রিয়াল তারকারা যেন ব্যাটম্যানের ‘খলনায়ক’
ডেভিড আলাবা ও রুডিগারদের মুখের মাস্ক দেখে বেনকে মনে পড়তে পারে। ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য ডার্ক নাইট রাইজেস’ সিনেমার খলনায়ক বেন। তাঁর মাস্কের সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদ খেলোয়াড়দের মুখের মাস্কের পার্থক্য সামান্যই।
প্রাক–মৌসুম অনুশীলন শুরু করেছে রিয়াল। ভালদেবেবাসে অনুশীলনে আলাবা–রুডিগারদের মুখে এমন মাস্কই দেখা গেছে। স্পেনে কিছুদিন আগেই তীব্র দাবদাহ গেছে, মৃতের সংখ্যা আশির বেশি। এই গরমে মুখে আবার মাস্ক পরে রিয়ালের খেলোয়াড়েরা কেন অনুশীলন করছেন—সে প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলেছেন অনেকেই।
কোভিড মহামারির সময় যেমন সার্জিক্যাল মাস্ক পরেছেন সবাই, এই মাস্ক তেমন কিছু নয়। আকাশি রংয়ের এই মাস্ক দেখতে অনেকটাই গ্যাস থেকে রক্ষা পাওয়ার মাস্কের মতো। ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও আলাবাদের এমন মাস্ক পরে চুটিয়ে অনুশীলন করতে দেখা গেছে।
দৌড়, স্ট্রেচিং থেকে শুরু করে শারীরিক অন্যান্য কসরত করেছেন রিয়ালের খেলোয়াড়েরা। শ্বাস–প্রশ্বাস ভালোভাবে নিতেই এই মাস্ক নাকি মাস্ক থাকায় শ্বাস–প্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে কি না—এমন সব প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভিনিসিয়ুসদের এই মাস্ক পরতে বলেছেন রিয়ালের ফিটনেস কোচ আন্তনিও পিন্তুস। মাদ্রিদের ক্লাবটির এই ফিটনেস বিশেষজ্ঞ মৌসুম সামনে রেখে নতুন পরিকল্পনা ফেঁদেছেন। মৌসুম শেষেও খেলোয়াড়েরা যেন মোটামুটি ভালো ফিটনেসে থাকেন, সেজন্য এখন থেকেই তাঁদের প্রস্তুত করছেন পিন্তুস।
উঁচু জায়গায় খেলার সময় খেলোয়াড়দের শ্বাস–প্রশ্বাসে সমস্যা হয়। উদাহারণ হিসেবে বলিভিয়ার লা পাজের স্টেডিয়াম মাথায় আসতে পারে। সেখানে খেলতে গিয়ে ব্রাজিলের জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের একবার অক্সিজেনের সিলিন্ডার বসিয়ে শ্বাস নিতে হয়েছিল। রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়েরা এমন পরিস্থিতিতেও মানিয়ে নেওয়ার পথ বাতলে দিতেই এই মাস্কের ব্যবস্থা।
পিন্তুস আরও একটি বিষয় নিয়ে ভেবেছেন। এই মাস্ক পরে খেলোয়াড়দের কার পারফরম্যান্স কেমন, তা দেখার পর মৌসুমের বাকি সময় মাথায় রেখে প্রতিটি খেলোয়াড়ের জন্য আলাদা অনুশীলনের সূচি এবং কীভাবে অনুশীলন করবেন তা ঠিক করবেন পিন্তুস। শারীরিক অনুশীলনে বিপ্লব আনার জন্য রিয়ালের এই ফিটনেস কোচ ইতিমধ্যেই খ্যাতি কুড়িয়েছেন। এমন কিছু এই প্রথম উদ্ভাবন করেননি পিন্তুস।
২০২১ সালে প্রাক–মৌসুমেও খেলোয়াড়দের মাস্ক পরিয়ে অনুশীলন করিয়েছেন পিন্তুস। এ বছর জানুয়ারিতে কোপা ডেল রে–তে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে ম্যাচের আগে খেলোয়াড়দের মুখে মাস্ক ও পিঠে ব্যাকপ্যাক দিয়ে অনুশীলন করিয়েছেন পিন্তুস।
খেলোয়াড়দের অনুশীলন করানোর এই কৌশল নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ টিভি–তে কথা বলেছেন পিন্তুস, ‘এই মাস্কে পাঁচটি স্তর আছে। এটা অবশ্যই সহজে অক্সিজেন টেনে নেওয়ার পরীক্ষা নয়। বায়বীয় ও অবায়বীয় পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়েরা কেমন সাড়া দেয়, তা দেখতেই এই অনুশীলন। এই মাস্ক অক্সিজেন ও কার্বোহাইড্রেট বিশ্লেষণ করে। খেলোয়াড়েরা এই মুহূর্তে কতটা ভালো অবস্থায় আছে সেই হার জানার প্রয়োজনীয় থেকেই এমন অনুশীলন। এর ফলে বোঝা যাবে খেলোয়াড়দের কীভাবে অনুশীলন করাতে হবে।’