জামালকে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা দিতে আর্জেন্টিনার ক্লাবকে ফিফার নির্দেশ

বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন আর্জেন্টিনার ক্লাব থেকেছবি: প্রথম আলো

আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের দল সোল দে মায়োতে খেলতে গিয়েছিলেন জামাল ভূঁইয়া। কিন্তু সেখানে সাত মাস থাকলেও কোনো বেতনই পাননি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক। দেড় বছরের চুক্তিতে গিয়ে একতরফা চুক্তি ভেঙেই দেশে ফিরে আবাহনী লিমিটেডে যোগ দিয়েছেন তিনি। এরপর আর্জেন্টিনার ক্লাবটির কাছে বকেয়া বেতন দাবি করে ফিফার ট্রাইব্যুনালে নালিশও করেছিলেন। সেই ট্রাইব্যুনালের বিচারক জামালের পক্ষে রায় দিয়েছেন সম্প্রতি। সোল দে মায়োকে সব মিলিয়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ৯৮০ ডলার জামালের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ফিফার ট্রাইব্যুনাল, যা বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।

সোল দো মায়োতে ৭ মাস খেলে বেতন পাননি জামাল
ছবি: টুইটার

এই টাকার মধ্যে আছে জামালের সাত মাসের বকেয়া বেতন। সেটি ছিল প্রতি মাসে ১২ হাজার ডলার। ফিফার আইনভঙ্গের শাস্তি হিসেবে আরও কিছু জরিমানাও যোগ হয়েছে সঙ্গে। সেটির পরিমাণ ৭১ হাজার ডলার। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ৫ শতাংশ সুদ। আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে সোল দে মায়োকে এই জরিমানা পরিশোধ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

সোল দো মায়োতে যোগ দিয়ে ইনস্টাগ্রামে এই ছবিটি পোস্ট করেছিলেন জামাল
ইনস্টাগ্রাম

এ ব্যাপারে জামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আর্জেন্টিনার ক্লাবে গিয়ে দেখি ওরা কোনো বেতন দিচ্ছে না। আমি তখন কিছু বলিনি। ভেবেছিলাম হয়তো পুরো টাকাটা একসঙ্গে পাব। কিন্তু কয়েক মাস হয়ে যাওয়ার পর আমার আর ভালো লাগেনি। আমি চুক্তি ভঙ্গ করে চলে আসি। বেতন চেয়ে আমার আইনজীবীর মাধ্যমে ফিফার কাছে অভিযোগ করি। ফিফা যে রায় দিয়েছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট।’

২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশ দলে খেলছেন জামাল ভূঁইয়া
ছবি: বাফুফে

ট্রাইব্যুনালের সামনে সোল দো মায়োকে অবশ্য এই রায়ের বিরুদ্ধে ১০ দিনের মধ্যে আপিল করতে বলা হয়েছে। এরপর তারা টাকা দিতে না পারলে ফিফার আইন অনুযায়ী তিন মাস স্থানীয় ও বিদেশি খেলোয়াড় নিবন্ধনের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে ক্লাবটির ওপর।

আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের এই ক্লাবে মাত্র চারটি ম্যাচ খেলেছেন জামাল। ২টি গোলও করেছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে একধরনের মোহভঙ্গই হয়েছিল বলে জানালেন তিনি, ‘আমি ভাবতেও পারিনি, যে ক্লাব আমাকে এত আগ্রহ নিয়ে নিয়ে গেল, চুক্তি করল, তারা আমাকে বেতনই দেবে না। আমার এই বছরের অক্টোবর পর্যন্ত চুক্তি ছিল। কিন্তু পারিশ্রমিক ছাড়া খেলতে বিরক্ত লাগছিল। তা ছাড়া আর্জেন্টিনা আর বাংলাদেশের দূরত্বটাও অনেক। আকাশযাত্রাটা খুব কষ্টকর।’

বাংলাদেশ অধিনায়ক চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে যোগ দিয়েছেন আবাহনীতে। কিন্তু আকাশি-নীলদের হয়েও খুব নিয়মিত খেলার সুযোগ মিলছে না তাঁর। এখন পর্যন্ত দুটি ম্যাচ খেললেও কোচ আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানি তাঁকে সে দুটি ম্যাচে পুরো সময় খেলাননি। বিদেশি লিগে এর আগেও খেলেছেন জামাল। ২০২১ সালে তিনি ভারতের আই লিগে কলকাতা মোহামেডানের জার্সিতে খেলেছিলেন।

২০১৩ সালে ডেনমার্ক থেকে এসে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলা শুরু করেন তিনি। গত ১১ বছরে বাংলাদেশের জার্সিতে ৮০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।