জার্মানি ও স্পেনের কাছে এটা বড় সতর্কবার্তা

ফুটবলেও যে অঘটন ঘটতে পারে, সেটা গতকাল সৌদি আরব দেখিয়ে দিয়েছে। সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা তাদের কাছে প্রথম ম্যাচে হেরেই গেল। আজ দুই সাবেক চ্যাম্পিয়ন জার্মানি ও স্পেনের কাছে এটা বড় এক সতর্কবার্তা। তারপরও আমি জার্মানি, স্পেনেরই জয় দেখছি।

গতবারের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া এবং বেলজিয়ামও আজ জিতবে বলে আমার বিশ্বাস। এই দলগুলো ফুটবল–ঐতিহ্য ও শক্তিতে প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে।

কোস্টারিকার বিপক্ষে স্পেনের না জেতার কোনো কারণ নেই। স্পেন দলটা ভালো ছন্দে আছে, বল পজেশনে তারা ঐতিহ্যগতভাবেই ভালো। সঙ্গে দ্রুত প্রতি–আক্রমণে ওঠার ক্ষমতাও স্পেনেরই বেশি। খেলোয়াড়দের মান ও বড় ম্যাচ খেলার মেজাজ মিলিয়ে স্পেনকে আটকানো সহজ নয়। স্পেন গত দুটি বিশ্বকাপে হয়তো ভালো করতে পারেনি, কিন্তু দলটি ধারাবাহিক।

সেটার সঙ্গে খেলোয়াড়দের সামর্থ্য যোগ করলে স্পেনকে ফেবারিট হিসেবেই দেখতে হবে। স্কোরলাইন কেমন হবে, বলা যায় না। তবে স্বচ্ছন্দেই স্পেন জিততে পারে। স্পেনের খেলার ধাঁচটা কোস্টারিকার মধ্যেও আছে। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যেও কোস্টারিকার খেলোয়াড়েরা তেমন পিছিয়ে নেই। কিন্তু দিন শেষে কোস্টারিকার পক্ষে মনে হয় না পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়া সম্ভব।

আরও পড়ুন

জার্মানি গত বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছে। এখন তারা পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। সাম্প্রতিক কালে খুব যে ভালো ফুটবল খেলছে, তা নয়। দলে এখন বিশ্বমানের ফুটবলারের অভাব, যারা কিনা পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। টমাস মুলার ছাড়া এই জার্মানির বাকিরা তুলনামূলক তরুণ। তবে মনে রাখতে হবে, জার্মানরা জাতি হিসেবেই মানসিকভাবে শক্ত। আর সেটার গুণেই অনেক সময় জার্মানি কঠিন ম্যাচেও বেরিয়ে যায়। মাঠে টেকনিক্যালিও ওরা ভালো। তা ছাড়া ফুটবলে তো বলাই হয়, দুই দল খেলে, দিন শেষে জেতে জার্মানি। আমার বিশ্বাস, আজও জার্মানিই জিতে যাবে জাপানের বিপক্ষে। জাপানিরা মাঠে দৌড়াদৌড়িতে ভালো, অ্যাথলেটিসিজম আছে ওদের মধ্যে। কিন্তু একটা সময় পর্যন্ত জাপান লড়াই করলেও পরে আর পারে না, হাল ছেড়ে দেয়।

আরও পড়ুন

ক্রোয়েশিয়া দলে অনেক দিন ধরেই একঝাঁক ফুটবলার একসঙ্গে খেলছে। গতবার দুর্দান্ত খেলে ফাইনালে এসেছে ওরা। সেটা মানসিকভাবে আজ উজ্জীবনীশক্তি হবে ক্রোয়াটদের। তবে ক্রোয়েশিয়াকে এটা প্রমাণ করতে হবে যে গতবার তারা যোগ্য দল হিসেবেই রানার্সআপ হয়েছে।

নিজেদের প্রমাণের একটা দায় তাদের ওপর থাকছেই। সব মিলিয়ে দলীয় শক্তির বিচারে ক্রোয়েশিয়া অনেকটাই এগিয়ে। তা ছাড়া প্রতিপক্ষ মরক্কো বিশ্বকাপ জিততে আসেনি। সেই সামর্থ্যও নেই তাদের। নেই হারানোর কিছু। তবে মরক্কোর খেলোয়াড়েরা বেশ মানসম্মত, খেলার ধরনও অনেকটা লাতিনের মতো। আফ্রিকার অন্য দেশগুলোর চেয়ে আলাদা।

মরক্কো আফ্রিকান দেশ হলেও শরীরনির্ভর ব্যাপারটা ওদের ভেতর নেই। অনেক উপভোগ করে ওরা ফুটবল খেলাটা। পরশু যেমন সেটা করছিল সেনেগাল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নেদারল্যান্ডসের অভিজ্ঞতার কাছে হেরে গেছে। মরক্কোর ক্ষেত্রেও সে রকমই হতে পারে আজ।

কানাডার পক্ষে ফেবারিট বেলজিয়ামকে রোখা কঠিনই মনে হচ্ছে। বছরখানেক আগে ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ছিল বেলজিয়াম। সেই মর্যাদা ধরে রাখতে ওরা নিজেদের সেরাটাই দেবে মাঠে। বেলজিয়ামের সবচেয়ে ভালো দিক, প্রতি–আক্রমণে ওরা খুব ভালো।

আরও পড়ুন

কেভিন ডি ব্রুইনাসহ বিশ্বমানের কয়েকজন খেলোয়াড় এই দলের অলংকার। একটা সংগঠিত শক্তি হিসেবে অনেক দিন ধরে ভালো খেলছে বেলজিয়াম। তবে চোটের কারণে দলের আক্রমণের বড় ভরসা রোমেলু লুকাকুকে দলটা প্রথম দুই ম্যাচ মিস করবে। তারপরও আমি মনে করি না, কানাডার বিপক্ষে জিততে বড় কোনো সমস্যা হবে ডি ব্রুইনাদের।