নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকায় গতকাল শনিবার যেন তারার হাট বসেছিল। আমন্ত্রণ পেয়ে ঢাকা থেকে গিয়েছিলেন শেখ মোহাম্মদ আসলাম, রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বিরসহ সাবেক তারকা ফুটবলারদের অনেকে; স্থানীয় ফুটবলাররা তো ছিলেনই। সবার উপস্থিতিতে দুপুরের পর থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এলাকাটি রীতিমতো গমগম করছিল।

সাবেক ফুটবলারদের নিয়ে কয়েক ঘণ্টা আনন্দময় সময় কাটানোর এই আয়োজনের নেপথ্য মানুষটির নাম রিয়াজ উদ্দিন আল মামুন, যিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। নারায়ণগঞ্জের ক্রীড়াঙ্গনের একজন বড় পৃষ্ঠপোষকও। জেলার ১৬টি ফুটবল একাডেমিতে পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছেন অকাতর। এতেই দায়িত্ব শেষ মনে করেননি; নিজের প্রিয় শহরে ক্ষয়িষ্ণু খেলাধুলায় প্রাণ ফেরাতে নবোদ্যমে মাঠে নেমেছেন। তাতেই রীতিমতো আলোড়ন ফেলেছেন শহরে।

মানুষটি কী করেছেন, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। ১৯৪৩ সালে প্রতিষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জের বিখ্যাত মহসিন ক্লাবকে দিয়েছেন পুনর্জন্ম। চাষাঢ়ার পাশে খানপুর এলাকায় অতীতে যেখানে মহসিন ক্লাব ছিল টিন দিয়ে তৈরি ঘর, সেখানেই এখন উঠে দাঁড়িয়েছে সুরম্য পাঁচতলা ভবন! ভবন মানে শুধু ইট-পাথরের কিছু গাঁথুনি নয়, আধুনিক এই ভবন দেখলে যে কেউ অভিভূত হবেন, মুগ্ধতা প্রকাশে ভাষা খুঁজে পাবেন না।

ভবনটি শনিবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন রিয়াজ উদ্দিন আল মামুন নিজেই। এটি তৈরি করা হয়েছে তাঁর ইপিলিয়ন গ্রুপের অর্থায়নে। এই গ্রুপের চেয়ারম্যান তিনি। উদ্বোধনের পর ঢাকা থেকে আসা ক্রীড়াসাংবাদিকদের নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখান সবকিছু। স্থানীয় সাবেক ফুটবলার, সংগঠকের উপস্থিতিতে তিল ধারণের জায়গা ছিল না তখন ভবনের ভেতর।

মহসিন ক্লাবে সংরক্ষিত প্রয়াত সাবেক ফুটবলার মোনেম মুন্নার জার্সির পাশে তাঁর স্ত্রী ও ছেলে
ছবি: শামসুল হক

ভবনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো, এখানে নারায়ণগঞ্জের বিখ্যাত সব সাবেক ফুটবলারের প্রতিকৃতি রাখা হয়েছে। শিল্পীর আঁকা প্রতিকৃতি। আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু, মোনেম মুন্না ও সম্রাট হোসেন এমিলির ছবি তিনটি ফ্লোরে সিঁড়ির ওপর লাগানো। দেখ মনে হয় কত জীবন্ত! এই বুঝি মাঠে নেমে পড়ছেন সাবেক তারকারা।

১৯৯৫ সালে মিয়ানমারে চার জাতি ট্রফি জেতা মোমেন মুন্নার জার্সি ও বুট আপনাকে নস্টালজিক করে তুলবে। আশি-নব্বইয়ের দশকের আরেক তারকা গোলাম গাউসের জার্সিও ফিরিয়ে নেবে অতীতে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ক্রিকেটার জাহাঙ্গীর আলম ও আজমল হোসেন বিদ্যুতের জার্সি দুটি মনে করাবে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলার স্মৃতি।

নারায়ণগঞ্জের হয়ে বিভিন্ন সময় জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করা ৩৭ ফুটবলারের নাম লিখে একটা বোর্ড লাগানো হয়েছে ভবনের প্রথম তলায়। একনজর দেখলেই বোঝা যায়, কারা নারায়ণগঞ্জকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন জাতীয় স্তরের ফুটবলে। সেখানে কে নেই!

