পর্তুগালের জয়ের পর প্রশ্ন, প্রথম গোলটি কার

ব্রুনো ফার্নান্দেজের ২ গোলে পর্তুগাল জিতেছে। প্রথম গোলটি প্রথমে মনে হয়েছিল করেছেন রোনালদো।ছবি: রয়টার্স

পর্তুগালের জয় নিয়ে কোনো সন্দহে নেই। স্কোরলাইনটা জ্বলজ্বল করছে—পর্তুগাল ২: ০ উরুগুয়ে। এই জয়ে ফার্নান্দো সান্তোসের দল তৃতীয় দল হিসেবে এবারের বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে উঠে গেছে। এই সবকিছুই নিশ্চিত। কিন্তু ম্যাচ শেষে একটা প্রশ্ন চলে এসেছে সামনে—গোল দুটির একটি কার!

দ্বিতীয় গোলটি যে ব্রুনো ফার্নান্দেজের, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। পেনাল্টি থেকে সবার চোখের সামনেই তো গোলটি করেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার। সমস্যা প্রথম গোলটি নিয়ে। সেটি কি রোনালদো, নাকি ফার্নান্দেজের—এ নিয়েই প্রশ্ন।

পেনাল্টি থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করছেন ব্রুনো
ছবি:

৫৪ মিনিটে প্রথম গোলটি যখন করে পর্তুগাল, ফিফার ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে সব জায়গাতেই দেখাচ্ছিল এটি রোনালদোর গোল। বাঁ প্রান্ত থেকে ফার্নান্দেজের ক্রস থেকে অসাধারণ এক হেডে গোলটি তিনিই করেছেন বলেই মনে হয়েছিল সবার। কিন্তু গোলটির পরপরই স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় জানিয়ে দেওয়া হয়, গোলটি ব্রুনোর। ফার্নান্দেজের ক্রস রোনালদোর মাথা স্পর্শ করেনি।

প্রথম গোলের মুহূর্ত। প্রথমে মনে করা হয়েছিল রোনালদোর এই হেডেই বল জাল ছুঁয়েছে। কিন্তু পরে দেখা যায়, বল তাঁর মাথা স্পর্শ করেনি। গোলটি ব্রুনো ফার্নান্দেজের। তিনিই গোলে শটটি নিয়েছিলেন
ছবি: রয়টার্স

গোলটি তাঁর নয়, ম্যাচ শেষে এটা জানার পর রোনালদোও একটু অবাক হয়েছেন। তিনি বারবার মাথায় হাত ছোঁয়ানোর ভঙ্গি করে দেখাতে চেয়েছেন, জালে ঢোকার আগে বল তাঁর মাথা স্পর্শ করেছিল। তবে মাথা স্পর্শ যদি করেও থাকে, সেটি দিক বদল করেনি। আর সে কারণেই গোলটি ব্রুনো ফার্নান্দেজেরই।

গোল নিয়ে এই শোরগোলের আগে রোনালদো প্রথমার্ধে বলের নাগাল খুব একটা পাননি। প্রথমার্ধে যে আটবার উরুগুয়ের গোলের উদ্দেশে পর্তুগাল শট নিয়েছে, এর একটিও তাঁর নয়। জোয়াও ফেলিক্স, ব্রুনো ফার্নান্দেজ, কার্ভালহোদের নেওয়া সেই আট শটের একটিও অবশ্য লক্ষ্যে থাকেনি। বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচের প্রথমার্ধে পর্তুগালের লক্ষ্যে শট রাখতে না পারার তৃতীয় ঘটনা এটি।

অন্যদিকে প্রথমার্ধে উরুগুয়ে বেশ কয়েকবারই পর্তুগালের গোলকিপার দিয়েগো কস্তার পরীক্ষা নেয়। সবচেয়ে ভালো সুযোগটি তারা পেয়েছিল ৩২ মিনিটে। নিজেদের অর্ধ থেকে বল নিয়ে পর্তুগালের বক্সের সামনে চলে যান রদ্রিগো বেনতাঙ্কুর। পর্তুগালের তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে তিনি যে শটটি নেন, সেটি ঠেকিয়ে দেন কস্তা।

রোনালদোরও দাবি ছিল পর্তুগালের প্রথম গোলে
ছবি: রয়টার্স

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই উরুগুয়ের রক্ষণে চাপ তৈরি করতে থাকে পর্তুগাল। ৫১ মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজের দুর্দান্ত এক পাস থেকেও গোল করতে পারেননি ফেলিক্স। তবে ৫৪ মিনিটে সফল পর্তুগাল। বল উরুগুয়ের জালে ঢোকার পর গ্যালারিতে ওঠে মেরুন ঢেউ। রোনালদোকে নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসেন ফার্নান্দেজ-ফেলিক্সরা।

রোনালদোর উচ্ছ্বাস থামিয়ে অবশ্য ভিএআরের সাহায্য নিয়ে অফসাইড পরীক্ষা করে দেখেন রেফারি। সেই পরীক্ষায় পাস রোনালদো, অফসাইডে ছিলেন না তিনি।

রোনালদোর গোলের পর যেন জেগে ওঠার চেষ্টা করে উরুগুয়ে। বদলি হিসেবে নামা লুইস সুয়ারেজের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি ভালো আক্রমণ করে তারা। কিন্তু গোল আর পায়নি। এ সময়ে রোনালদোকে তুলে নিয়ে রক্ষণের শক্তি বাড়ান পর্তুগালের কোচ। রোনালদো নেমে যাওয়ার পর পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান ২-০ করেন ফার্নান্দেজ। এরপরও উরুগুয়ে চেষ্টা করে যায়। কিন্তু বারবারই কস্তার বিশ্বস্ত গ্লাভসে আটকা পড়ে যায় তাদের সেই চেষ্টা।