পর্তুগালে ক্লাব কিনে ফুটবলে ফেরার চেষ্টা ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তির
দানি আলভেজ—নামটা শুনলেই একটি স্মৃতি ভেসে ওঠে। বার্সেলোনার ডান প্রান্তে অক্লান্ত দৌড়ানো এক ফুটবলার, লিওনেল মেসির গোলের অন্যতম উৎস। কিংবা ব্রাজিল জাতীয় দলেও একসময় ডান উইংয়ের ‘ফেরারি।’
ধর্ষণের মামলায় জড়িয়ে সেই আলভেজ ফুটবল থেকে প্রায় হারিয়েই গিয়েছিলেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে স্পেনে গ্রেপ্তার হন, জেলও খাটতে হয়। পরে জামিনে বের হয়ে আসার পর আলভেজকে নিয়ে নতুন খবর জানিয়েছে পর্তুগালের সংবাদমাধ্যমগুলো। ব্রাজিলের সাবেক এই রাইটব্যাক নাকি পর্তুগালের তৃতীয় বিভাগের একটি দল কিনে নেওয়ার শেষ পর্যায়ে আছেন। শুধু তা–ই নয়, ক্লাবটিতে বিনিয়োগের পাশাপাশি আলভেজ অন্তত ছয় মাসের জন্য পেশাদার ফুটবলে ফিরতে চান।
ইএসপিএন ব্রাজিল জানিয়েছে, সময়টা হতে পারে আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত। নিজের ক্লাবের হয়ে ছয় মাস খেলে তারপর পুরোপুরি অবসর নিয়ে শুধু মালিক হিসেবে কাজে নামতে চান। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘ও গ্লোবো’, স্পেনের সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ও একই খবর জানিয়েছে।
পর্তুগিজ এই ক্লাবের নাম সাও জোয়াও দে ভের। তৃতীয় বিভাগ ফুটবলের চলতি মৌসুমে ৯ম স্থানে রয়েছে তারা। ইএসপিএন ব্রাজিল জানিয়েছে, প্রাথমিক বিনিয়োগে ক্লাবটির ৫০ শতাংশ মালিকানা পেয়েছেন আলভেজ। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী চলতি মৌসুম শেষে সাও জোয়া দে ভেরের বাকি ৫০ শতাংশ মালিকানা কিনবেন তিনি।
ইএসপিএন ব্রাজিল আরও জানিয়েছে, উত্তর পর্তুগালের ক্লাবটির পূর্ণ মালিকানা হাতে পাওয়ার পর আলভেজ প্রায় ১০ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করবেন। তবে ক্লাবের পেশাদার কর্মীদের খরচ, অবকাঠামো ব্যয় মিলিয়ে দৈনন্দিন পরিচালন খরচ এ বিনিয়োগের অন্তর্ভুক্ত নয়। সংবাদমাধ্যমটি আলভেজের খেলায় ফেরার বিষয়টি এখনো আলোচনাসাপেক্ষ বললেও ও গ্লোবো এবং মার্কা জানিয়েছে, বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত।
সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুলব্যাকদের একজন হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া আলভেজ পেশাদার ফুটবলে সবচেয়ে বেশি শিরোপাজয়ী খেলোয়াড়দেরও একজন (৪৩)। বার্সেলোনায় দুই মেয়াদে ৯টি মৌসুম মিলিয়ে ৬ বার লা লিগা জয়ের পাশাপাশি ৩ বার চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতেন আলভেজ। ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাস এবং ফরাসি ক্লাব পিএসজির হয়েও জেতেন সে দেশের সর্বোচ্চ লিগ। ব্রাজিলের হয়ে দুবার করে কোপা আমেরিকা ও কনফেডারেশনস কাপ জিতেছেন আলভেজ।
স্পেনে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিচার শুরুর আগেই এক বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন আলভেজ। ২০২৪ সালে প্রথম রায়ে তাঁকে ৪ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সে বছর ফেব্রুয়ারিতে এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁর আপিল সফল হয়। যথেষ্ট প্রমাণের অভাবে কাতালুনিয়ার উচ্চ আদালত চলতি বছরের মার্চে পূর্বের রায়টি বাতিল করে তাঁকে খালাস দেন। আলভেজ এরপর পাসপোর্ট ফিরে পান এবং স্বাধীনভাবে চলার অনুমতিও পান। মার্কা জানিয়েছে কিছুদিন ধর্ম প্রচারের কাজও করেছেন তিনি।
ইএসপিএন জানিয়েছে, জেল থেকে মুক্তির পর আলভেজ ফুটবলের পেছনে অর্থাৎ মাঠের বাইরে কাজ করেছেন। ইউরোপিয়ান ফুটবলে অনেকটাই খেলোয়াড়দের এজেন্টের কাজ করেছেন তিনি। তবে মাঠে ফেরার ইচ্ছেটা নাকি তাঁর সব সময়ই ছিল।