ফিফার নিষেধাজ্ঞায় কিংস, মুক্তি পাওয়ার উপায় কী
চুক্তির অর্থ না পাওয়ায় এ মাসের শুরুতে বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে ফিফায় অভিযোগ দায়ের করেন ক্লাবটির সাবেক কোচ ভ্যালেরিও তিতা ও ট্রেনার খলিল চাকরৌন। তাঁদের অভিযোগের পর কিংসকে তিনটি ট্রান্সফার উইন্ডোতে খেলোয়াড় নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এ বিষয়ে কিংসের চেয়ারম্যান ইমরুল হাসানকে আজ হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর দেননি তিনি।
গত বছরের জুলাইয়ে অস্কার ব্রুজোনের জায়গায় বসুন্ধরা কিংসের কোচের দায়িত্ব নেন তিতা। রোমানিয়ান এই কোচের অধীন ক্লাবটি চ্যালেঞ্জ কাপ ও ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতেছিল। তবে প্রিমিয়ার লিগ জিততে না পারায় তিতাকে ছাঁটাই করে কিংস।
এরপর বেতন, বোনাস ও আরও কিছু পাওনা নিয়ে ফিফায় অভিযোগ করেন তিতা।
কিংসের কাছে কত টাকা পাবেন, সেটা স্পষ্টভাবে না জানালেও এ নিয়ে তিতার ভাষ্য, ‘তারা (কিংস) আমার তিন মাসের বেতন ও বোনাস দেয়নি। বিমানভাড়াও আমি নিজের পকেট থেকে দিয়েছি। একইভাবে ফিটনেস ট্রেনার তিন মাসের বেতনের সঙ্গে বোনাসও পাবে।’
অভিযোগ পাওয়ার পর এ নিয়ে তদন্তে নামে ফিফা। প্রথমে দুই পক্ষের বক্তব্য শোনা হয়। এরপর ক্লাবকে সুনির্দিষ্ট জিজ্ঞাসার জবাব দেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে রায় শেষ পর্যন্ত কিংসের পক্ষে আসেনি। ফিফা ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নিবন্ধন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যোগ করা হয়েছে বসুন্ধরা কিংসের নাম।
মোট তিনটি ট্রান্সফার উইন্ডোতে খেলোয়াড় নিবন্ধনে কিংসকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, যা কার্যকর হয়েছে ২৭ আগস্ট থেকে। যার অর্থ, ২০২৫–২৬ মৌসুমের মধ্যবর্তী দলবদল এবং ২০২৬–২৭ মৌসুমের দুটি ট্রান্সফার উইন্ডোতে খেলোয়াড় নিবন্ধন করাতে পারবেন না কিংস।
তবে এই নিষেধাজ্ঞা কাটানোর উপায়ও আছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি মাধ্যম হচ্ছে ১. বকেয়া অর্থ পরিশোধ, ২. আইনি সমাধান ও ৩. আদালত/ট্রাইব্যুনাল প্রক্রিয়া।
এ ক্ষেত্রে যাঁকে টাকা না দেওয়ার কারণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাঁর বকেয়া বা ক্ষতিপূরণ সম্পূর্ণ পরিশোধ করতে হবে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট কোচের সঙ্গে সরাসরি সমঝোতা করে লিখিত চুক্তিও করা যেতে পারে। দুই পক্ষের সম্মতির বিষয়টি ফিফাকে জানানো হলে সংস্থাটি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। আর যদি ক্লাব মনে করে ফিফার সিদ্ধান্তে অন্যায্য, তারা কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্ট অথবা ফিফার ডিসপুট রেজল্যুশন চেম্বারেও আপিল করতে পারে।
তবে টাকা না দিলে বা নির্দেশনা না মানলে নিষেধাজ্ঞা চলতেই থাকে, এমনকি ক্লাবের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শাস্তিও (যেমন লিগ থেকে অবনমন, পয়েন্ট কর্তন) হতে পারে। ফিফা তখনই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় যখন তারা নিশ্চিত হয় যে ক্লাব তার দায়বদ্ধতা সম্পূর্ণভাবে পূরণ করেছে।
ফুটবল–বিশ্বে খেলোয়াড়-কোচ ও ক্লাবের মধ্যে দেনা-পাওনা নিয়ে ঝামেলা নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশের আরেক ক্লাব ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স গত মৌসুমে এক উজবেক ফুটবলার সারদর জাখোনভকে চুক্তিকৃত অর্থ পরিশোধ করেনি। পরে ফিফায় অভিযোগ করেছিলেন সেই ফুটবলার।
অভিযোগের কারণে ফকিরেরপুল ফিফার ট্রান্সফার নিষেধাজ্ঞায় পড়ে। যদিও পরবর্তী সময়ে অভিযোগকারী ফুটবলারের অর্থ পরিশোধ করায় ৭ আগস্ট নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি মেলে ক্লাবটির।