জিদানের কাছে ক্ষমা চাইলেন ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি

রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক কোচ জিনেদিন জিদানফাইল ছবি: এএফপি

ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ হওয়ার ইচ্ছার কথা আগেই জানিয়েছিলেন জিনেদিন জিদান। আপাতত সেটা হচ্ছে না, দিদিয়ের দেশমের সঙ্গে আরও চার বছরের জন্য নতুন চুক্তি করেছে ফ্রেঞ্চ ফুটবল ফেডারেশন (এফএফএফ)। দেশমের সঙ্গে চুক্তি করার পর জিদানকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যও করেছেন এফএফএফ সভাপতি। নোয়েল লা গ্রায়েত। কিংবদন্তি ফুটবলারকে নিয়ে গ্রায়েতের সেই মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফ্রান্সের বর্তমান ও সাবেক খেলোয়াড়েরা। গ্রায়েতকে জিদানের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী এমিলি ওদিয়া–কাস্তেরা।

চারদিক থেকে তোপের মুখে পড়ে অবশেষে জিদানের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন গ্রায়েত। ৮১ বছর বয়সী এই ফুটবল–কর্মকর্তা আজ বলেন, ‘মন্তব্যগুলোর জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। যে মন্তব্যগুলোতে আমার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ছিল না, খেলোয়াড় ও কোচ বিষয়ে বিবেচনাও ছিল না।’

সর্বশেষ তিন বিশ্বকাপে ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ ছিলেন দেশম। ফরাসি ফুটবল অঙ্গনে গুঞ্জন ছিল, জিদানকে কোচ করতে পারে এফএফএফ। ফ্রান্সের হয়ে ১৯৯৮ বিশ্বকাপ জেতা জিদান সর্বশেষ কোচিং করিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদে। ২০২১ সালের মে মাসে স্বেচ্ছায় মাদ্রিদ ছেড়ে আসার পর অন্য কোথাও যোগ দেননি তিনি।

আরও পড়ুন

গত জুনে নিজেই বলেন, কোনো একদিন ফ্রান্সের কোচ হতে চান। তাঁর সাবেক সতীর্থ থিয়েরি অঁরি জানিয়েছিলেন, ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ হতে অন্য কোথাও দায়িত্ব নিচ্ছেন না জিদান। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্স আর্জেন্টিনার কাছে হেরে যাওয়ার পর জিদানের কোচ হওয়ার বিষয়টি অনেকটাই আসন্ন বলে মনে করেছিলেন অনেকে।

আরও পড়ুন

তবে এফএফএফ শেষ পর্যন্ত বর্তমান কোচ দেশমের সঙ্গে আরও চার বছরের জন্য চুক্তি করে। এরপর আরএমসি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জিদানকে কোচ না বানানো নিয়ে বেশ কয়েকটি মন্তব্য করেন এফএফএফের প্রধান গ্রায়েত। যার একটি ছিল এরকম, ‘জিদান যদি আমাকে ফোন করত, তাহলে কী হতো? নিশ্চিতভাবে কিছুই হতো না। আমি ওর ফোনই তুলতাম না।’

জিদানের এখন ভবিষ্যত কী, তিনি কি ব্রাজিলের কোচের প্রস্তাব পেলে গ্রহণ করবেন? এমন প্রসঙ্গ উঠলে গ্রায়েত বলেন, ‘জিদান ব্রাজিলে? আমার কিছু আসে–যায় না। সে যা চায় করুক। আমার ভাবার বিষয় নয় এটা। ওর সঙ্গে আমি কখনোই এ নিয়ে আলাপ করিনি। দেশমের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের কথা আমরা কখনোই ভাবিনি।’

এফএফএফের প্রধানের এ মন্তব্যটি রিটুইট করে ফ্রান্স সরকারের ক্রীড়ামন্ত্রী কাস্তেরা লেখেন, ‘আবারও মাত্রা ছাড়ানো মন্তব্য। একজন খেলাধুলা ও ফুটবল জগতের কিংবদন্তির প্রতি সম্মান না দেখানোটা লজ্জাজনক, যেটা আমাদের সবাইকে মর্মাহত করেছে। ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট হয়ে এভাবে কথা বলা উচিত নয়। মাত্রা ছাড়ানো বক্তব্যটির জন্য দয়া করে জিনেদিন জিদানের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করুন।’

আরও পড়ুন

ফেডারেশন প্রধানের বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ফ্রান্স ফুটবলের এ সময়ের সবচেয়ে বড় তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। ২৪ বছর বয়সী পিএসজি তারকা টুইটারে লিখেছেন, ‘জিদানই ফ্রান্স, কিংবদন্তিকে আমরা এভাবে অসম্মান করতে পারি না।’
জিদানের সঙ্গে বিশ্বকাপ জেতা সাবেক খেলোয়াড় ইউরি জোরকায়েফ মনে করিয়ে দিয়েছেন ফ্রান্স ফুটবলে জিদান কী, ‘কথাগুলো স্বাগত জানাতে পারছি না। এগুলো ফালতুভাবে বলা। (মনে রাখতে হবে) আমরা একজন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের কথা বলছি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।’

আরও পড়ুন

আরেক সাবেক ফুটবলার ফ্রাঙ্ক রিবেরির টুইটে ছিল গ্রায়েতের প্রতি খোঁচা, ‘আপনি আমাকে অভিভূত করেছেন। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, জিজুর সঙ্গে দ্রুতই পরামর্শ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’

ক্ষমা–প্রার্থনা বক্তব্যে সাক্ষাৎকার নেওয়া সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে গ্রায়েত বলেন, ‘আরএমসিতে সাক্ষাৎকার দেওয়া আমার উচিত হয়নি। ওরা ফ্রান্স ফুটবলের দুই সেরা খেলোয়াড়ের মধ্যে বিতর্ক তৈরি করতে চেয়েছিল।’