মহসিন ক্লাবের ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ছিলেন সাবেক ফুটবলারদের অনেকেই
ছবি: শামসুল হক

১৯৩৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত খেলা আলাউদ্দিন খান, ১৯৪৮ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত দুলু আফেন্দি, ১৯৬৩ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত হাজী আবুল কাশেমরা তো আছেনই; তালিকায় আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু, সম্রাট হোসেন এমিলি, মোহাম্মদ আমানউল্লাহ, মোনেম মুন্না, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, বায়েজিদ আলম নিপু, নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ সুজন, আজমল হোসেন বিদ্যুৎ, ওয়ালী ফয়সাল, মিঠুন চৌধুরী কিংবা হালের তপু বর্মণ বা ইয়াছিন আরাফাতদের নামও বাদ পড়েনি।

দাবায় জাতীয় চ্যাম্পিয়ন গ্র্যান্ডমাস্টার আবদুল্লাহ আল রাকিব, জাতীয় মহিলা দাবার সাবেক চ্যাম্পিয়ন শারমিন আক্তার লিজা, শারমিন সুলতানা শিরিনদের ছবি শোভা পাচ্ছে দেয়ালে। বোর্ডে লেখা তাঁদের নানা অর্জনের কথাও। নারায়ণগঞ্জের ক্রীড়াঙ্গনকে আলোকিত করেছে—এমন অনেক ছবিও দেয়ালে টাঙানো।

খেলোয়াড়দের জন্য আছে ছোট্ট একটা জিম। চাইলে টেবিল টেনিস খেলার ব্যবস্থা আছে। আছে একটা লাইব্রেরিও। যেখানে গল্প-উপন্যাসের সঙ্গে খেলাধূলা-বিষয়ক কয়েকটি বইও চোখে পড়ল। অফিসকক্ষ, সভাকক্ষ তো আছেই। একবার এই ভবনে ঢুকলে নিশ্চিত বের হতে মন চাইবে না কারও।

অনুষ্ঠান শেষে একটি প্রীতি ম্যাচেরও আয়োজন করা হয়
ছবি: শামসুল হক

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে একটা ক্রীড়া জাদুঘর নিয়ে কত হাহাকার! ক্রীড়া প্রশাসন কখনো কোনো ক্রীড়া জাদুঘর তৈরি করেনি, যেখানে বিভিন্ন খেলার সেরাদের ছবি এবং খেলাধুলার অনেক স্মারক থাকতে পারে। সেই আক্ষেপ কিছুটা হলেও দূর হবে নারায়ণগঞ্জে এই মহসিন ক্লাব ভবনে এলে।

ভবন থেকে ২৫-৩০ মিটার দূরে মাঠ। উদ্বোধনের পর সেই মাঠেই হলো মূল অনুষ্ঠান। খানপুর চিলড্রেন পার্কটাকে ইপিলিয়ন গ্রুপের পৃষ্ঠপোষণায় নতুনভাবে সাজানো হয়েছে খেলার মাঠ হিসেবে। মাঠটা খুব বড় নয়, একটা ফুটবল মাঠের অর্ধেক হবে বা তারও কম। পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, আছে ফ্লাডলাইট। একপাশে ছোট করে বসার জায়গা।

মাঠের উল্টো দিকে রাস্তার ওপাশে ৮ থেকে ১০ ফুট দূরত্বে রিয়াজ উদ্দিন আল মামুনের বাড়ি। এই মাঠে তাঁর ছোটবেলার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। নিজেই বলেন, এ মাঠ তাঁকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছে। তাই দায়িত্ববোধ থেকেই মাঠটায় নতুন ঘাস, বার-পোস্টসহ প্রয়োজনীয় সংস্কার করে আধুনিকতার ছোঁয়া দিয়েছেন। একটা মহল্লার মধ্যে এত সুন্দর মাঠ চোখ কাড়ে সহজেই।

মহসিন ক্লাবের ভবনে সংরক্ষণ করা হয়েছে সাবেক খেলোয়াড়দের স্মৃতি–স্মারক
ছবি: শামসুল হক
মামুন ভাই একটা উদাহরণ তৈরি করেছেন। তাঁর এই উদ্যোগ সমাজে রোল মডেল হতে পারে। সবাই দেখুন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে কীভাবে একটা সমাজ বদলের প্রচেষ্টা চালানো যায়। একসময় নারায়ণগঞ্জ ছিল খেলোয়াড় তৈরির সূতিকাগার, আজ সেটা ধ্বংসের মুখে চলে গেছে। মামুন ভাই আজ হাল ধরেছেন। তাঁকে ধন্যবাদ।
শেখ মোহাাম্মদ আসলাম, জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার

মাঠের সঙ্গেই পড়ন্ত বিকেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সবার মুখে থাকল রিয়াজ উদ্দিন আল মামুনের প্রশংসা। শুধু খেলাধুলা নয়, তাঁর এই উদ্যোগ আগামীর প্রজন্ম তৈরিতেও সহায়ক হবে বলে মনে করেন শেখ মোহাম্মদ আসলাম। জাতীয় দলের সাবেক এই স্ট্রাইকার মহসিন ক্লাবের নিজস্ব আধুনিক ভবন আর মাঠ দেখে অভিভূত।

