দুই ভাইয়ের কাছে হেরে বিদায় আতলেতিকো মাদ্রিদের

গোল করে উদ্‌যাপন ইনাকি উইলিয়ামসের। পাশেই তাঁর ভাই নিকো উইলিয়ামস। তিনিও গোল পেয়েছেনএএফপি

উইলিয়ামস ভাইদের বাবা-মা ঘানা থেকে স্পেনে চলে যেতে চেয়েছিলেন। সে জন্য সাহারা মরুভূমি পাড়ি দেওয়ার চ্যালেঞ্জটা নিতে হতো। ঘানা থেকে খালি পায়ে সাহারা পাড়ি দিয়ে উত্তর আফ্রিকায় স্পেনের ছিটমহল মেলিল্লায় চলে গিয়েছিলেন তাঁরা।

২০২১ সালে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘গার্ডিয়ান’কে ইনাকি উইলিয়ামস বলেছিলেন সে গল্প। মায়ের কাছে সে গল্প শুনেছেন। মা মারিয়া আর্থুর তাঁকে জানিয়েছিলেন, কীভাবে প্রায় কোনো খাওয়ার পানি ছাড়াই তাঁরা বেঁচে ছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত মেলিল্লার দেখা পেয়েছিলেন। সেখান থেকে স্পেনের বিলবাওয়ে চলে এসেছিলেন ইনাকির বাবা। ইনাকি ও তাঁর ভাই নিকো উইলিয়ামসের বেড়ে ওঠা বিলবাওয়েই। এত দিন পর আজ সেসব কথা মনে করার কারণ? দুটো গোল!

আরও পড়ুন

স্প্যানিশ কোপা দেল রে সেমিফাইনাল ফিরতি লেগে গতকাল রাতে সান মামেসে আতলেতিকো মাদ্রিদের মুখোমুখি হয়েছিল অ্যাথলেটিক বিলবাও। আতলেতিকোকে ৩-০ গোলে হারানোর এই ম্যাচে গোল পেয়েছেন বিলবাওয়ের দুই ভাই ইনাকি ও নিকো। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-০ গোলের জয়ে গত পাঁচ বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো কোপা দেল রে ফাইনালে উঠল বিলবাও।

ইনাকি ও নিকো গোল করায় খুব স্বাভাবিকভাবেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠে এসেছে তাঁদের পরিবারের স্পেনে আসার প্রসঙ্গ। বিলবাওয়ে বেড়ে ওঠা দুই ভাই যে সেই অঞ্চলের ক্লাবটির প্রয়োজনের মুহূর্তে সাহায্যের ‘পা’ বাড়িয়ে দিয়েছেন। পা? ফুটবল তো পা দিয়েই খেলতে হয়, তাই না!

ফাইনালে ওঠার পর এভাবেই দর্শক অভিবাদনের জবাব দেন বিলবাওয়ের খেলোয়াড়েরা
এএফপি

প্রতি আক্রমণে দিয়েগো সিমিওনের আতলেতিকোকে তছনছ করেছে বিলবাও। ১৩ মিনিটে এমনই এক প্রতি আক্রমণ থেকে বক্সে ইনাকিকে ক্রস বাড়ান তাঁর ভাই নিকো। চোখধাঁধানো ভলিতে গোল করেন ইনাকি। ভাইয়ের এই ‘অবদান’ ফিরিয়েও দিয়েছেন ইনাকি। তাঁর পাস থেকে ৪২ মিনিটে গোল করেন নিকো। ৬১ মিনিটে তৃতীয় গোলটি গোর্কা গুরুজেতার। সেভিয়ার লা কার্তুয়ায় আগামী ৬ এপ্রিল ফাইনালে মায়োর্কার মুখোমুখি হবে বিলবাও।

ফুটবলের পরিসংখ্যানবিষয়ক ‘এক্স’ অ্যাকাউন্ট ‘মিস্টার চিপ’ জানিয়েছে, গত ৫৪ বছরের মধ্যে এই প্রথম নকআউট পর্বে দুই লেগের কোনো ম্যাচে আতলেতিকোকে বিদায় করল বিলবাও।

আরও পড়ুন

ভাইয়ের সঙ্গে মাঠে চমৎকার বোঝাপড়া নিয়ে ম্যাচ শেষে ‘টিভিই’কে নিকো উইলিয়ামস বলেছেন, ‘আমাদের সম্পর্কটা জীবন্ত এবং আমরা একে অপরকে বুঝি। ঘরের দর্শকদের সামনে ফাইনালে উঠতে পেরে ভালো লাগছে। আশা করি, আমরা ফাইনাল জিততে পারব।’

সান মামেসে ম্যাচ শুরুর আগে রক্তারক্তি কাণ্ডও ঘটেছে। আতলেতিকোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, স্টেডিয়ামের পাশে একটি পানশালায় তাদের সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন বিলবাওয়ের সমর্থকেরা। এতে আতলেতিকোর এক সমর্থককে হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়েছে।

‘মুভিস্টার’কে আতলেতিকো সভাপতি এনরিক চেরেজোকে এই তথ্য জানিয়েছেন। ঘটনার এখানেই শেষ নয়। বিলবাওয়ের এক সমর্থক দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ম্যাচ শুরু হতে প্রায় ১৫ মিনিট দেরি হয়। ইএসপিএন জানিয়েছে, গ্যালারিতে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছিলেন সেই সমর্থক। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তাঁর অবস্থা অত গুরুতর নয়।

আরও পড়ুন