গার্দিওলার ম্যান সিটি যেখানে সবচেয়ে বাজে
হার তো বটেই, ড্রকেও নিজের ডিকশনারি থেকে একরকম বাদ দিয়েছিলেন পেপ গার্দিওলা। ম্যাচের পর ম্যাচে প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে দলকে জেতাবেন, এটাই ছিল চেনা চিত্র। কিন্তু সব ভালো দিন নাকি কখনো না কখনো শেষ হতে হয়। এ নিয়ম মেনেই হয়তো ইউরোপে শেষ হতে চলেছে গার্দিওলা-যুগ।
এখনই যদিও শেষ কথা বলার সময় আসেনি, তবে এরই মধ্যে নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে মৌসুম হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার মতো অনেক কিছু দেখে ফেলেছেন গার্দিওলা। যেখানে সর্বশেষ ১০ ম্যাচের ৭টিতেই হেরেছে তাঁর দল। অথচ গত দুই মৌসুমের প্রতিটিতে গার্দিওলার সিটি হেরেছে মাত্র ৭ ম্যাচ।
এখন সেই রেকর্ড ধরে রাখতে হলে সিটিকে মৌসুমের বাকি সব কটি ম্যাচেই জিততে হবে। বর্তমানে সিটি যে ছন্দে এগোচ্ছে, তাতে বোধ হয় এমন বাজি সিটির অন্ধ ভক্তরাও ধরবেন না।
এমনকি এ মৌসুম যেভাবে চলছে, তাতে মৌসুমে সিটির হয়ে গার্দিওলার সবচেয়ে বেশি হারের রেকর্ডটিও ভেঙে যেতে পারে। সিটিতে আসার পর প্রথম মৌসুমে (২০১৬-১৭) গার্দিওলা হেরেছিলেন সব মিলিয়ে ১০ ম্যাচ। পরের দুই মৌসুমে এ সংখ্যা ছিল ৭ ও ৬।
তবে ২০১৯-২০ মৌসুমে, অর্থাৎ লিভারপুলের কাছে শিরোপা হারানোর মৌসুমে সিটি হেরেছিল ১২ ম্যাচ। যেটি এখন পর্যন্ত কোনো মৌসুমে সর্বোচ্চ হারের ঘটনা হয়ে আছে। তবে পরের চার মৌসুমে টানা চার লিগ জয়সহ একাধিক শিরোপা জেতার পথে গার্দিওলার দলের ম্যাচ হারার ক্রম ছিল এমন—৮, ৯, ৭, ৭।
কিন্তু এবার অর্ধেক মৌসুম বাকি থাকতেই ৭ ম্যাচ হেরে বসে আছে সিটি। তা–ও শেষ ১০ ম্যাচের মধ্যে এই ৭ হার দেখেছে দলটি। ফলে সামনের ম্যাচগুলোতে সহজেই এ ধারা থেকে বেরোতে পারবে কি না, সে প্রশ্নও থেকে যায়। পাশাপাশি গার্দিওলার সিটিকে এখনো অন্তত ২৬টি ম্যাচ খেলতে হবে।
প্রিমিয়ার লিগে ২৩ ম্যাচ, চ্যাম্পিয়নস লিগে ২ ম্যাচ এবং এফএ কাপে ১ ম্যাচ। শেষ দুই প্রতিযোগিতায় পরের পর্বে গেলে ম্যাচসংখ্যা আরও বাড়বে। আর এর মধ্যে গার্দিওলা যদি বৈপ্লবিক কিছু করে ঘুরে দাঁড়াতে না পারেন, তবে ১২ হারের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।
শুধু ম্যাচ হারাতেই গার্দিওলার সিটি বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে এমন নয়, গোল খাওয়ার দিক থেকেও একই অবস্থা। ফুটবলের পরিসংখ্যানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অপ্টার হিসাবে, নভেম্বরের শুরু থেকে ৯ ম্যাচে ২১ গোল খেয়েছে সিটি, ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের অন্য যেকোনো দলের চেয়ে যা বেশি! অবিশ্বাস্যই বটে। অর্থাৎ এই সময়ে অবনমন অঞ্চলে থাকা দলগুলোও সিটির চেয়ে কম গোল খেয়েছে।
২০১৬-১৭ মৌসুম থেকে গার্দিওলার হারা ম্যাচের সংখ্যা
*মৌসুম চলমান