আসলাম এক ফাঁকে পেছন ফিরে নারায়ণগঞ্জের ফুটবলের মুখ হয়ে মোনেম মুন্নার স্মৃতিচারণায় ডুব দেন, ‘মুন্নার সেই ডাকটি এখনো কানে বাজে। আবাহনীতে খেলার সময় সে আমাকে বলত, “বড় ভাই, একটা গোল করেন আমি পেছনে আছি।” মুন্না এখানকারই সন্তান। কিন্তু আজ আর মুন্নার মতো ফুটবলার আসে না নারায়ণগঞ্জ থেকে। এটা অনেক বড় দুঃখের।’

শেখ আসলাম বলেন, ‘মামুন ভাই একটা উদাহরণ তৈরি করেছেন। তাঁর এই উদ্যোগ সমাজে রোল মডেল হতে পারে। সবাই দেখুন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে কীভাবে একটা সমাজ বদলের প্রচেষ্টা চালানো যায়। একসময় নারায়ণগঞ্জ ছিল খেলোয়াড় তৈরির সূতিকাগার, আজ সেটা ধ্বংসের মুখে চলে গেছে। মামুন ভাই আজ হাল ধরেছেন। তাঁকে ধন্যবাদ।’

প্রীতি ম্যাচে মহসিন ক্লাবকে নেতৃত্ব দিয়েছেন রিয়াজ উদ্দিন আল মামুন
ছবি: শামসুল হক

ঢাকা থেকে আসা আরেক সাবেক ফুটবলার রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বিরও ভোলেননি এই অভূতপূর্ব উদ্যোগের প্রশংসা করতে, ‘মহসিন ক্লাবের যে উন্নয়ন মামুন ভাই করেছেন, সেটা প্রশংসনীয়। আমি মহসিন ক্লাবে একসময় খেলেছি। আমার বন্ধু এমিলি, মুন্নারা এখানে খেলেছে। আমরা অনেক ভালো বন্ধু ছিলাম। আমাদের সময় দেখা যেত নারায়ণগঞ্জের অনেক খেলোয়াড়। আজ সেখানে খেলাধুলা দুমড়েমুচড়ে পড়েছে। মামুন ভাইকে ধন্যবাদ, তিনি এই ক্লাবটাকে নতুন প্রাণ দিয়েছেন।’

প্রয়াত মোনেম মুন্নার স্ত্রী ইয়ামিন মোনেম সুরভি ছিলেন অনুষ্ঠানে। মুগ্ধতা তাঁর কণ্ঠেও, ‘মহসিন ক্লাব ভবনে খেলোয়াড়দের ছবি, জার্সি ও বুট রাখা হয়েছে। সেটা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। বাংলাদেশ এমন কিছু আগে দেখিনি। এ জন্য মামুন ভাইকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এই প্রজন্মের মানুষ দেখতে পাবে একজন ফুটবলারের ব্যবহার করা জিনিস। এটা খুবই আনন্দের।’

রিয়াজ উদ্দিন আল মামুনের কথায় বারবার উঠে আসে এলাকার প্রতি তাঁর দায়িত্ববোধ আর আন্তরিকতার গল্প। সানন্দে খেলাধুলার পৃষ্ঠপোষকতা করে যাওয়া মানুষটি বলেন, ‘জ্ঞান হওয়ার পর আমাকে এই মাঠে খুঁজে পাওয়া যায়। এই এলাকায় কেউ আমাকে মামা বলে, কেউ ভাই বলে। এই অঞ্চলের ওপর আমার যে ঋণ, সেটা আমি আজ শোধ করতে পেরেছি। বহু স্মৃতিবিজড়িত এই এলাকা আমার, এই শহর আমার। দুনিয়ার অনেক শহরে গিয়েছি, কিন্তু এই শহর, এই এলাকার সঙ্গে অন্য কিছুর কোনো তুলনা হয় না।’

মহসিন ক্লাব ভবনে খেলোয়াড়দের ছবি, জার্সি ও বুট রাখা হয়েছে। সেটা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। বাংলাদেশ এমন কিছু আগে দেখিনি। এ জন্য মামুন ভাইকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এই প্রজন্মের মানুষ দেখতে পাবে একজন ফুটবলারের ব্যবহার করা জিনিস। এটা খুবই আনন্দের।
মোনেম সুরভি, প্রয়াত ফুটবলার মোনেম মুন্নার স্ত্রী
মহসিন ক্লাবের ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতি ফুটবল ম্যাচের একটি দৃশ্য
ছবি: শামসুল হক

