প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপ জিতলেও স্পেনের মেয়েদের জন্য সময়টা নিখাদ উপভোগ্য যাচ্ছে না। ফাইনালের পর পুরস্কার প্রদানমঞ্চে স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) সভাপতি লুইস রুবিয়ালেসের ‘চুমু–কাণ্ডে’র জেরে অস্বস্তির হাওয়ার বইছে দেশটির ফুটবলে।

বিশ্বকাপ জিতেও স্বস্তিদায়ক পরিবেশ না পাওয়া স্পেনের মেয়েদেরকে এবার নিজের উয়েফা বর্ষসেরা কোচের পুরস্কার উৎসর্গ করেছেন সারিনা ভাইগমান। ভাইগমান ২০২৩ নারী বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কোচ ছিলেন। ২০ আগস্ট সিডনিতে তাঁর দলকে ১–০ ব্যবধানে হারিয়েই শিরোপা জেতে স্পেন।

৫৩ বছর বয়সী ভাইগমানকে এ বছরের উয়েফা বর্ষসেরা কোচের (নারী) পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় বৃহস্পতিবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ড্র অনুষ্ঠানে। মোনাকোতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিচ্ছিন্নভাবে স্প্যানিশ ফুটবলের বর্তমান অস্বস্তিকর পরিবেশের কথা উঠে আসে। বিশ্বকাপ ফাইনালের পুরস্কারমঞ্চে হেনি হেরমোসোকে চুমু দেওয়া নিয়ে স্প্যানিশ ফুটবলে যে ঝড় উঠেছে, তা আপাতত ফিফার নির্দেশনার পর কিছুটা স্তিমিত আছে।

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ২০২৩ ফিফা নারী বিশ্বকাপ জেতে স্পেন
ছবি: রয়টার্স

ভুক্তভোগী হেরমোসোর ‘সম্মতিবিহীন চুমু’র দাবিকে ‘মিথ্যা’ উল্লেখ করে পাল্টা আইনি ব্যবস্থার হুমকি দিয়েছিল স্পেনের ফুটবল ফেডারেশন। এর কয়েক ঘণ্টা পরই রুবিয়ালেসকে সংস্থাটির প্রধানের পদ থেকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করে ফিফা। বর্তমানে ফিফার ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে রুবিয়ালেসের বিষয়ে একটি শাস্তিমূলক কার্যক্রমের উদ্যোগ চলমান। পরবর্তী সময়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ব–ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

আরও পড়ুন

ছবির গল্পে স্পেনের মেয়েদের বিশ্বকাপজয়

চলতি বছর ইংল্যান্ডকে ফিনালিসিমা ও ইউরো জেতানোর পর বিশ্বকাপ রানার্সআপ করা ভাইগমান সেরা কোচের পুরস্কার হাতে নিয়ে স্প্যানিশ ফুটবলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, ‘স্প্যানিশ দল নিয়ে কী ঘটছে, আমরা সবাই জানি। এটা একজন কোচ হিসেবে, দুই কন্যার মা হিসেবে, একজন স্ত্রী হিসেবে এবং মানুষ হিসেবে আমাকে ব্যথিত করছে।’

উয়েফা বর্ষসেরার পুরস্কার হাতে বাঁ থেকে) দাঁড়ানো আর্লিং হলান্ড (বর্ষসেরা পুরুষ খেলোয়াড়), অ্যাইতেন বোনমাতি (বর্ষসেরা নারী খেলোয়াড়), আলেক্সান্দার সেফারিন (উয়েফা সভাপতি), সারিনা ভাইগমান (বর্ষসেরা নারী কোচ) ও মিরোস্লাব ক্লোসা (প্রেসিডেন্টস অ্যাওয়ার্ড)।
ছবি: এএফপি

বর্ষসেরা কোচের পুরস্কার স্পেনের বিশ্বকাপজয়ী দলকে উৎসর্গ করে ডাচ এই কোচ বলেন, ‘ফুটবল অনেক এগিয়েছে। তবে মেয়েদের ফুটবল ও সমাজের সামনে এগোনোর অনেক পথ বাকি আছে। এই পুরস্কার আমি স্পেন দলকে উৎসর্গ করতে চাই, যে দলটা বিশ্বকাপে দারুণ ফুটবল খেলেছে। এই দলটা উদ্‌যাপনের উপলক্ষ হওয়ার এবং তাদের কথা শোনানোর অধিকার রাখে। আমি ওদেরকে বড় করে হাততালি দিচ্ছি, আশা করি, আপনারাও যোগ দেবেন।’