চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের আবদুল হাকিম
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে গত দুই বছর শয্যাশায়ী ছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের ফুটবলার আবদুল হাকিম। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এ মাসের শুরুতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা হলো না হাকিমের। চিকিৎসাধীন আজ ভোররাতে মারা গেছেন ৭১ বছর বয়সী সাবেক এই ফুটবলার।
যশোর উপশহরের এ ব্লক মসজিদে আসরের নামাজের পর হাকিমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় জানাজা হবে যশোর স্টেডিয়ামে। এরপর উপশহর কবরস্থানে আজই দাফন করা হবে তাঁকে। সাবেক এই ফুটবলার মারা যাওয়ার সময় স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়ে রেখে গেছেন।
হাকিম সত্তর ও আশির দশকের দেশের অন্যতম সেরা লেফট উইং-ব্যাক ছিলেন। ১৯৬৫ সালে আন্তস্কুল প্রতিযোগিতায় খুলনা বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হওয়া যশোর মডেল হাইস্কুলের ফুটবলার ছিলেন হাকিম। ওই বছরই তিনি যশোর জেলা ফুটবল দলে সুযোগ পান। ১৯৬৮ সাল থেকে খুলনা জুট মিলে পার্সেজ অফিসার হিসেবে চাকরি করা হাকিম সে বছরই পূর্ব পাকিস্তান যুব দলে যশোরের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে জায়গা পান।
১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় দলের পক্ষে খেলেছেন। ১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে খেলেছেন দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাবে। ১৯৭০ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত খেলেছেন ইপিআইডিসিতে (বর্তমান বিজেএমসি)। ওই সময় তিনি ঢাকায় অনুষ্ঠিত আগাখান গোল্ডকাপে খেলেছেন। ১৯৭২ সালে তিনি আসামের গুয়াহাটিতে খেলেছেন বরদুলই শিল্ডে। ১৯৭৭ সালে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স এবং ১৯৭৮ সালে ওয়ারী ক্লাবের পক্ষে ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে খেলেন হাকিম। ১৯৭৩ এবং ১৯৭৫ সালে জাতীয় দলের হয়ে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত মারদেকা কাপে খেলেছেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের’ পক্ষে ভারতের এলাহাবাদ, বিহার, বেনারস, পাঞ্জাবসহ বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শনী ম্যাচে খেলেছেন হাকিম। হাকিমের মৃত্যুতে শোকাহত জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলাম, ‘হাকিম ভাইদের মতো ফুটবলাররা কখনো এ দেশে মূল্যায়ন পায়নি। এ জন্য এই দেশে কখনো আর বীরের জন্ম হবে না। তাঁর বিপক্ষে একবার খেলেছিলাম। উনি বড় মাপের ফুটবলার ছিলেন।’