে বলেছেন, ‘আরও তিন বা চারজন এখানে থাকতে পারত এবং তারা সবার সেটা প্রাপ্য ছিল।’ নাচোকে দলে না ডাকলেও পুরো মৌসুমে ১২ ম্যাচে খেলতে নামা এরিক গার্সিয়াকে ঠিকই ডেকেছেন এনরিকে। এর মধ্যে ২০২১ সালে মাত্র চার ম্যাচে মূল একাদশে ছিলেন এই সিটি ডিফেন্ডার।

স্পেনের ইউরো পর্ব শুরু হবে আগামী ১৪ জুন। গ্রুপ ই–তে সুইডেনের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলবে স্পেন। গ্রুপের বাকি দুই দল পোল্যান্ড ও স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে যথাক্রমে ১৯ ও ২৩ জুন খেলবে স্পেন। ইউরোর আগে পর্তুগাল ও লিথুয়ানিয়ার সঙ্গে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে স্কোয়াডের পরীক্ষা নেবেন এনরিকে।

লা লিগায় এ মৌসুমের অন্যতম সেরা রাইটব্যাক হেসুস নাভাসও ডাক পাননি।
ছবি: টুইটার

স্পেন স্কোয়াড:

গোলকিপার:
উনাই সিমন (অ্যাথলেটিক বিলবাও), দাভিদ দে হেয়া (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), রবার্ট সানচেজ (ব্রাইটন)।

রক্ষণ:
হোসে গায়া (ভ্যালেন্সিয়া), জর্দি আলবা (বার্সেলোনা), পাউ তোরেস (ভিয়ারিয়াল), এমেরিক লাপোর্তে (ম্যানচেস্টার সিটি), এরিক গার্সিয়া (ম্যানচেস্টার সিটি), দিয়েগো ইয়োরন্তে (লিডস), আজপিলিকেতা (চেলসি)।

মধ্যমাঠ:
মার্কাস ইয়োরন্তে (আতলেতিকো মাদ্রিদ), সের্হিও বুসকেতস (বার্সেলোনা), রদ্রি (ম্যানচেস্টার সিটি), থিয়াগো (লিভারপুল), কোকে (আতলেতিকো), ফ্যাবিয়ান রুইজ (নাপোলি), পেদ্রি (বার্সেলোনা)।

ফরোয়ার্ড:
দানি ওলমো (লাইপজিগ), মিকেল ওয়ারসাবালা (সোসিয়েদাদ), জেরার্দ মরেনো (ভিয়ারিয়াল), আলভারো মোরাতা (জুভেন্টাস), ফেরান তোরেস (ম্যানচেস্টার সিটি), আদামা ত্রায়োরে (উলভারহ্যাম্পটন), পাবলো সারাবিয়া (পিএসজি)।