২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা লোকসান ইন্টারের
মরক্কোর তারকা আশরাফ হাকিমিকে গত জুলাইয়ে ৬ কোটি ৮০ লাখ ইউরোয় পিএসজির কাছে বিক্রি করেছে ইন্টার মিলান। পরের মাসে রোমেলু লুকাকুকে ১১ কোটি ৫০ লাখ ইউরোয় চেলসির কাছে বিক্রি করে সিরি ‘আ’ ক্লাবটি।
গত মৌসুমে লিগও জিতেছে তারা। এতে এসেছে আরও দুপয়সা। তবু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে হিসাবের খাতায় লোকসানের ঢেউ থামাতে পারেনি ইন্টার।
২০২০–২১ অর্থবছরে ইতালিয়ান ফুটবলে রেকর্ড ২৪ কোটি ৫৬ লাখ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা) লোকসান গুনেছে ক্লাবটি। কাল এক বিবৃতিতে তথ্যটি জানায় সিরি ‘আ’ চ্যাম্পিয়নরা।
১১ বছর অপেক্ষার পর গত মৌসুমে লিগ জিতলেও চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়েছে ইন্টার। বি গ্রুপে তলানির দল হয়ে ছিটকে পড়েছে নেরাজ্জুরিরা। ইউরোপা লিগেও যেতে পারেনি। এতে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় ক্লাবটি।
শেষ ষোলোয় উঠতে পারলে কিংবা আরও এগিয়ে যেতে পারলে আয় বাড়ত সিরি ‘আ’–তে ১৯ বার চ্যাম্পিয়ন ও ৩ বার চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ীদের। এদিকে করোনা মহামারিতে বিশ্বব্যাপী চলমান মন্দা আঘাত হানে ইন্টারের বাণিজ্যেও। মাঠে দর্শক ছিল না, ইতালিতেও গত বছর চলেছে কঠোর লকডাউন।
মোটামুটি দর্শকহীন মাঠে খেলা ছাড়া প্রায় সব কার্যক্রমই বন্ধ ছিল ইন্টারের। এতে সিরি ‘আ’য় কোনো ক্লাবের এক মৌসুমে সর্বোচ্চ লোকসান দেওয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডে সবার ওপরে বসতে হলো সিমোনে ইনজাঘির দলকে।
ইন্টারের আগে রেকর্ডটি ছিল জুভেন্টাসের। সেটিও গত মৌসুমের হিসাবে, এ মাসের শুরুতে ২১ কোটি ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার ৮৬ কোটি টাকা) লোকসানের কথা জানায় জুভেন্টাস। সে সময় এটাই ছিল সিরি ‘আ’র কোনো ক্লাবের এক মৌসুমে সর্বোচ্চ পরিমাণ আর্থিক লোকসানের রেকর্ড।
সিরি ‘আ’ চ্যাম্পিয়নদের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কোভিড–১৯ মহামারিতে বিশ্বের আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে ইতালি ও বিশ্বব্যাপী ধাক্কা লেগেছে। এর মধ্যে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩৬ কোটি ৪৭ লাখ ইউরো। আর অর্থবছরে লোকসান ২৪ কোটি ৫৬ লাখ ইউরো। (গত বছর মার্চের পর থেকে) স্টেডিয়াম দর্শকহীন থাকায় ম্যাচের দিন থেকে আয় অনেক কমেছে, স্পনসরচুক্তিও কমেছে। এসব কারণে ক্লাব খেলাধুলার চুক্তিতে প্রয়োজনীয় সুবিধাদি দিতে পারেনি।’
করোনাভাইরাস মহামারিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ক্লাবগুলোর একটি ইন্টার। তাদের মালিক প্রতিষ্ঠান চীনের সানিং কমার্স গ্রুপ করোনায় আর্থিকভাবে বড় ধাক্কা খেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ওকট্রির কাছ থেকে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ইউরো ধার নিতে হয় ইন্টারকে। সুদসহ এই অর্থ তিন বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে সান সিরোর ক্লাবটিকে।
ইন্টারের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে দুটি প্রাথমিক লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেছে ক্লাব—আর্থিক সংহতি নিশ্চিত করা এবং মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দল ধরে রাখা। এরই প্রতিফলন হিসেবে মে মাসে ইন্টার কোচের পদ ছেড়ে দেন আন্তোনিও কন্তে। শিরোপা জয়ে সক্ষম এমন দল গড়তে না পারায় অভিমান নিয়েই সান সিরো ছাড়েন ইতালিয়ান এ কোচ। এরপর হাকিমি ও লুকাকুকেও বিক্রি করে দেয় ইন্টার।