ম্যারাডোনার ভাস্কর্য দেখে ভক্তদের প্রশ্ন ‘এটা ম্যারাডোনা?’

ম্যারাডোনার এই ভাস্কর্য নিয়ে হাস্যরস চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভাস্কর্যের পেছনে এএফএ সভাপতি ক্লদিও তাপিয়াছবি: টুইটার

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডিয়েগো ম্যারাডোনার ভাস্কর্যটি ঘুরছে। প্রথম দৃষ্টিতে প্রয়াত আর্জেন্টাইন কিংবদন্তিকে চিনতে কষ্ট হয়। আর্জেন্টিনার জার্সি পরা এবং ম্যারাডোনার মুখের আদলের সঙ্গে কষ্টে–সৃষ্টে তবু মিলিয়ে নেওয়া যায়।

কিন্তু আগে থেকে বলে না দিলে প্রথম দেখায়ই ভাস্কর্যটি ’৮৬ বিশ্বকাপ কিংবদন্তির হিসেবে চিনতে কষ্ট হবে অনেকের। তাতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে হিতে বিপরীত হয়েছে। ভাস্কর্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ম্যারাডোনার ভক্তদের মধ্যে হাস্যরস ও ক্ষোভের উদ্রেক ঘটিয়েছে।

আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ‘টিওয়াইসি স্পোর্টস’ এবং ‘ওলে’ জানিয়েছে, স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় লা’আলকুদিয়া অঞ্চলে যুব ফুটবল টুর্নামেন্টে ম্যারাডোনার এই ভাস্কর্য কাল উন্মোচন করা হয়। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) সভাপতি ক্লদিও তাপিয়া নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব–২০ এবং ভ্যালেন্সিয়া অনূর্ধ্ব–২০ দলের মধ্যকার ম্যাচ শুরুর আগে ম্যারাডোনার ভাস্কর্যটি মাঠে উপস্থাপন করা হয়।

বয়সভিত্তিক এই টুর্নামেন্টের অপর নাম ‘কোটিফ’ (সিওটিআইএফ বা অর্গনাইজিং কমিটি অব দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল টুর্নামেন্ট)। ১৯৮৪ সাল থেকে শুরু হওয়া বার্ষিক এই প্রতিযোগিতায় বয়সভিত্তিক দল ছাড়াও ক্লাব ও জাতীয় দলকেও আমন্ত্রণ জানানো হতো। ২০১২ সাল থেকে নারীদের সিনিয়র দল নিয়েও সেখানে টুর্নামেন্ট হয়েছে। এর চার বছর পর ২০১৬ সাল থেকে ছেলেদের টুর্নামেন্ট অনূর্ধ্ব–২০ দলে নামিয়ে আনা হয়।

সে যাই হোক, ম্যারাডোনার এই ভাস্কর্য বানিয়েছেন স্থানীয় ভাস্কর্যবিদ রাফা ফেরি। ভাস্কর্যটি এই টুর্নামেন্টে নিয়ে আসার আগে তা মায়োর্কার এলস আরকেস স্টেডিয়ামে প্রদর্শিত হয়। কোটিফের সভাপতি এলিসো গোমেজ তাপিয়াকে একটি ব্যাজ উপহার দেওয়ার মাধ্যমে তাঁকে এই টুর্নামেন্টের সম্মানিত সদস্যের মর্যাদা দেন।

ম্যারাডোনার এই ভাস্কর্য এখন থেকে কোটিফের সব টুর্নামেন্টেই প্রদর্শিত হবে। অংশগ্রহণ করা দলগুলোকে স্বাগত জানানো হবে মহানায়কের ভাস্কর্য দিয়ে। কিন্তু ম্যারাডোনার ভক্তরা এই ভাস্কর্য দেখে মোটেও সন্তুষ্ট হতে পারেননি। একজনের টুইট, ‘এটা ম্যারাডোনা?’

আরেকজন মজা করেন, ‘ওরা এমন এক ভাস্কর্য বানিয়ে ম্যারাডোনাকে সম্মানিত করেছে, যার মুখটা চিনো তাপিয়ার আর চুল সিলভ্যালেস্টার স্ট্যালোনের।’ আর্জেন্টিনা দলে ম্যারাডোনার এক সময়ের সতীর্থ ও ’৮৬ বিশ্বকাপে খেলা সাবেক অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ছিলেন চিনো তাপিয়া। সিলভ্যালেস্টার স্ট্যালোনকে মোটামুটি সবারই চেনার কথা। হলিউডের এই অভিনেতা ‘র‌্যাম্বো’ ও ‘রকি’ সিনেমায় অভিনয় করে খ্যাতি কুড়িয়েছেন। আশির দশকে বেশ ঝাঁকড়া ও বড় চুল ছিল স্ট্যালোনের।

শুধু চিনো তাপিয়া নয়, ম্যারাডোনার আরেক জাতীয় দল সতীর্থের মুখের সঙ্গেও এই ভাস্কর্যের মিল খুঁজে পেয়েছেন ভক্তরা। হোর্হে ভালদানো—১৯৮৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করা সাবেক এই ফরোয়ার্ডের কথা উল্লেখ করে এক ভক্তের টুইট, ‘ওরা ম্যারাডোনাকে সম্মান জানাতে গিয়ে ভালদানোর ভাস্কর্য নিয়ে এসেছে।’

এ ছাড়া আর্জেন্টিনার সাবেক ফুটবলা পিপো গ্রোসিতো ও গায়ক–গীতিকার আতালহুয়াপা ইয়ুপানকুইয়ের মুখের আদলের সঙ্গেও ভাস্কর্যটির মিল খুঁজে পেয়েছেন ভক্তরা। বাদ যাননি যীশুও! খুব কম ভক্তই এর প্রশংসা করেছেন।

ভ্যালেন্সিয়া অনূর্ধ্ব–২০ দলকে ২–০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব–২০ দল। আর্জেন্টিনার সাবেক ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হাভিয়ের মাচেরানো তাঁর দেশের এই বয়সভিত্তিক দলের কোচ। এই প্রতিযোগিতার নিয়ম বেশ অদ্ভুত। ৪০ মিনিট করে খেলা হয় প্রতি অর্ধে। সিনথেটিক টার্ফে ম্যাচগুলো হয়।

প্রতিটি দল ১১ জন বদলি খেলোয়াড় মাঠে নামাতে পারে। কোনো ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তি নেই। আন্তর্জাতিক দলও স্থানীয় দলের মুখোমুখি হতে পারে।