মহসিন ক্লাবে একসময় খেলেছেন রিয়াজ উদ্দিন আল মামুন। সেই স্মৃতি তুলে এনে বলে যান, ‘এই মাঠে লক্ষবার আমি পড়েছি, লক্ষবার উঠে দাঁড়িয়েছি। প্রত্যেক কিশোরকে এ শিক্ষাই দেওয়া উচিত, জীবনে লক্ষবার পড়ে যাবা আবার লক্ষবার উঠে দাঁড়াবা। কিন্তু সেটা ঘরে বসে থাকলে হবে না। মাঠে আসতে হবে।’

মাঠে এসে কিশোর শিখবে লক্ষবার পড়ে গিয়ে লক্ষবার কীভাবে উঠে দাঁড়াতে হয়। দাঁড়িয়ে আবার দৌড়াতে হয় বিজয়ের জন্য। এটা শুধু খেলাই শেখাতে পারে। খেলা নিয়ে এই হলো রিয়াজ উদ্দিন আল মামুনের দর্শন। তাঁর কথা, ‘ক্রীড়া শেখাতে পারে পরাজয়ের পর কীভাবে বিজিতকে আলিঙ্গন করতে হয়। আবার কীভাবে মাঠে নামতে হয় জয়ের জন্য। সুতরাং ক্রীড়াকে যে জাতি অবহেলা করবে, সেই জাতির অগ্রগতির দ্বার রুদ্ধ হবে।’

এই এলাকায় রিয়াজ উদ্দিন আল মামুন সুইমিং পুলে সাঁতার কাটেননি। কেটেছেন পুকুর, নদীতে। ফলে তাঁদের পেশি শক্ত হয়েছে। একজন ভালো খেলোয়াড় হতে চাইলে শক্ত পেশি দরকার। রিয়াজ উদ্দিনের এসব কথা মুগ্ধ হয়ে শোনেন উপস্থিত সবাই। তিনি যেমন খেলার পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় করে অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন, এলাকার মানুষকে নতুনভাবে স্বপ্নও দেখাতে শুরু করেছেন।

মহসিন ক্লাবের ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ছিলেন সাবেক ফুটবলার প্রয়াত মুন্নার স্ত্রী ও ছেলে
ছবি: শামসুল হক

এ প্রসঙ্গে রিয়াজ উদ্দিন আল মামুন বলেন, ‘মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে। আপনি একটা কাজ করতে পারছেন না; যে করছেন, তাকে সহায়তা দিন। সেটা না পারলে উৎসাহ দিন। কিন্তু বিরোধিতা করবেন না। আমি বলেছি, এখান থেকে আমার পাওয়ার কিছু নেই। আমি এখান থেকে নিতে নয়, দিতে এসেছি।’

সন্ধ্যার পর ফ্লাডলাইটের আলোয় মাঠে একটি প্রীতি ম্যাচ হয়েছে। খানপুর মহসিন ক্লাবের অধিনায়ক হয়ে নেমে পড়েন রিয়াজ উদ্দিন আল মামুন নিজেই। তাঁর দলে ছিলেন স্থানীয় ফুটবলার শহিদ হোসেন স্বপন, গোলাম গাউস, মোহাম্মদ সুজন, নজরুল ইসলাম, জাকির হোসেন, মাহবুব হোসেন রক্সি, আবদুল্লাহ পারভেজরা। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেকদের নিয়ে গড়া দলের অধিনায়ক ছিলেন শেখ আসলাম। খেলেছেন সত্যজিৎ দাশ রুপু, আলফাজ আহমেদ, আরমান মিয়া, ইমতিয়াজ আহমেদ, প্রাণোতোষ কুমার, অমিত খান শুভ্ররা।

মজা করেই ম্যাচটা হলো। আলফাজের পেনাল্টি গোলে প্রীতি ম্যাচটা জিতেছে জাতীয় দলের সাবেকদের নিয়ে গড়া দল। এলাকার মানুষ সারবেঁধে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেছে ম্যাচটা, যা অনেক দিন মনে রাখার মতোই। মনে রাখতে হবে রিয়াজ উদ্দিন আল মামুনের অনন্য এই উদ্যোগকেও। মহসিন ক্লাবকে তিনি বাঁচিয়ে তুলেছেন, খেলাধুলার পৃষ্ঠপোষকতা করতে অন্য শিল্পপতিদের কাছে অদৃশ্য একটা বার্তাও দিয়ে রাখলেন। এমন উদ্যোগ আর ভাবনার জন্য একটা জোরালো করতালি তাঁর প্রাপ্যই।

মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে। আপনি একটা কাজ করতে পারছেন না; যে করছেন, তাকে সহায়তা দিন। সেটা না পারলে উৎসাহ দিন। কিন্তু বিরোধিতা করবেন না। আমি বলেছি, এখান থেকে আমার পাওয়ার কিছু নেই। আমি এখান থেকে নিতে নয়, দিতে এসেছি
রিয়াজ উদ্দিন আল মামুন, মহসিন ক্লাবের পৃষ্ঠপোষক